পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ
স্ত্রীকে হত্যার পর ফ্যানে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে ডিএমপির আদাবর থানার এক সহকারী উপ-পরিদর্শকের (এএসআই) বিরুদ্ধে। তার নাম নজরুল ইসলাম রবিন।
সোমবার রাতে আদাবর এলাকার একটি বাসা থেকে আফরিন আক্তার মুন্নি নামে এক নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। মুন্নী এএসআই রবিনের স্ত্রী। তাদের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। খবর পেয়ে রাতেই মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়েছে পুলিশ।
নিহত মুন্নির বাবার বাড়ির লোকজনের দাবি, অন্য নারীর সঙ্গে রবিনের পরকিয়া ছিল। বিষয়টি জেনে যাওয়ায় মুন্নিকে কিছুদিন ধরে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছিল। এরপর গতকাল মুন্নিকে হত্যার পর ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে রবিন। পরিবারের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে জানিয়ে প্রাথমিকভাবে বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে মনে করছে পুলিশ।
মুন্নির পরিবার সূত্রে জানায়, এএসআই রবিন আদাবর থানার অদূরে একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রী মুন্নি ও দুই শিশু সন্তান নিয়ে দীর্ঘদিন বসবাস করতেন। দুই বছর ধরে রবিন স্ত্রীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে আসছিলেন। কিছুদিন আগে রবিনের সঙ্গে এক নারীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানতে পারে মুন্নি। এই নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। সেই জেরেই মুন্নিকে হত্যা করা হতে পারে বলে দাবি পরিবারটির।
মুন্নির বাবা হাজী আবুল কালামের অভিযোগ, 'তার জামাইয়ের অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। মোবাইলে তার মেয়ে সেসব দেখে ফেলায় রবিন ক্ষিপ্ত ছিল। তাছাড়া গত দুই বছর তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ বেশি ছিল। রবিন প্রায় তার মেয়েকে মারধর করত। রবিবারও তার বেধড়ক পেটানো হয়েছিল এবং বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। রবিন পুলিশের লোক তাকে কেউ কিছু করতে পারবে না বলে আমাদের হুমকি দিতো। এরপর তার মেয়েকে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে।'
আবুল কালামের দাবি, ঘটনার পর আদাবর থানা পুলিশও বিষয়টি লুকানোর পাশাপাশি বিষয়টি অন্যদিকে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
নিহতের চাচা মুজিবুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, 'শারীরিকভাবে প্রায়ই অত্যাচার এবং পরকিয়ার বিষয়টি থানার উদ্ধর্তন কর্মকর্তাকে জানিয়েছিলেন মুন্নি। ওই কর্মকর্তা রবিনের কাছে ঘটনাও জানতে চান।’
মুজিবর আরও জানান, পুলিশের লোক হওয়ায় রবিনের কেউ কিছু করতে পারবে না বলে শ্বশুর-শাশুড়িকে হুমকি দিতেন রবিন। তিনি বলেন, আমরা এই ঘটনায় মামলা করব।
তবে মুন্নির বাবার পরিবারের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এএসআই রবিন। তিনি বলেন, 'তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা।'
আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাহিদুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক মনে হয়েছে মুন্নি আত্মহত্যা করেছেন। পারিবারিক কলহের কারণে এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটতে পারে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ঢাকাটাইমস/০৪মে/এসএস/এমআর