স্বামীর মৃত্যুর তিন বছর পর মা হলেন জিয়া
তখন সবে বিয়ে হয়েছে। নতুন জীবন শুরু করেছেন নিউইয়র্ক সিটি পুলিশের এশিয়ান আমেরিকান পুলিশ কর্মকর্তা ওয়েনজিয়ান লিউ ও তার স্ত্রী পেই জিয়া চেন। তবে সেই সুখ ভাগ্যে লেখা ছিল না বেশিদিন। বন্দুকধারীর গুলিতে নিজের প্যাট্রলিং গাড়িতে ঝাঁঝরা হয়ে যান পুলিশ কর্মকর্তা লিউ। সময়টা ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাস। স্বামীর শেষকৃত্যের সময় অশ্রুসিক্ত চেন বলেছিলেন, ৩২ বছরের লিউ ছিল তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু।
তারপর কেটে গিয়েছে আড়াই বছরেরও বেশি সময়। মঙ্গলবার একটি ফুটফুটে শিশুকন্যার জন্ম দিয়েছেন চেন। লিউয়ের ঔরসজাত সন্তান। নাম রেখেছেন অ্যাঞ্জেলিনা। এই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছেন চেন স্বয়ং।
যেই রাতে তার স্বামীর মৃত্যু হয়, সেই সময়ই লিউয়ের বীর্য সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন চেন। সব শেষ হয়ে যাওয়ার দিনে সেটাই ছিল তার স্বামীর স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার একমাত্র উপায়। তারই সুফল আজ তিনি হাতেনাতে পেয়েছেন। আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে গর্ভবতী হন চেন।
ছোট্ট অ্যাঞ্জেলিনার মাথায় এনওয়াইপিডি’র টুপি পরিয়ে মা ও মেয়ের ছবিটি পোস্ট করেছে নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ।
১৯৯৪ সালে লিউয়ের বয়স যখন ১২, তখন তাকে নিয়ে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যান তার বাবা-মা।লিউয়ের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়া এই দুই প্রবীণ আবার বেঁচে থাকার প্রেরণা খুঁজে পেয়েছেন তাদের নাতনিকে দেখে। চেন যে এই অসাধ্য সাধনের একটা প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তা তিনি শ্বশুরবাড়ির কাউকে জানতে দেননি। এই প্রক্রিয়া অসফল হলে তাদের মন ভেঙে যাবে এই আশঙ্কায় গর্ভবতী হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে টুঁ শব্দটিও করেননি তিনি। নাতনিকে দেখে তার দাদির চোখের পানি আর বাঁধ মানছে না।
ছোট্ট শিশুটিকে আঁকড়ে ধরে তিনি বলেন, ‘ওকে দেখতে অনেকটা আমার বউমার মতো। তবে কপাল থেকে চোখ অবিকল আমার ছেলের মতো দেখতে। আর ওর মাথাটা পুরো ওর বাবার মতো। ওর মধ্যে আমি নিজের ছেলেকে দেখতে পাচ্ছি।’
সূত্র: এই সময়
(ঢাকাটাইমস/২৭জুলাই/এসআই)