বাজেট প্রস্তাবের পরপর বেড়েছে চিনির দাম

কাজী রফিক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ জুন ২০১৯, ১৫:১১
ফাইল ছবি

অর্থমন্ত্রী বাজেটে নতুন করে শুল্কারোপের প্রস্তাব করার পরদিনই বেড়েছে চিনির দাম। অথচ নতুন শুল্কে চিনি আমদানি হয়নি, এখন বাজারে যা আছে, তার সবই আগের শুল্কে আমদানি করা।

বৃহস্পতিবার প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী চিনি আমদানির শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন। ফলে উৎপাদন খরচ বাড়বে নিশ্চিত। আর সে ক্ষেত্রে ভোক্তাকে বেশি অর্থ পরিশোধ করতে হবে- এটাও ধরে নেয়াই যায়।

বাজেটে শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব হলে সেটি কার্যকর হয় সঙ্গে সঙ্গে। অর্থাৎ এখন থেকে অপরিশোধিত চিনি আমদানি করলে টনপ্রতি শুল্ক দুই হাজার টাকার বদলে তিন হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে। আর পরিশোধিত চিনি আনলে কেজি প্রতি চার টাকার বদলে কর দিতে হবে ছয় টাকা। এর বাইরে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে।

তবে ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই নতুন চিনি দেশে ঢুকে গেছে এবং পরিশোধন হয়ে বাজারে চলে এসেছে এমন নয়। অথচ অশোধিত চিনিতে যে পরিমাণ শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব হয়েছে, সেই পরিমাণ দাম এরই মধ্যে পাইকারিতে বেড়ে গেছে।

শুক্রবার ঢাকার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের পাইকারি বাজারে গিয়ে ৫০ কোজির বস্তা চিনির পাইকারি মূল্য ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেশিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। যদিও খুচরা বাজারে দাম শনিবার বাড়বে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার যে চিনি ৪৭ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি হয়েছে, শুক্রবার তা বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকায়।

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের পাইকারি বিক্রেতা ইসমাইল হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘গতকালও চিনি ছিল ৪৭ টাকা। আজ সকালেই দেখি বস্তায় ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে গেছে।’

২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে বেশ কিছু পণ্যে কর বৃদ্ধির কথা বলা আছে। তামাকজাত পণ্যেও উচ্চহারে বাড়ানো হয়েছে কর। এখন পর্যন্ত বাজারে আসা পণ্য আগেই আনা হলেও এরই মধ্যে বাড়তি দাম নেয়া শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।

তবে খুচরা বাজারে এখনো দাম বাড়ার তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। কারণ শুক্রবার সকাল নাগাত অনেক খুচরা ব্যবসায়ীই পাইকারি বাজারে যাননি। বিকেলে অনেকেই পাইকারি বাজার থেকে পণ্য কিনবেন এবং দাম বাড়বে আগামীকাল থেকে।

কৃষি মার্কেটের খুচরা বিক্রেতা হাজী মহসিন আলী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা এখনো মার্কেটে যাইনি। আজ বিকেলেও যেতে পারি বা আগামীকালও যেতে পারি। দাম বাড়ার ব্যাপারটা আমরা মার্কেট থেকে আসার পরে বলতে পারব।’

‘বাজেটে যে জিনিসের দাম বাড়ার কথা বলা হয়, সেটার দাম হুট করেই বাড়ে। যে যে জিনিসের দাম বাড়ার কথা বলছে, কাল-পড়শুই দেখবেন বেড়ে গেছে।’

আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে আরো বেশ কিছু পণ্যের দাম বাড়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানালেন পাইকারি বিক্রেতা ইসমাইল হোসেন। বলেন, ‘আজ তেমন কিছু বুঝবেন না। কারণ আমাদের কাছে আগের অনেক মাল স্টক আছে। সেগুলো শেষ হলে নতুন মাল আসবে। তখন দামটা বাড়বে। এখন খোলা সয়াবিন তেল আমরা ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করি। এক সপ্তাহ আগেও তেল ছিল ৯৪ টাকা। বাজেটে যেহেতু বাড়ানোর কথা বলছে, মধ্যে দামটা কমলেও এখন আবার বাড়বে।’

এবার আমদানি করা গুঁড়ো দুধ, গুঁড়া মসলা, টমেটো কেচাপ, চাটনি, ফলের জুস, টয়লেট টিস্যু, টিউবলাইট, চশমার ফ্রেম, সিআর কয়েল, জিআই তার, তারকাঁটা, স্ক্রু, ব্লেড, ট্রান্সফরমার, সানগ্লাস, রিডিং গ্লাস, আমদানি করা পার্টিকাল বোর্ড, সব ধরনের টায়ার ও স্মার্টফোনের ওপর কর বাড়ার কথা বলা হয়েছে। প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈজসপত্র, সয়াবিন তেল, পামঅয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল ও সরিষার তেলের ওপর আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যেরও দাম বাড়তে পারে।

(ঢাকাটাইমস/১৪জুন/কারই/ডব্লিউবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :