টিকা সফল: ব্রাজিল থেকে আসলো সুসংবাদ

মুজিব রহমান
 | প্রকাশিত : ২২ জুলাই ২০২০, ১০:১২

ব্রাজিলে ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর দেহে সারা গিলবার্টের আবিষ্কৃত অক্সফোর্ডের টিকা প্রদান করা হয়েছিল তার সাফল্য পাওয়া গিয়েছে। বিশ্বের ৭ শ কোটি মানুষের জন্য এটি একটি সুসংবাদ। আমেরিকা সরকারের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অ্যান্টনি ফৌসি/ফাউচি বলেছেন যে টিকা দেওয়ার পরীক্ষার ইতিবাচক ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীদের রক্তের প্রবাহে নিরপেক্ষ অ্যান্টিবডিগুলো গড়ে উঠেছে।

ইনজেকশনগুলি মানুষকে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী কিনা তা খুঁজে বের করার জন্য, ৩০ হাজার ব্যক্তির ‍উপর পরীক্ষায় ফল ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে যাচাই করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। করোনাভাইরাসের হামলায় শনাক্ত ও মৃত্যু সংখ্যা বিচারে বিশ্বে দ্বিতীয় ব্রাজিল। সেখানে শনাক্ত ২০ লক্ষের বেশি আর মৃত্যু ৭৭ হাজারের বেশি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি টিকা দেওয়ার তৃতীয় পর্যায়ের জন্য বেছে নেয়া হয়েছিল ব্রাজিলকে। এই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনটি ব্রাজিলের ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবীদের দেহে প্রয়োগ করা শুরু হয় গত মাসের শেষ দিকে।

ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই টিকা শুরু থেকেই আলোচিত। বিশ্ব মুখিয়ে এর কার্যকারিতা দেখতে। দক্ষিণ আফ্রিকা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলে এই টিকার প্রয়োগ হবে বলে আগেই জানানো হয়। ব্রাজিলের দুটি বৃহত্তম নগরী সাও পাওলো, রিও ডি জেনেইরো তে পরীক্ষামূলক টিকা প্রয়োগ শুরু হয়েছিল। সেই টিকার সফলতার নিউজ ভারত, ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন নিউজ চ্যানেল প্রকাশ করেছে।

বিবিসির খবর, টিকা তৈরির জন্য ইংল্যান্ড সরকার ও কয়েকটি দাতব্য সংস্থার অর্থ সাহায্যে ২০০৫ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে তোলা হয় জেনার ইনস্টিটিউট। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান বিজ্ঞানী ড. সারাহ গিলবার্টের নেতৃত্বেই তিন মাসের কম সময়ে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনটি তৈরি করা হয়। গত ২৩ এপ্রিল অক্সফোর্ডের দু’জন স্বেচ্ছাসেবী বিজ্ঞানীর দেহে প্রথম করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। এছাড়াও ইংল্যান্ডের ৪ হাজারের বেশি মানুষকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য নথিভুক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশে কথিত ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দাবি কতটা সঠিক তার কোন নজিরই পাওয়া যায়নি। তারা প্রাথমিক ট্রায়ালও করেনি এমনকি কোন প্রাণিদেহের উপরও পরীক্ষা সম্পন্ন করেনি। ভারত, রাশিয়া বা আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১২৫ টি প্রতিষ্ঠান টিকা আবিষ্কারের দাবি করলেও তারা এতো ব্যাপক হারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেনি। মানব দেহে প্রয়োগ ছাড়া এর ত্রুটিসমূহ দূর করা অসম্ভব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-WHO অক্সফোর্ডের সাথে একটি চুক্তি সম্পন্ন করেছে।

তারা এই টিকা সারা বিশ্বে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পৌঁছে দিতে পারবে। মূলত দরিদ্র দেশগুলোতেই তা দেয়া হবে। মার্কিন অস্ট্রাজেনকাও এই ওষুধ বিশ্বব্যাপী বাজারজাত করতে পারবে। বিশ্বের ৭৭টি দেশ ইতোমধ্যেই WHO এর সাথে চুক্তি করেছে। এমনকি জাপান ও সিংগাপুরের মতো ধনী দেশও তাদের জনগণের জন্য বিনামূল্যে এই টিকা দেয়ার জন্য চুক্তি করেছে। বাংলাদেশের মিডিয়াতে এখনো এই সাফল্যের সংবাদটি এবং চুক্তির কথাও পাইনি। ভারতের মিডিয়া থেকে যানা গেল তারাও চুক্তি করেনি।

আশা করবো শিঘ্রই তা প্রকাশিত হবে এবং অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিকগণ এই সুফল সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই ভোগ করবে। লেখক: শিক্ষাবিদ ও সভাপতি, বিক্রমপুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ

ঢাকাটাইমস/২২জুলাই/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :