পেশাজীবীদের সঙ্গে সংবিধান সংস্কার কমিশনের মতবিনিময়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৪:১৬| আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৪:৪২
অ- অ+

পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে সংবিধানের সংস্কারে গঠিত কমিশন।

রবিবার জাতীয় সংসদের কেবিনেট কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম, এফবিসিসিআই প্রতিনিধি নাসরিন বেগম, চৌধুরী মূকিম উদ্দিন কেজে আলী, জামিল উদ্দিন মিল্টন, ইঞ্জিনিয়ার কবির হোসেন ও ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিন।

সংস্কার কমিশনের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের ও অধ্যাপক মুহাম্মদ ইকরামুল হক, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিকী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার এম মঈন আলম ফিরোজী, লেখক ফিরোজ আহমেদ, লেখক ও মানবাধিকারকর্মী মো. মুস্তাইন বিল্লাহ।

আলোচনায় অংশ নিয়ে কাদের গনি চৌধুরী বলেন, “বিদ্যমান সাংবিধানিক কাঠামোয় প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা এককভাবে প্রধানমন্ত্রীর উপর ন্যস্ত। প্রধানমন্ত্রীর একক নির্বাহী ক্ষমতা সংসদীয় সরকারের আবরণে একটি স্বৈরাচারী একনায়কতান্ত্রিক শাসনের জন্ম দিয়েছে, যা গত ১৫ বছর আমরা লক্ষ্য করেছি। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট খুব জরুরি। কারণ দ্বিকক্ষের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটিতে 'একক ক্ষমতার বলয়' বা 'এক ব্যক্তির শাসন' চলে না। রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী চাইলেই আইন প্রণয়ন ও বাতিল করতে পারেন না।”

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এই অনুচ্ছেদের এক জায়গায় বলা আছে, সংসদে দলের বিপক্ষে ভোট দিলে তাদের আসন শূন্য হবে। ফলে কোনো সংসদ সদস্য চাইলেও তার দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া সম্ভব নয়। তার মানে হলো সরকারি দল যা চাইবে সংসদে তা-ই হবে!”

তিনি বলেন, “দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় না- এই যুক্তির উপর ভিত্তি করেই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্ম হয়েছে বাংলাদেশে। এটা সত্য যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের নির্বাচন নিয়ে খুব একটা সমালোচনা শোনা যায় নি। আওয়ামী লীগ এসে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে, নিজেদের অধীনে নির্বাচন দিয়ে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়। আমরা নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থার পুনর্বহাল চাই।”

কাদের গনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের অনুচ্ছেদগুলো মুছে দিয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনীর সমালোচনা করে বলেন, “এই সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের বুকে কুঠারাঘাত করা হয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে মানুষের মৌলিক অধিকার। দেশে আইনের শাসনের কবর রচনা করা হয়েছে। বিচার বিভাগকে কুক্ষিগত করার একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সংশোধনীর উদ্দেশ্য একব্যক্তির নেতৃত্বের অধীনে ফ্যাসিজমকে দীর্ঘায়িত করা। তাই এই সংশোধনী বাতিল চাই।”

৭ ‘ক’ ও ‘খ’ অনুচ্ছেদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “গণতন্ত্রকে হত্যা, সংকুচিত ও নির্বাসিত করার জন্য এই ৭ ‘ক’ ও ‘খ’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। একনায়কত্ব চালিয়ে নিতে এবং মানুষের মধ্যে ভয়ের সংস্কৃতি ও কণ্ঠরোধ করতে এই বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে আঘাত করে।”

গণভোট বিষয়ে তিনি বলেন, “পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে গণভোটের বিধানটি বাতিল করে মৌলিক বিষয়ে জনগণের মতপ্রকাশের অধিকার খর্ব করা হয়েছে। মৌলিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে জনগণের সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের বিধান বিলোপ করে কণ্ঠ রোধ করা হয়েছে।”

গণভোটের বিধান পুনর্বহালের পক্ষে মত দেন এই সাংবাদিক নেতা।

তিনি সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চত করতে ন্যায়পাল প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনয়ন, পরপর দুই টার্মের অতিরিক্ত কেউ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে না পারা, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন, বর্তমান ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২ সংশোধনের প্রস্তাব আনেন।

সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম বলেন, দেশের ৯০ ভাগ মুসলমান। আগে আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাসের কথা ছিল। এটা যেভাবে আগে ছিল, সেভাবে চাইছি।

(ঢাকাটাইমস/১৭নভেম্বর/এফএ)

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
শাহিনুল আলম বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য
রোকেয়া ও মোস্তফা রিমান্ডে, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার আনিসুল-ইনু-মেনন-পলকসহ ৯ জন
হিন্দু-মুসলমান এক সঙ্গে লড়াই করে দিল্লির দাসত্বকে খানখান করব: রিজভী
সৌদি ভিশন ২০৩০-এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশে যাত্রী পরিষেবা বাড়াচ্ছে সৌদিয়া
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা