অধ্যাপক এমাজউদ্দীনের কাজ আমাদের সাহস যোগাবে: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৪ জুলাই ২০২০, ২১:৩৫
ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদের কর্ম গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে সাহস যোগাবে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার বিকালে সদ্য প্রয়াত এমাজউদ্দীন আহমদের স্মরণে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

ফখরুল বলেন, ‘প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদ আমাদের মাঝে নেই আর ফিরেও আসবেন না। কিন্তু তার কাজ আমাদের মধ্যে রয়ে গেল। তার চিন্তা, তার বিশ্বাস, তার কাজ আমাদেরকে আরও শক্তিশালী করবে, সাহস যোগাবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের একজন দৃঢ় প্রবক্তা, স্বাধীনতা সার্বভৌ্মত্বে একজন অতন্দ্র প্রহরী, গণতন্ত্রের একজন সাহসী বলিষ্ঠ সংগ্রামী যোদ্ধা প্রফেসর এমাজউদ্দীন আমাদের প্রেরণা যুগিয়েছেন এবং যোগাবেন। তিনি আমাদের সাহস যোগাবেন লড়াই করতে, সংগ্রাম করতে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে।’

খালেদা জিয়া অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘উদার গণতান্ত্রিক একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে তিনি আমাদের পথ দেখাবেন। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক মানুষ তার কাছে ঋণী থাকবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে, আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি এবং পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার কাছে এই দোয়া চাইছি আল্লাহ তায়ালা তাকে যেন বেহেশত নসিব করেন।’

অধ্যাপক এমাজউদ্দীনের কর্মময় জীবন তুলে ধরে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘তার যে রাষ্ট্রচিন্তা ছিল, সেটা ছিল দেশ, সমাজ, জাতি, রাজনীতি, গণতন্ত্র এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। এর সমন্বয়ই তার চিন্তা-চেতনা। এগুলোকে সমন্বয় করে তিনি তার বইগুলো রচনা করেছেন, পত্র-পত্রিকায় অসংখ্য প্রবন্ধ লিখেছেন।’

তিনি বলেন, ‘যে সময়ে যা প্রয়োজন পরামর্শ দেয়ার, সেই সময়কে ধারণ করে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ সেই সময় কী করা প্রয়োজন, জাতির জন্য কী করা প্রয়োজন, দেশের সরকারের কী করা প্রয়োজন, রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন তিনি নীতিনির্ধারণী জ্ঞানগর্ব বক্তব্য দিয়েছেন, কলাম লিখেছেন, বই রচনা করেছেন।’

স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী ও বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অধ্যাপক এমাজউদ্দীনের অংশ নেয়ার কথা স্মরণ করে তার নামে একটি ‘জাতীয় স্মৃতি পরিষদ’ গঠন এবং তার লেখা গ্রস্থসমূহে জাতীয়তাবাদী দলের অনুসারীদের কাছে ছড়িয়ে দেয়ার প্রস্তাব করেন ড. মোশাররফ।

স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, ‘এমাজউদ্দীন আহমদ একজন নিবেদিত জাতীয়তাবাদী বুদ্ধিজীবী ছিলেন। বাংলাদেশে অনেক বুদ্ধিজীবী আছেন, বুদ্ধিজীবীর অভাব নেই। কিন্তু তার মতো উঁচু মানের বুদ্ধিজীবী এখন খুব বিরল, নাই বললেই চলে।’

তিনি বলেন, ‘এমাজ উদ্দীন সাহেব গত ১৩ বছর মনের মধ্যে অনেক দূঃখ নি্য়ে বেঁচে ছিলেন। গণতন্ত্রের প্রতি তার একটা কমিটমেন্ট ছিল। সেই গণতন্ত্র, ব্র্যাকডাউন অব ডেমোক্রেসির জন্য মিলিটারি ইন্টারভেনসনের দরকার নেই, রাস্তায় কোনো ট্যাংক নামানোর দরকার নেই, কোনো গোলাবারুদের দরকার নেই, কোনো মার্শাল ‘ল জারি করার দরকার নেই। এখন ব্যালট বাক্স ব্যবহার, ভোটকে ব্যবহার করে, গণতন্ত্রকে ব্যবহার করে কর্তৃত্ববাদী সরকার, স্বৈরাচারী সরকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভবপর। এই যে গণতন্ত্রের মৃত্যু হচ্ছে ধীরে ধীরে- তিনি মনের মধ্যে এই দূঃখটা নিয়ে চলে গেছেন বলে আমি মনে করি।’

বিএনপির উদ্যোগে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রয়াত এমাজউদ্দীন আহমদের কর্মময় জীবনের নানা দিক নিয়ে বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, আমীর খসরু মাহুমদ চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ মাহবুবউল্লাহ, রাষ্ট্র বিজ্ঞানের অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, শত নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবদুল হাই শিকদার।

গত ১৭ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের সাবেক উপাচার্য্ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।

(ঢাকাটাইমস/২৪জুলাই/বিইউ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :