বদলে যাওয়া ইবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার

ইরফান রানা, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২০ ডিসেম্বর ২০১৬, ১০:২৬

নীরবে দাঁড়িয়ে থাকা আধুনিক কারুকার্যে নির্মিত একটি ইমারত। উত্তরে হিমেল বাতাসের সাথে ভেসে আসে বকুল ফুলের সুবাস। মাঝে মধ্যে টিকটিকির ঠিক ঠিক আওয়াজ পাওয়া যায়। পাশের রাস্তা থেকে গাড়ি ও মানুষের হাঁটাচলার শব্দ কানে আসে। ইচ্ছেমতই কর্মস্থলে আসেন নিযুক্ত কর্মীরা। কাজের জন্য তাদের কারো কাছে কোন প্রকার জবাবদিহি করতে হয় না। নিকুঞ্জের ভেতরে বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকলেও ঠিকমত ব্যবহার না হওয়ায় আবছা অন্ধকার। ভেতরে প্রবেশের রাস্তাগুলো মাকড়শার জালে বাধা। চেয়ার টেবিলের উপর পড়েছে ধূলোর প্রলেপ। এটি আর কোথাও নয় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম জনপদের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বাদশা ফাহাদ বিন আব্দুল আজিজ’ নামে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কয়েক মাস আগের অবস্থা।

বর্তমানে গ্রন্থাগারটিতে চেয়ার টেবিল থেকে শুরু করে সব স্থানে লেগেছে চাকচিক্যের ছোঁয়া। কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে গ্রন্থাগারটি। সেই মাকড়শার জালগুলোর আর দেখা মেলে না। চেয়ার টেবিলসহ সবকিছুতেই লেগেছে নতুনত্বের দাগ। লাইটের আলোয় আলোকিত চারদিক। টিকটিকির ঠিকঠাক আওয়াজ এখন গুন গুন পড়ালেখা ও খড়মড় বই-খাতার শব্দের সাথে মিশে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় মানেই উন্মোচিত হবে নিত্য নতুন গবেষণার ক্ষেত্র। একজন শিক্ষার্থী শুধু বিভাগের পড়ালেখাই করবে না। বরং সবধরনের বই পড়ার মধ্যদিয়ে হয়ে উঠবে বিশ্বমানের। জ্ঞানের সকল শাখায় থাকবে তার পদচারণা। সবধরনের বইয়ের সংস্পর্শে একজন শিক্ষার্থীর রয়েছে বিশ্বমানের হওয়ার সুজোগ। সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে গ্রন্থাগারে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এখানে সবাই আবার এক উদ্দেশ্য নিয়ে আসে না। কেউ আসেন নিত্য দিনের খবর কাগজের পাতায় দেখতে। কেউবা আসেন চুটিয়ে প্রেম করতে। কেউবা অনড় ভাবে দায়িত্ব পালন করতে।

এখানে রয়েছে জীবিত-মৃত হাজার প্রাণের অনুভূতির মিলনমেলা। ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করা গ্রন্থাগারটিতে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। ৮৫ হাজার বর্গমিটার ৪তলা ভবনবিশিষ্ট লাইব্রেরি থেকে প্রতিনিয়ত জ্ঞান আহরণ করে চলছে শিক্ষার্থীরা। গ্রন্থাগারটি দুই অংশে বিভক্ত। ১ম অংশে রেকে বইগুলো পরিপাটি করে সাজানো এবং ২য় অংশে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য চেয়ারটেবিলের ব্যবস্থা রয়েছে। লাইব্রেরির ১ম তলায় রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার এবং দেশি-বিদেশি জার্নালের সংগ্রহশালা, ২য় তলায় রয়েছে ধর্মতত্ত্ব এবং মানবিক ও সমাজ বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগসমূহের বই, ৩য় তলায় রয়েছে মানবিক ও সমাজ বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগসমূহের বই, ৪র্থ তলায় রয়েছে ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত বিভাগসমূহের বই। শুধু তাই নয়, এখানে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থ সংগ্রহশালা। ৪র্থ তলার পশ্চিম পাশের বল্কে রয়েছে কোয়ালিটি ইন্সহ্যান্সম্যান প্রজেক্ট (আইকিউএসি) বিভাগ। যার কাজ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও একাডেমিক উন্নয়নসংশ্লিষ্ট কাজ তদারক করা হয়। গ্রন্থাগারটিতে দেশি-বিদেশি মিলে ৯৬ হাজার ৩২০টি গ্রন্থ এবং ১৮ হাজার ৯৩২টি সাময়িকী ও জার্নাল রয়েছে। এছাড়াও এয়ারকন্ডিশন, ওয়াইফাইসহ রয়েছে অনেক সুব্যবস্থা।

গ্রন্থাগারের ২য় তলায় ই-লাইব্রেরি তৈরির কাজ চলছে। যেটি হবে দেশি-বিদেশি বই এ সমৃদ্ধ। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক পালিসারের কয়েক হাজার বই ই-লাইব্রেরি থেকে অনলাইনে পড়া এবং ডাউনলোড করার সুযোগ পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির ডিজিটালাইজেশন এবং অটোমেশনের সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে এখানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পাবলিসারের ই-বুক এবং ই-জার্নাল ডাউনলোড করা যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে মুক্তিযুদ্ধ কর্নারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২০ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার যে সুযোগ দিচ্ছে মালয়েশিয়া

বাহরাইনে এসএসসি পরীক্ষার ফল পেয়ে উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশ স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা

মাধ্যমিকে বেড়েছে পাসের হার, কমেছে জিপিএ ফাইভ

আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় হ্যাকাথনে চ্যাম্পিয়ন শাবিপ্রবি

ঈদের পর থেকে শনিবারও বন্ধ রাখা হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

মাদরাসা বোর্ডে জিপিএ-ফাইভ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি

ক্যাম্পাস চালুর দাবি, কুবিতে প্রতীকী ক্লাস

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের নির্দেশ উপাচার্যের

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার কমেছে ৪ শতাংশ

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ‘সি’ ইউনিটের ফল প্রকাশ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :