চলে গেলেন হবিগঞ্জের শিক্ষানুরাগী শচীন্দ্র লাল

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২২ মে ২০২০, ২১:০১
অ- অ+

না ফেরার দেশে চলে গেলেন হবিগঞ্জের দানশীল, বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা শচীন্দ্র লাল সরকার। তিনি শুক্রবার ভোরে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল (৮৪) বছর। তিনি জেলার সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বও ছিলেন। এক নামে যাকে সবাই শচীন্দ্র বাবু বলে ডাকতেন। ভোরে নিজ বাসায় তিনি পরলোকগমন করেন। বিকাল সাড়ে ৫টায় তার শেষকিত্ত অনুষ্ঠিত হয়।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় খুব একটা শিক্ষিত না হলেও শিক্ষার প্রসারের প্রয়োজনীতা নিয়ে নিজ অর্থায়নে হবিগঞ্জসহ দেশের কয়েকটি জেলায় বহু স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন শচীন্দ্র বাবু। ১৯৮৪ সালে শহরের কালীগাছতলা সংলগ্ন এলাকায় মাতার নামকরণে নীরদামী স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর মনোনিবেশ করেন কলেজ প্রতিষ্ঠায়। ১৯৯৪ সালে হবিগঞ্জ শহর থেকে ২.৫০ কিলোমিটার উত্তরে বানিয়াচং উপজেলায় নাগুড়া গ্রামে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে ৮ একর ভূমি ক্রয় করেন। দু-তলা ভবন, সুরমা উদ্যান, বিজয়লক্ষ্মী সরোবর, ছাত্রাবাস, মসজিদ নির্মাণ করা হয়।

তিনি ১৯৯৮ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সিংহগ্রামে বিজয়লক্ষ্মী হাই স্কুল-কলেজ স্থাপন করেন। ১৯৯২ সালে হবিগঞ্জ রামকৃঞ্চ মিশনে শচীন্দ্র লাল সরকার নামে শিক্ষাবৃত্তি চালু করেন। এছাড়া ১৯৯৯ সালে শচীন্দ্র কলেজের পাশে শ্রী চৈতন্য সংস্কৃতি মহাবিদ্যালয় স্থাপন করেন তিনি। অন্যান্য কাজের মধ্যে রয়েছে ১৯৯৮ সালে হবিগঞ্জ রামকৃঞ্চ মিশন আশ্রমে দুর্গা মন্দির স্থাপন, ১৯৯৬ সালে শ্রীমঙ্গলের রুস্তমপুর গ্রামে শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ জিউড় মন্দির স্থাপন। ১৯৯৭ সালে তার সব সম্পত্তি ধর্মসেবা ও গরিবদের সেবায় দেবোত্তরে দান করেন। এছাড়াও শহরের গার্নিং পার্ক এলাকায় রাধা গোবিন্দ জিউ মন্দির স্থাপন ও বগলা বাজার এলাকায় নরসিংহ মন্দিরের উন্নয়নমূলক কাজ ছাড়াও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন।

হবিগঞ্জ জেলা শহরের ঘাটিয়া বাজার এলাকায় মাতুলালয়ে ১৯৩৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন শচীন্দ্র লাল সরকার। পিতা স্বর্গীয় চাঁদ সরকার, মাতা স্বর্গীয় নিরদাময়ী সরকার। পিতা চাঁদ সরকার পেশায় একজন কাঠ মিস্ত্রি ছিলেন।

ছোটবেলা থেকেই তিনি মেধাবী ছিলেন। হিন্দু ধর্মীয় পাঠশালায় প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে হাইস্কুলে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করার সুযোগ পান। দেশ ভাগের ফলে তার পরিবারের সঙ্গে কলকাতায় চলে যেতে হয় তাকে। পরে আবার দেশে ফিরে আসেন। লেখাপড়া করে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হবার ইচ্ছা থাকলেও পরিবারের অভাব-অনটনের কারণে আর হয়ে উঠেনি। সংসারের হাল ধরতে শহরের ঘাটিয়া বাজার এলাকায় সুলভ বস্ত্রালয় (নয়া হাজারী) সাধারণ কর্মচারী হিসেবে চাকরি নেন। দীর্ঘদিন চাকরির সুবাদে নিজেকে একজন দক্ষ ব্যবসায়ী হিসেবে গড়ে তোলেন। সঞ্চিত অর্থ দিয়ে পরে নিজেই ঘাটিয়া বাজারে একটি ছোট্ট কাপড়ের দোকান খোলেন। সময়ের প্রেক্ষাপটে নিজেকে সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।

(ঢাকাটাইমস/২২মে/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নাজিমগঞ্জ হাটে বিএনপির প্রচার অভিযান, নেতৃত্বে কাজী আলাউদ্দিন
হকিতে চীনকে উড়িয়ে টানা তৃতীয় জয়ে শীর্ষে বাংলাদেশ
কারবালার শাহাদাত থেকে সত্য ও মানবতার শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান আল্লামা ইমাম হায়াতের
গুলি করে হত্যার ৩ দিন পর মরদেহ দিল বিএসএফ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা