ইবিতে শিক্ষকের হেনস্তায় ছাত্রীর মানসিক অসুস্থতার অভিযোগ

ইবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৬ জুলাই ২০১৮, ২২:৩৫

এক শিক্ষকের হেনস্তায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের একজন ছাত্রীর মানসিক ভারসাম্য হারানোর অভিযোগ উঠেছে।

আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তাকে চিকিৎসার জন্য পরিবারের মাধ্যমে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

অন্তরা (ছদ্মনাম) নামের ওই ছাত্রীর সহপাঠীদের ভাষ্যমতে, গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরতœ শেখ হাসিনা হলে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ বিষয়ে একটি আলোচনা সভা হয়। সেখানে ফিন্যান্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমারের বিরুদ্ধে উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-উর-রশিদ আসকারীর কাছে অভিযোগ করেন অন্তরার একজন ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। পরে উপাচার্য বিভাগের সব শিক্ষককে ডাকেন এবং সঞ্জয় কুমারকে তিরস্কার ও সতর্ক করেন।

এ ঘটনায় অন্তরা অভিযোগকারীকে ইন্ধন দিয়েছেন বলে সন্দেহ করেন সঞ্জয় কুমার। পরে তিনি ওই দুজনকে বিভাগে ডেকে নিয়ে হুমকি দেন।

সহপাঠীরা আরও জানান, প্রথম বর্ষের কোর্স ফাইনাল পরীক্ষায় দুটি কোর্সে অন্তরাসহ প্রায় ১৫ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হন। ১২৩ নং কোর্সটি সঞ্জয় কুমার সরকার নিতেন। এর মধ্যে একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুহুল আমীন অর্থ কেলেঙ্কারির দায়ে ওএসডি (সাজাপ্রাপ্ত) হলে ১২৫ নম্বর কোর্সটিও নেন সঞ্জয় কুমার। একই শিক্ষকের দুটি কোর্সে অকৃতকার্য হওয়ায় হতাশায় ভুগতে থাকেন অন্তরা। সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা দিয়ে পাস করলেও ফলাফল ভালো করতে না পেরে চিন্তিত হয়ে পড়েন তিনি। গত ১ জুলাই তৃতীয় সেমিস্টারের মৌখিক পরীক্ষায় অন্তরাকে সঞ্জয় কুমার অপমান করেন বলে অভিযোগ সহপাঠীদের। তারা জানান, অন্তরা কাঁদতে কাঁদতে ভাইভা বোর্ড থেকে বের হয়ে আসেন। ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বিভিন্ন অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে থাকেন। এরপর আস্তে আস্তে মানসিক ভারসাম্য হারান অন্তরা।

এ সময় অন্তরা ‘সঞ্জয় স্যার আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে, গলায় ছুরি ধরেছিল, আমার সব শেষ করে দিয়েছে, সব নিয়ে গেছে’ বলতে থাকেন বলে জানান হলের ছাত্রীরা।

শিক্ষক সঞ্জয় কুমারের বিরুদ্ধে বাড়িতে অন্তরা অভিযোগ করেছিলেন বলে জানান তার বড় বোন। তিনি বলেন, ‘গত ডিসেম্বর মাসে বাড়ি গিয়ে অন্তরা সঞ্জয় নামের শিক্ষকের চরিত্র খারাপ বলে জানায়। ওই শিক্ষক ছাত্রীদের দিকে খারাপ দৃষ্টিতে তাকান বলেও জানায় ও।’

সঞ্জয় কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে অন্য শিক্ষার্থীদেরও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্তরার এক সহপাঠী বলেন, ‘গত ৪ তারিখ গভীর রাতে অন্তরা আমাকে ফোন দিয়ে সঞ্জয় স্যারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ডকুমেন্ট দেয়ার কথা বলে।’ নতুন ছাত্রীরা ক্যাম্পাসে এলেই সঞ্জয় কুমার তাদের ফেসবুক, মুঠোফোনে খুদে বার্তা ও কল দিয়ে বিরক্ত করেন বলেও জানান ওই শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সঞ্জয় কুমার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি পরীক্ষায় কাউকে ফেল করাইনি। ভাইভা বোর্ডে কাউকে কোনো অপমানও করিনি।’ তবে ছাত্রীদের খুদে বার্তা পাঠানো ও কল দেয়ার অভিযোগে উপাচার্য কর্তৃক তাকে সতর্ক করার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘মেয়েদের মেসেজ পাঠানোর বিষয়ে উপাচার্য মহোদয় আমাকে সতর্ক করে দিয়েছেন।’ সঞ্জয় কুমারের বিরুদ্ধে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে এক ভর্তিচ্ছুকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ রয়েছে।

আজ অন্তরাকে ঢাকায় নিয়ে গেছেন তার ভাই। তিনি বলেন, তাদের বোন আগে কখনো এমন ছিল না। কারও মানসিক পীড়ার শিকার হয়েছেন তিনি।

খালেদা জিয়া হলের হাউস টিউটর সহকারী অধ্যাপক আরমিন খাতুন বলেন, ‘হলের এক শিক্ষার্থী মানসিকভাবে ভারসাম্য হারালে আমরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিই। পরে পরিবারের কাছে বিষয়টি জানালে তার ভাই এসে তাকে নিয়ে যায়।’

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স জারি রয়েছে জানিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, অভিযুক্ত যে-ই হোক না কেন তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের আওতায় আনা হবে।

(ঢাকাটাইমস/৬জুলাই/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার যে সুযোগ দিচ্ছে মালয়েশিয়া

বাহরাইনে এসএসসি পরীক্ষার ফল পেয়ে উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশ স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা

মাধ্যমিকে বেড়েছে পাসের হার, কমেছে জিপিএ ফাইভ

আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় হ্যাকাথনে চ্যাম্পিয়ন শাবিপ্রবি

ঈদের পর থেকে শনিবারও বন্ধ রাখা হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

মাদরাসা বোর্ডে জিপিএ-ফাইভ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি

ক্যাম্পাস চালুর দাবি, কুবিতে প্রতীকী ক্লাস

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের নির্দেশ উপাচার্যের

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার কমেছে ৪ শতাংশ

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ‘সি’ ইউনিটের ফল প্রকাশ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :