এসএম হলে বহিরাগত রাখা নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ১
বহিরাগত রাখা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলে ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় এক পক্ষের হামলায় বেশ কয়েকটি রুমের আসবাবসহ জানালার কাচ ভেঙে গেছে।
শনিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের ১৫২ নং কক্ষে হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও হল সংসদে সমাজকল্যাণ সম্পাদক খান মিলন হোসাইন নিরবের আশ্রয়ে প্রায় কয়েকবছর ধরে অবৈধভাবে সুজন নামের এক ব্যক্তি থাকছেন।
জানা যায়, সুজনের বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপায়। মিলনকে টাকা দিয়েই তিনি বেশ কয়েকবছর ধরে হলে থাকেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগ নেতার আশ্রয়ে বহিরাগত রাখার ঘটনায় হলের হাউজটিউটরসহ প্রাধ্যক্ষ নিরব ভূমিকা পালন করছেন।
এদিকে ১৫২ নং কক্ষটি ৮ জনের হলেও এখানে তারা দুজনই থাকেন বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। অন্যদিকে এসএম হলে আবাসন সংকটের কারণে এখনো ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থীরা গণরুম ও বারান্দায় থাকেন।
হল প্রশাসনের নিরব ভূমিকা এবং বহিরাগত রাখার ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে হল সংসদের জিএস জুলিয়াস সিজারের নেতৃত্বে বিকালে ওই কক্ষে উচ্ছেদ অভিযান চালান। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সুজনকে রুমে একা মারধর করলে তার মুখ রক্তাক্ত হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা তার বিছানাপত্র রুম থেকে বের করে দেন। পরে খবর পেয়ে মিলন ছাত্রলীগের খুলনা অঞ্চলের নেতা-কর্মীদের ডেকে লাঠিসোঁটা ও রড নিয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেন এবং বহিরাগত সুজনকে আহত করা পিয়াসকে খুঁজতে দেশী অস্ত্র নিয়ে প্রতি রুমে তল্লাশি চালান। এসময় রুমের দরজা খুলতে দেরি হওয়ায় বেশ কয়েকটি রুমে ভাংচুর চালান। এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। হলের হাউজটিউটররা হলে উপস্থিত থাকলে সংঘর্ষ রোধে তারা কোন উদ্যোগই গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
পরে ঘটনা শুনে এসএম হলের ভিপি কামাল উদ্দিন ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা তাহসান আহমেদ রাসেল সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এর পরেই হাউজ টিউটররা এসে বহিরাগত সুজনকে হল থেকে বের হয়ে যেতে নির্দেশ দেন।
সমাজসেবা সম্পাদক মিলন অভিযোগ অস্বীকার করে ঢাকা টাইমসকে বলেন, আমি বহিরাগত রাখি না। সুজন নামের ছেলেটি থেরাপি দিতে কয়েকমাস পর পর আসে আর চার-পাঁচ দিন থাকে।
দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রুমে তল্লাশি চালানোর বিষে্রয তিনি বলেন, এরকম কিছুই আমি করিনি। তবে জুনিয়ররা একটু দৌড়াদৌড়ি করেছে।
এ বিষয়ে হল সংসদের সহ-সভাপতি কামাল উদ্দীন এবং সাধারণ সম্পাদক জুলিয়াস সিজারকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
ঘটনাটিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে ডাকসুর এজিএস এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, সমাজসেবা সম্পাদকের আশ্রয়ে বহিরাগত রাখার ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক। আমার ছাত্রলীগ এবং ডাকসুর পক্ষ থেকে দাবি জানিয়েছি হলে কোনো বহিরাগত থাকতে পারবে না। এখন ছাত্রলীগের পরিচয় ব্যবহার করে যদি কেউ এটি করে থাকে তাহলে এটি সাংগঠনিক অপরাধ। আমরা তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিব।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগের হল সম্মেলন ঘনিয়ে আসছে। যারা এধরনের অপরাজনীতি এবং মাদকের সাথে সংশ্লিষ্ট। কোনো ধরনের সাংগঠনিক কমিটিতে তাদের আসার ন্যূনতম সম্ভাবনা নেই।
তবে এসব বিষয় নিয়ে জানতে এসএম হল প্রাধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম জোয়ার্দারকে কল দিলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে কল কেটে দেন।
ঢাকাটাইমস/০৭ডিসেম্বর/ ইএস