সচিবদের বাড়ির সামনেই ‘আবর্জনার ভাগাড়’
বাড়ির প্রধান ফটকে ২৪ ঘণ্টা দারোয়ানের পাহারা। দামি দামি গাড়ি হাঁকিয়ে কেউ বের হচ্ছেন, কেউ আবার বাড়ির ভেতরে ঢুকছেন। সাধারণের প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। ইস্কাটন গার্ডেন সরকারি অফিসার্স কোয়ার্টারের কথা হচ্ছে। এই কোয়ার্টারের সামনের সড়কে ফেলে রাখা ময়লা-আবর্জনা দেখে মনে হতে পারে কোনো আবর্জনার ভাগাড়।
সকারি আমলাদের বসবাসের জন্য এখানে দুটি কোয়ার্টার তৈরি করছে সরকার। এক নম্বর কোয়ার্টারে প্রায় ৪০টি আর দ্বিতীয় কোয়ার্টারটিতে রয়েছে নয়টি ভবন। ভবগুলো তৈরি করার সময় ভবনের বাইরের দেয়ালের পাশে বসানো হয় ময়লা-আবর্জনার ডাস্টবিন।
প্রথম ভবন ও দ্বিতীয় ভবনের দেয়ালঘেঁষা মোট চারটি ডাস্টবিন। আর এগুলোতেই দীর্ঘদিন থেকে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয় ভবনগুলো থেকে। কিন্তু আবর্জনা ফেলার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকে না কর্মীরা। ডাস্টবিনের বদলে ময়লাগুলো ফেলা হয় ফুটপাতে। আর এ কারণে চওড়া হলেও হাঁটার জায়গার বদলে পথচারীরা চলতে বাধ্য হয় প্রধান সড়ক দিয়ে। তাও দুর্গন্ধের কারণে নাকে হাত দিয়ে।
অথচ এইসব ভবনের একশ গজ সামনেই দক্ষিণ সিটি করপোরেশন তৈরি করেছে সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন। খুব বেশি দিন আগের না হলে এটা হয়েছে দুই মাসের বেশি সময় হবে। কিন্তু সচিব ভবনের ময়লা ফেলার সেই পুরনো বদভ্যাস পাল্টেনি।
গতকাল গিয়ে দেখা যায়, দেয়ালের সঙ্গে লাগানো ডাস্টবিনগুলোতে বহু দিনের পুরোনো ময়লা ভরে আছে। ডাস্টবিনগুলোতে জায়গা না থাকায় সেগুলোর সামনে ফেলে রাখা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। সেগুলো নিয়মিত সরিয়ে নেয়া হয় না।
আর সেখানে ফেলে রাখা ময়লা-আবর্জনার মধ্যে রয়েছে ককশিট, ডাবের খোসা, চিপসের প্যাকেট, বোতলসহ নানা ধরনের মাটির হাড়িও। যেগুলোতে জমে থাকা পানি ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার বংশবিস্তারে সহায়ক হতে পারে।
দেয়ালের সামনে ময়লা ফেলার সময় দেখা হয় ইস্কাটন গার্ডেন সরকারি অফিসার্স কোয়ার্টারেরই এক পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সঙ্গে। তিনি জানান, তারা এখানেই ময়লা ফেলেন, আর এটা নতুন কিছু নয়। আর সব সময় ফেলেন বলে এ নিয়ে তেমন ভাবেনও না।
কেন সিটি করপোরেশনের সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশনে ময়লা ফেলা হচ্ছে না জানতে চাইলে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের ময়লা-আবর্জনা ফেলার ডাস্টবিনতো এটাই। আমরা কেন কষ্ট করে সামনে গিয়ে ফেলব?’
তার সঙ্গে কথা শেষ করে কথা হয় সবজি বাগানের বসবাসকারী এক বাসিন্দার সঙ্গে। নাম প্রকাশ না শর্তে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘তারা বড় মানুষ, শিক্ষিত, অথচ ঘরের সামনেমফ ময়লা ফেলেন। এসব ময়লায় গন্ধ বের হয়, আর এটা আমাদের সমস্যা হয়।’
ইস্কাটন গার্ডেন সরকারি অফিসার্স কোয়ার্টারটি দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে পড়েছে। এলাকাটি ১৯নং ওয়ার্ডের আওতায়। বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুন্সি কামরুজ্জামানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি তা ধরেননি। এক পর্যায়ে ফোনটি বন্ধ করে দেন।
(ঢাকাটাইমস/০৪আগস্ট/ডব্লিউবি/জেবি)