ভারতের বাজেটের চেয়ে বেশি সম্পদের মালিক ১ শতাংশ ধনী
ভারতের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশের সম্পত্তির তুলনায় চার গুণ বেশি সম্পদের মালিক দেশটির মাত্র ১ শতাংশ ধনী। যা দেশটির প্রতি বছরের আর্থিক বাজেটের চেয়েও বেশি।
বিখ্যাত অক্সফোর্ড ও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে গঠিত সংস্থা ‘অক্সফাম’ এর এক প্রতিবেদনে ভারতে আর্থিক বৈষম্যের পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। সংস্থাটির মতে, ভারতসহ গোটা বিশ্বেই আর্থিক বৈষম্য অত্যন্ত প্রকট।
অক্সফামের ‘টাইম টু কেয়ার’ নামে এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৮ থেকে ১৯ অর্থবছরে ২৪,৪২,২০০ কোটি টাকার কেন্দ্রীয় বাজেটের থেকেও বেশি সম্পত্তি রয়েছে মুকেশ অম্বানী, আজিম প্রেমজি, সুনীল মিত্তলদের মতো দেশের ৬৩ জন ধনকুবেরের হাতে।
অক্সফাম জানিয়েছে, বিশ্বের ৪৬০ কোটি বা ৬০ শতাংশ মানুষের কাছে যা সম্পত্তি রয়েছে, তার থেকেও বেশি সম্পদ রয়েছে ২ হাজার ১৫৩ জন ধনীদের কাছে।
সোমবার থেকে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়াল্ড ইকোনমিক ফোরামের ৫০তম বার্ষিক সম্মেলন শুরু হচ্ছে। সম্মেলনের আগেই এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে অক্সফাম।
কর্মক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীর মধ্যেও আর্থিক বৈষম্য তুলনামূলক বেশি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। যেমন-একজন নারী গৃহপরিচারিকা এক বছরে আনুমানিক ২২ হাজার ২৭৭টা আয় করেন। কিন্তু তা মাত্র ১ মাসেই আয় করেন টেকনোলজি সংস্থার একজন সিইও। পাশাপাশি নারীদের গৃহস্থালি কাজের পরিবর্তেও কোনো বেতন দেয়া হয় না। অর্থের নিরিখে ভারতীয় অর্থনীতিতে যার পরিমাণ প্রতি বছরে ১৯ লাখ কোটি টাকা। যা দেশটির গত শিক্ষা বাজেটের কুড়ি গুণ বেশি (৯৩ কোটি টাকা)।
বর্তমানে ভারতে আর্থিক বৈষম্য নিরসনে সরকারের সঠিক নীতির প্রয়োজন বলে মনে করেন অক্সফাম ইন্ডিয়ার সিইও অমিতাভ বেহর।
তিনি বলেন, বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যেই নীতি থাকা প্রয়োজন, যেন ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান কমানো যায়। খুব কম সরকারই সে লক্ষ্যে কাজ করছে।’
সিইও অমিতাভ বেহরের মতে, সমাজের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো থেকে মহিলারাই সবচেয়ে কম লাভবান হন। কারণ রান্নাবান্না করা, ঘরদোর পরিষ্কার রাখা, বাড়ির বাচ্চা বা বয়স্কদের দেখাশোনা করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতে হয় মহিলাদের। তবে তা থেকে কোনও আয়ের সুযোগ নেই তাদের। কিন্তু এ ধরনের আয়হীন কাজকর্মের জন্য আমাদের সমাজ, অর্থনীতি বা বাণিজ্য গতি পাচ্ছে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শিক্ষার অভাবে বা সামাজিক ক্ষেত্রে নিজের মতামত জানানোর সুযোগ না পেয়ে সমাজের নিম্ন স্তরেই আটকে পড়ে যান।’’
(ঢাকা টাইমস/২০জানুয়ারি/আরআর)