বেনাপোল বন্দরে ৪ ক্রেন নষ্ট: ক্ষুব্ধ আমদানিকারকরা

মহসিন মিলন, বেনাপোল (যশোর)
| আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০১৬, ১১:২০ | প্রকাশিত : ২৪ নভেম্বর ২০১৬, ১০:৫৭

দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলে ব্যবহৃত চারটি ক্রেনই নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এতে আমদানিকৃত মালামাল লোড-আনলোড বন্ধ হয়ে রয়েছে। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় গত কয়েকদিন ধরে এ বন্দরের নষ্ট চারটি ক্রেন এখনও মেরামতের কোন উদ্যোগ নেই। যে কারণে বন্দরে শত শত পণ্য বোঝাই ট্রাক আটকে আছে বন্দরে। রাজস্ব পরিশোধ করেও পণ্য নিতে না পেরে ক্ষুব্ধ আমদানিকারকরা। এ কারণে বন্দরের প্রায় দুই-তিনশ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন।

সরজমিনে দেখা গেছে, বেনাপোল স্থলবন্দরে ভারি পণ্য লোড-আনলোড করতে পাঁচটি ক্রেন থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র চারটি ক্রেন। এর মধ্যে গত দেড়/দুই মাস ধরে বড় দুইটি ক্রেন নষ্ট হয়ে আছে। বাকি দুটি ক্রেন কোনরকম সচল থাকলেও এর মধ্যে একটি ক্রেন গত ৮/১০ দিন আগে নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি একটি ক্রেন কাজ করলেও সেটিও নষ্ট হয়ে পড়েছে।

ক্রেন নষ্ট হওয়ায় বেনাপোল বন্দরের ইকুইপমেন্ট ঠিকাদার কোম্পানি মেসার্স এসআইএস লজিস্টিক্যাল সিস্টেম (জেভি) এর অফিসে তালা মেরে সকল কর্মকর্তা পালিয়েছেন বলে জানা গেছে। অফিসের সবাই তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ করে রেখেছেন।

বেনাপোল স্থলবন্দরের ১২নং সেডের সামনে বন্দরের গ্যারেজের ক্রেন ম্যাকানিক জয়নাল জানান, ক্রেনের যন্ত্রপাতি না পেলে কিভাবে নষ্ট ক্রেন ঠিক হবে।

তিনি জানান, ক্রেনের যন্ত্রপাতি পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে ক্রেন ঠিক করা সম্ভব হচ্ছে না।

ক্রেনচালক মিলন হোসেন জানান, কর্তৃপক্ষ ক্রেন ঠিক না করলে আমরা কি করব। ক্রেনের কাসপেট, কপারড্রাম, ব্রেকসহ অনেক সমস্যা রয়েছে, যা ঠিক করতে সময় লাগবে।

তারা জানান, ৬৫ মেট্রিকটন ও ৪০ মেট্রিকটনের দুটি ক্রেন এক/দেড় মাস ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। সময় মত বন্দর থেকে পণ্য খালাশ করতে না পারায় বন্দরে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ পন্যজট। সব মিলিয়ে স্থবির হয়ে পড়েছে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, বেনাপোল বন্দরের অবস্থা খুবই করুণ। ক্রেন নষ্ট হওয়াতে আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

তিনি বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে বেনাপোল বন্দর অচল হওয়ার উপক্রম। তিনি অবিলম্বে নষ্ট ক্রেন মেরামতের জন্য দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে জানান তিনি।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম জানান, স্থলবন্দরের ক্রেন নষ্ট হওয়ার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, বেনাপোল স্থলবন্দরে কাজের গতিশীলতা বৃদ্ধি করতে আরও বেশি ক্রেন ও ফরকিপ সরবরাহের প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক নিতাই চন্দ্র সেন (উপ-সচিব) এ প্রতিনিধিকে জানান, ক্রেন নষ্টের বিষয়টি বন্দর চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে। বন্দরে ঠিকাদার কোম্পানির ৫টি সচল ক্রেন দেয়ার কথা থাকলেও তারা ৪টি ক্রেন দিয়ে কাজ করে। এর মধ্যে সব কয়টি ক্রেন নষ্ট হয়ে গেছে বলে তিনি জানান।

তিনি জানান, এ বন্দরে আগে ভারি পণ্য কম আসত, এখন ভারি পণ্য বেশি আসাতে ক্রেনের প্রয়োজনীয়তা বেশি হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে বেনাপোলে বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনের কয়েকজন নেতা দুই-একদিনের মধ্যে ক্রেন ঠিক না হলে বেনাপোল পোর্ট অচল হয়ে পড়বে বলে জানান।

(ঢাকাটাইমস/২৪ নভেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :