মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
নতুন করে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) প্রজ্ঞাপন এবং মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
৯ মুক্তিযোদ্ধার করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ রুল জারি করেন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জামুকার মহাপরিচালককে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ ও শরীফ হুমায়ুন কবীর।
১২ জানুয়ারি গেজেটের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাইয়ে মহানগর ও জেলায় কমিটি করে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া গত বছরের ১০ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই-বাছাইসংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। পরে এ বছরের ৫ জানুয়ারি আরেকটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাছাইয়ের তারিখ পরিবর্তন করা হয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রফিকুল আলমসহ নয়জন মুক্তিযোদ্ধা রিট করেন।
রিটের বিষয়ে আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম জানান, প্রকাশের সময় ওই গেজেটকে চূড়ান্ত তালিকা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। শুধু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক ওই গেজেট বাতিলের ক্ষমতা আইন অনুসারে প্রয়োগ করা যেতে পারে। কিন্তু তা না করে গেজেটভুক্ত সব মুক্তিযোদ্ধাকে পুনরায় যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষমতা আইন অনুসারে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের নেই। এ কারণে অন্য কাউকে দিয়ে কমিটি করার বিধানও প্রণয়ন করা হয়নি। ঢালাওভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের যাছাই-বাছাইকে চ্যালেঞ্জ করে রিটটি দায়ের করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানান, বর্তমানে ৫৫ হাজার গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। এ ছাড়া অনলাইনে প্রায় লক্ষাধিক আবেদন রয়েছে। স্ব স্ব উপজেলায় তাদের তালিকা যাচাই-বাছাই করা হবে। মুক্তিযোদ্ধা হলে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ১৩ বছর বয়স হতে হবে।
গত ১২ জানুয়ারি প্রকাশ করা প্রজ্ঞাপনে ছয় সদস্যবিশিষ্ট বাছাই কমিটির বিষয়ে বলা হয়, যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি হবেন ওই এলাকার সংসদ সদস্য (যদি তিনি মুক্তিযোদ্ধা হন), না হলে মুক্তিযুদ্ধকালীন জেলা কমান্ডার, যাকে মন্ত্রণালয় নিয়োগ দেবে। এ ছাড়া জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) বিভাগীয় সদস্য, কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের প্রতিনিধি, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য, সংসদ সদস্যের একজন মনোনীত প্রতিনিধি। তাদের সাচিবিক সহায়তা করবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। এ সময় উপস্থিত থাকবেন ‘লাল মুক্তি বার্তা’র তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধারা ও ভারতীয় তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধারা।
কেউ অভিযুক্ত হলে তাকে একটা ফরম পূরণ করতে হবে। এই ফরমে তথ্য দিতে হবে তিনি কোথায় মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, তার কমান্ডার কে ছিলেন, কী অস্ত্র ব্যবহার করেছিলেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন কি না।
(ঢাকাটাইমস/২৩ জানুয়ারি/এমএবি/মোআ)