সামাজিক প্রতিরোধের উদ্যোগ

‘এদিকে ইয়াবা ব্যবসায়ীর বাড়ি’

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
  প্রকাশিত : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৭:৩৭| আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৭:৪৪
অ- অ+

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে মাদক কারবারিদের সামাজিকভাবে বয়কটের উদ্যোগ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘এই দিকে ইয়াবা ব্যবসায়ী... বাড়ি’ নির্দেশক বোর্ড বসিয়েছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)।

সুনামগঞ্জের ২৮ ব্যাটালিয়ন বিজিবি আজ মঙ্গলবার তাহিরপুরের লাউড়েরগড় এলাকায় ইয়াবা ব্যবসায়ী নবীবুল ইসলামের (৩৪) বাড়ি চিহ্নিত করে এই সাইনবোর্ড ঝুলানো হয়। সম্প্রতি ১১৩টি ইয়াবাসহ আটক হয়ে নবীবুল বর্তমানে কারাগারে আছেন।

এই সাইনবোর্ড নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা ও হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে বিজিবির এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

পিরিজপুর গ্রামের আলী মাহমুদের ছেলে নবীবুল বিবাহসূত্রে বাদাঘাট ইউনিয়নের লাউড়েরগড় গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা।

আজ সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মাকসুদুল আলম লাউড়েরগড় এলাকার নেতৃস্থানীয় লোকজনকে নিয়ে মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধ বিষয়ক মতবিনিময় সভা করেন। তিনি ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সামাজিকভাবে বয়কট, মাদকসেবীদের প্রতিরোধ এবং মাদক ও চোরাচালানের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিতে ইন্ডিকেটর বোর্ড স্থাপনের বিষয়ে কথা বলেন। এলাকার লোকজন এতে একমত পোষণ করেন।

পরে এলাকার জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ইয়াবা ব্যবসায়ী নবীবুল ওরফে রফিকের বাড়িতে ও রাস্তায় নির্দেশক বোর্ড লাগানো হয়। তাতে লেখা- ‘ইয়াবা ব্যবসায়ী নবীবুল ইসলামের বাড়ি’।

স্থানীয় লোকজন জানান, নবীবুল দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় চোরাকারবারিদের সঙ্গে ইয়াবা ব্যবসা করে আসছিলেন। গত শুক্রবার লাউড়েরগড় বিজিবির সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১১৩ ইয়াবাসহ আটক করে তাকে। এরপর তাকে মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়। এখন তিনি সুনামগঞ্জ জেল হাজতে আছে। তার বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটকের পর নবীবুলের বাড়ির সামনে কাঠের স্ট্যান্ড তৈরি করে তাতে সাদা কাগজে তীর চিহ্ন দিয়ে লেখে দেয়- ‘এই দিকে ইয়াবা ব্যবসায়ী নবীবুল ইসলামের বাড়ি’।

যাদের ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করা হবে তাদের বাড়িতেও এভাবে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হবে বলে বিজিবি সূত্রে জানা যায়।

সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মাকসুদুল আলম জানান, যারা ইয়াবা পরিবহন ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তারা লোকলজ্জার ভয়ে যাতে ওই পথ থেকে সরে আসেন, সেই জন্য এই সামাজিক প্রতিরোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে নতুন করে আর কেউ মাদক সংশ্লিষ্ট হবে না। তবে এটা স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নয় বলে জানান তিনি।

মূলত সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি ও সতর্কবার্তা হিসেবে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে বিজিবি অধিনায়ক বলেন, ‘আশা করি নিজেদের পরিবার, আগামীর সন্তান ও মা-বাবার সম্মানের কথা চিন্তা করে এবং যুবসমাজকে অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে একটু হলেও মূল্যবোধ জাগবে তাদের মধ্যে।’

স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, উপজেলা সীমান্তে যারা চোরাচালান করে এবং যারা মদদদাতা, তাদের নাম বিভিন্ন সময় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ওই চোরাচালানিদের সঙ্গে যারা আঁতাত করে মাসোহারা নেয়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান এলাকাবাসী।

(ঢাকাটাইমস/৩সেপ্টেম্বর/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নতুন বাংলাদেশ গড়তে বিচার, সংস্কার এবং সংবিধানের মাধ্যমে এগোতে হবে: নাহিদ ইসলাম
কুমিল্লায় মা, মেয়ে ও ছেলে হত্যার ঘটনায় ৮ জনের তিনদিনের রিমান্ড 
পাকিস্তানি অভিনেত্রীর লাশ নিতে রাজি নন বাবা, স্বপ্ন পূরণে করাচিতে এসে একাকী মৃত্যু
বান্দরবানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত, পাহাড় ধসের শঙ্কা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা