কমেছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২৩:২৭

ঈদকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে বলে মাসখানেক আগে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে এর প্রভাব সার্বিক মূল্যস্ফীতিতে পড়বে না বলেও আশার কথা শুনিয়েছিলেন তিনি। মন্ত্রীর আশাবাদ ও আশঙ্কার প্রতিফলন হয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদনে।

বিবিএস বলেছে, চাল, মাছ, ডিম ও মসলার দাম বাড়লেও আগস্ট মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমেছে। গত মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশে নেমে এসেছে। আগের মাসে এর হার ছিল ৫ দশমিক ৫১ শতাংশ। আর গত বছরের আগস্টে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ‘মিট দ্যা প্রেস’ এ প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পয়েন্ট টু পয়েন্ট পয়েন্ট (গতবছরের একই সময়ের তুলনায়) ভিত্তিতে গত মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি কমেছে ব্যাপক হারে। গত মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ। জুলাই মাসে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ১৮ শতাংশ। আর গত বছরের আগস্টে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। মাসিক ও বার্ষিক হিসাবে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি আগস্টে কমেছে।

খাদ্যবহির্ভূত অন্যান্য পণ্যে আগস্ট মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে বলে প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে। এতে বলা হয়েছে, আগস্টে খাদ্য ছাড়া অন্যান্য উপখাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ। আগের মাসে এর হার ছিল ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আর গত বছরের আগস্ট মাসে খাদ্য বহির্ভূত খাতে পণ্যমূল্য বেড়েছিল ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদনটি তোলে ধরেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে পণ্যেও দাম খুব একটা বাড়েনি। এ সময় বাজার নিয়ন্ত্রণেই ছিল। চাহিদা ও যোগানে বড় ধরনের কোনো অসামঞ্জস্য ছিল না। প্রয়োজনীয় পণ্য অনেক আগেই আমদানি করে রাখা হয়েছিল। এ সব কারণে সার্বিক মূল্যস্ফীতি খুব একটা বাড়েনি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগস্ট মাসে চাল, মাছ, মাংস, ডিম, মসলা ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রীর দাম বেড়েছে। অন্যদিকে পরিধেয় বস্ত্র, শিক্ষা উপকরণ, বাড়ি ভাড়া, বিদ্যুৎ, পরিবহন ভাড়া, চিকিৎসা সেবাসহ বিভিন্ন পণ্য ও সেবার দাম কিছুটা বেড়েছে। ফলে খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত উপখাতে কিছুটা মূল্যস্ফীতি হয়েছে।

প্রতিবেদনে তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট মাসে পল্লী এলাকায় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ০৫ শতাংশ। আর শহর এলাকায় আগস্টে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ। পল্লী ও শহর এলাকায জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ০৪ শতাংশ ও ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

পল্লী এলাকায় আগস্ট মাসে খাদ্যপণ্যে ৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। জুলাই মাসে এর হার ছিল ৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আর গত বছরের আগস্টে পল্লী এলাকায় খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। একই সময়ে পল্লী এলাকায় খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ। জুলাই মাসে এর হার ছিল ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আর গত বছরের আগস্টে পল্লী এলাকায় খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ।

অন্যদিকে শহর এলাকায় আগস্ট মাসে খাদ্যপণ্যে ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। জুলাই মাসে এর হার ছিল ৬ দশমিক ১৮ শতাংশ। আর গত বছরের আগস্টে শহর এলাকায় খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। একই সময়ে শহর এলাকায় খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ। জুলাই মাসে এর হার ছিল ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আর গত বছরের আগস্টে পল্লী এলাকায় খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ১২ মাসে গড়ে ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে। আগের বছরের একই সময়ে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ হিসাবে গড় মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে।

ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০:

ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশের পথে হাঁটতে হলে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হবে। সেক্ষেত্রে এককথায় বলা যায়, ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন অপরিহার্য। ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক দলিল। একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রযুক্তিগত, কারিগরি ও আর্থসামাজিক দলিল এই পরিকল্পনা। প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহ, ইচ্ছা ও নির্দেশে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের পক্ষ থেকে এই পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ঝুঁকির কারণে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার এই পরিকল্পনা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেয়। উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন এবং পানি, জলবায়ু, পরিবেশ ও ভূমির টেকসই ব্যবস্থার দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলাসহ ২০৩০ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্য দূরীকরণ ও ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্যে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বাংলাদেশের স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করবে।

(ঢাকাটাইমস/৬সেপ্টেম্বর/জেআর/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

পুনর্নিয়োগ পাওয়ায় বিএসইসি চেয়ারম্যানকে এবিবি প্রধানের শুভেচ্ছা

পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলো ভারত

এক হাজার টাকা কৃষিঋণে কেউ জেলে, ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপি সরকারের পাশে: ফরাসউদ্দিন

টানা অষ্টমবার কমলো স্বর্ণের দাম

বিএইচবিএফসিতে নতুন ডিএমডি এবং জিএমের যোগদান

বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের BAMLCO সম্মেলন অনুষ্ঠিত 

  ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স গ্রহণ করে গাড়ি জিতলেন কাপাসিয়ার মুঞ্জিল 

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের অফিসারদের নিয়ে ‘রিফ্রেশার্স ট্রেইনিং কোর্স’ অনুষ্ঠিত

শ্রমজীবী মানুষের মাঝে ‘ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার ক্লাব’ এর পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ 

এপ্রিলে প্রবাসী আয় ১৯০ কোটি ডলার

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :