নায়করাজ সমাহিত

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৩ আগস্ট ২০১৭, ১৬:৪৬ | প্রকাশিত : ২৩ আগস্ট ২০১৭, ১০:৪৯

বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় সমাহিত হলেন নায়করাজ রাজ্জাক। বুধবার ভোরে মেজ ছেলে বাপ্পী কানাডা থেকে দেশে ফেরার পর সকাল সোয়া ১০টার দিকে তাকে দাফন করা হয়।

বাংলা চলচ্চিত্রের মুকুটহীন এই সম্রাটকে যখন কবরে শোয়ানো হয় তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্জাকের তিন ছেলে, আত্মীয়-বন্ধু আর চলচ্চিত্র অঙ্গনের কলা-কুশলীরা। অসংখ্য মানুষ চোখের জলে সমাহিত করেন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী এই অভিনেতাকে।

পাঁচ দশক ধরে বাংলা চলচ্চিত্রে শাসন করে যাওয়া এই অভিনেতা গত ২১ আগস্ট সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বাংলা চলচ্চিত্রের এই অভিনেতা দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগসহ শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।

মঙ্গলবার সকালে দুই দফা জানাজা শেষে রাজ্জাককে বনানী কবরস্থানে দাফন করার কথা থাকলেও মেজ ছেলে রওশন হোসেন বাপ্পী কানাডা থাকায় পিছিয়ে দেয়া হয় দাফনের সময়। গতকালই বাপ্পী কানাডা থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। আজ ভোরে ঢাকায় পৌঁছলে বানানী কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয় রাজ্জাকের লাশ। এরপর তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

গতকাল এফডিসিতে রাজ্জাকের জানাজায় অংশ নিয়ে অভিনেতা আলমগীর সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন নায়করাজ রাজ্জাক আগে থেকেই বনানী কবরস্থানে জায়গা কিনে রেখেছিলেন। সেখানেই তাকে দাফন করার অভিপ্রায়ও জানিয়েছিলেন। সেখানে জানাজা শেষে দুপুরে মরদেহ নেয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানায় তাদের প্রিয় অভিনেতাকে।

নায়করাজ রাজ্জাক বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে স্থাপন করেছেন অনেক মাইলফলক। ‘অনন্ত প্রেম’ ছবি দিয়ে সূচনা করেন রোমান্টিকতার এক নতুন যুগের। ‘রংবাজ’ ছবি দিয়ে শুরু করেন অ্যাকশন ঘরানার ছবি। এর আগে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘ওরা ১১ জন’ ছবিটি ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে প্রথম ছবি। স্বাধীনতার আগে ভাষা আন্দোলন নিয়ে তার অভিনীত ছবি ‘জীবন থেকে নেয়া’।

ময়নামতি, অশিক্ষিত, অভিযান, নীল আকাশের নিচে, অবুঝ মন, বেঈমানসহ বহু জনপ্রিয় ছবির এই অভিনেতা তার অভিনয় প্রতিভায় ঠায় করে নিয়েছেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মনে।

১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের টালিগঞ্জে জন্ম নায়করাজ রাজ্জাকের। তার পারিবারিক নাম আবদুর রাজ্জাক। ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে পাড়ি জমান তিনি। প্রথম দিকে রাজ্জাক তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশনে ‘ঘরোয়া’ নামের ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হন। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে তিনি আব্দুল জব্বার খানের সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান।

সালাউদ্দিন প্রোডাকশন্সের ‘তেরো নম্বর ফেকু ওস্তাগর লেন’ চলচ্চিত্রে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করে সবার কাছে নিজ মেধার পরিচয় দেন রাজ্জাক। পরবর্তীতে ‘কার বউ’, ‘ডাক বাবু’, ‘আখেরী স্টেশন’-সহ বেশ কটি ছবিতে ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয়ও করে ফেলেন। পরে ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে তিনি নায়ক হিসেবে ঢালিউডে উপস্থিত হন সদর্পে। এরপর আর তাকে পেছনের ফিরে তাকাতে হয়নি। একে এক জনপ্রিয় সব ছবি উপহার দিতে থাকেন দর্শককে।

ঢাকাটাইমস/২৩আগস্ট/এজেড/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :