ছোটদের নজরদারিতে বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা
কুষ্টিয়ার ট্রেন লাইনের স্লিপার নষ্ট, নাট-বল্টু নেই অনেক স্থানে। কর্তৃপক্ষের বিষয়টি নজরে না আসলেও এসেছে কয়েকটি শিশুর নজরে। নষ্ট পঁচা স্লিপারের কারণে নাট বল্টু খুলে লাইনের জোড় অংশ অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত দেখে তারা জানান স্থানীয় একজনকে। আর তিনি লাল কাপড় ঝুলিয়ে সংকেত দেন ট্রেন থামার।
মিরপুর উপজেলার ফুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের গেটপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা জানায়, সোমবার সকালে কয়েকটি শিশু সেখানে খেলছিল। এ সময় তারা লক্ষ্য করে যে লাইনের স্লিপার নষ্ট হয়ে গেছে। নাট-বল্টু খুলে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত লাইনের অদূরে নীচের খালে পাট ধোয়ার কাজ করছিলেন স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য জিলানী মণ্ডল। শিশুদের মুখে রেল লাইনের কথা শুনে ছুঁটে আসেন তিনি।
রেল লাইনের এ অবস্থা দেখে শিশুদেরকে বাড়িতে গিয়ে দ্রুত লাল কাপড় আনতে বলেন। সেই কাপড় লাইনের পাশে বেঁধে রাখেন তিনি।
কিছুক্ষণ পর একটি মালবাহী ট্রেনকে আসতে থাকে। এ সময় জিলানী লাল কাপড় দেখান। চালক সেটি দেখে ট্রেন থামিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি লাইনের অবস্থা দেখে জিলানী মণ্ডল এবং শিশুদের ধন্যবাদ জানান।
পরে ট্রেনের চালক ফোনে বিষয়টি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। আর এক ঘণ্টার বেশি সময় পর ট্রেনটি অত্যন্ত ধীর হতিতে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানটি অতিক্রম করে খুলনার উদ্দেশ যাত্রা করে শুরু।
জিলানী মণ্ডল বলেন, ‘আমি বিলে পাট ধোয়ার কাজ করছিলাম। কয়েকটি বাচ্চা গিয়ে আমাকে বললে রেল লাইন অনেকটা ভেঙে গেছে। গিয়ে দেখি স্লিপার নষ্ট হয়ে নাট-বল্টু খুলে গেছে। জোড়ার স্থানও অনেকটা সরে গেছে। ট্রেন গেলেই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এজন্য আমি বাচ্চাদের বাড়ি থেকে লাল কাপড় আনতে বলি এবং একটি মালগাড়িকে থামাই। জোরে গেলে হয়ত দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।’
স্থানীয়রা জানান, রেল লাইনের স্লিপারগুলো অনেক পুরনো হয়ে গেছে। সেই সাথে নাট-বল্টুও খুলে গেছে। এভাবেই দিনের পর দিন ঝুঁকি নিয়েই ট্রেন চলাচল করে। কর্তৃপক্ষ প্রায়ই মেরামত করে, তবে তেমনই থেকে যায়।
পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘মিরপুর-পোড়াদহ স্টেশনের মাঝামাঝি রেল লাইন অনেক পুরনো হওয়ায় এক স্থানে হালকা সরে যায়। বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পরে আমরা লোক পাঠিয়ে দেখি সেটা খুবই সামান্য। তারপরেও খুব সাবধানে আমরা মালবাহী ট্রেনটিকে স্থানটি অতিক্রম করাই।’
‘উক্ত স্থানটি ট্রেন চলাচলের যোগ্য হিসাবে সংস্কার করা হয়েছে। এ ঘটনায় কোন ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় বা কোন ট্রেনকে লেট করতে হয়নি।’
ঢাকাটাইমস/২৬আগস্ট/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি