বগুড়ার বিপ্লব হত্যা রহস্য উদঘাটন, পাঁচজন গ্রেপ্তার

বগুড়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২২ জুন ২০২০, ১৮:৫০

বগুড়ার চাঞ্চল্যকর বিপ্লব সরকার হত্যার রহস্য এবং এর সঙ্গে জড়িত পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রধান হত্যাকারী রাজিব হোসেন রাজুকে যশোর থেকে গ্রেপ্তারের পর তার দেয়া তথ্য নিয়ে রবিবার বিকালে আরো চারজনকে বগুড়া শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে দাবি পুলিশের। অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরেই বিপ্লবকে হত্যা করা হয়। সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টায় জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞাঁ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার অন্য আসামিরা হলেন শহরের খান্দার এলাকার বেলাল হোসেন ও তার ভাই হাসান আলী, একই এলাকার আব্দুর রহমান ওরফে শুটকু ও সোনাতলা উপজেলার লক্ষ্মী নারায়ণপাড়ার সঞ্জয় কুমার মন্ডল।

পুলিশ সুপার বলেন, ২০১৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বগুড়ার সোনাতলা উপজেলর নগরপাড়া মহিশাপাড়া গ্রামে গনিজান কালভার্টের নিচ থেকে অজ্ঞাত যুবকের বস্তাবন্দি ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর লাশের কোনো পরিচয় না পেয়ে পুলিশ একটি হত্যা মামলা করে। পরে লাশের ছবি বিভিন্ন পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে জানা যায় নিহতের নাম বিপ্লব। তার বাবা বগুড়া সদরের ঠনঠনিয়া পশ্চিমপাড়ার হযরত আলী থানায় গিয়ে লাশটি শনাক্ত করেন। পরে তাকে লাশ বুঝে দেয়া হয়।

এই মামলার তদন্তভার প্রথমে দেয়া হয় সোনাতলা থানার এসআই শরিফুল ইসলামকে। এর মাঝে তার অন্যত্র বদলি হওয়ায় দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে এসআই আব্দুল মান্নানকে দায়িত্ব দেয়া হয়। মামলার কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় পরে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞার নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার সোনাতলা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদ হোসেন গ্রহণ করেন।

পরে নিহত বিপ্লবের সঙ্গে সম্পর্কিত সবাইকে নজরদারিতে রেখে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়। এর মধ্যে তদন্ত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় প্রধান হত্যাকারী রাজিব হোসেন (২৮) আড়াই বছর ধরে যশোরে পালিয়ে আছেন। সেখানে রাজিব তার মামার বাসায় দুই বছর ধরে অবস্থান করেন। এরপর তিনি প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে করে গত ছয় মাস যাবৎ একটি ভাড়া বাসায় গোপনে অবস্থান করছেন। তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞার নির্দেশে সহকারী পুলিশ সুপার (শিবগঞ্জ-সোনাতলা সার্কেল) কুদরত ই খুদা শুভর নেতৃত্বে সোনাতলা থানা পুলিশ যশোর থেকে রাজিবকে গ্রেপ্তার করে। তার থেকে তথ্য নিয়ে পরে অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।

যে কারণে এবং যেভাবে হত্যা:

পুলিশ সুপার বলেন, আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন তারা সবাই একই গ্রুপের ছিল। নিহত বিপ্লবও বখাটে ছিল। হত্যাকাণ্ডের কয়েকমাস আগে থেকে রাজীবের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিপ্লবের দ্বন্দ্ব হয়। রাজীবের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে অন্য আসামি বেলাল হোসেনও বিপ্লবের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। এর জের ধরেই বেলালকে ছুরিকাঘাত করে বিপ্লব। এ ঘটনার পর বিপ্লবকে হত্যার পরিকল্পনা করে রাজীব। রাজীবের পরিকল্পনায় গ্রেপ্তার অন্য আসামিরা সায় দেয়।

এরপর বিপ্লবকে হত্যার উদ্দেশ্যে বগুড়া থেকে একটি ভাড়া করা প্রাইভেটকারে সোনাতলার কর্পুর বাজারের একটি চাতালে (চালের কল) নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিল চাতালের কর্মচারি সঞ্জয়সহ অন্যান্য আসামি রাজিব, বেলাল, হাসান, শুটকুসহ আরো কয়েকজন। সেখানে বিপ্লবকে তারা উপর্যুপরী ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এরপর বিপ্লবের লাশ বস্তায় ভরে সোনাতলার নগরপাড়া মহিশাপাড়া গ্রামের গনিজান কালভার্টের নিচে ফেলে পালিয়ে যায়।

অভিযুক্ত প্রধান হত্যাকারী রাজিব হোসেন রাজুকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং অন্য চার আসামিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে সাত দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২২জুন/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :