‘শাওমির সাফল্যের অন্যতম অংশীদার মি কমিউনিটি’

আসাদুজ্জামান
ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২০, ১৯:৫০ | প্রকাশিত : ২৭ জুলাই ২০২০, ১৯:৩৯

নিজেদের ডিভাইস ব্যবহারকারীদের তাৎক্ষণিক সহায়তায় দিতে এবং ফ্যানদের মাধ্যমে ডিভাইসের উন্নয়ন করতে নতুন ধরনের এক কমিউনিটি তৈরি করেছে শাওমি। বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের সেই কমিউনিটি বাংলাদেশেও ব্যবহারকারীদের সেবায় কাজ করছে। বর্তমানে ২ লাখ সক্রিয় মি ফ্যান সফল অগ্রযাত্রার অন্যতম অংশীদার হিসাবে শাওমি বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। মি কমিউনিটি ফোরাম নিয়ে ঢাকা টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি জেনারেল ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আসাদুজ্জামান

মি কমিউনিটির যাত্রা শুরু হয় কবে, উদ্দেশ্য কী ছিল? বিপণনের এমন উদ্যোগের পিছনে কারণ কী?

জিয়াউদ্দিন চৌধুরী: নতুনত্বের প্রতি, গ্রাহকদের ভালো মানের উদ্ভাবনী পণ্য দেবার প্রতি প্রথম থেকেই শাওমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই লক্ষ্য থেকেই আমরা গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগের নতুন এক পন্থা এনে তাদের মন জয় করতে চেয়েছি। যে কারণে শাওমি প্রথম থেকেই ‘ফ্যান ফার্স্ট অ্যাপোচ’ নিয়ে কাজ করেছে। আমাদের ‘মি ফ্যানস’ বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিপ্রেমী সব ব্যবহারকারী, যারা ব্র্যান্ডকে ভালোবেসে, ব্র্যান্ডের পণ্য উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন।

আজ থেকে প্রায় ৯ বছর আগে, ২০১১ সালের পহেলা আগস্ট মি কমিউনিটির শুরু হয় চীনে। সে সময় কোম্পানি তার পণ্যের জন্য বেটা টেস্টার খুঁজছিল। আর সে সময়ই মি কমিউনিটি ফোরাম তৈরি করা হয়েছিল। এর উদ্দেশ্যে ছিল ফ্যান বা ব্যবহারকারীদের যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দেবার যেন একটা ভাণ্ডার তৈরি থাকে। সময়ের সাথে এটি এখন এমন একটি জায়গা হয়ে গেছে যেখানে শাওমির ব্যবহারকারীরা তাদের বিভিন্ন কনটেন্ট শেয়ার করেন, প্রতিযোগিতায় অংশ নেন এবং অফলাইনে বিভিন্ন পার্টি যেমন-মি পপ-এ অংশ নেন। মি কমিউনিটি বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে ২০১৮ সালের জুলাইতে। আর ১৫ মাসের কম সময়ে তা এক লাখ ব্যবহারকারীর মাইলফলক অতিক্রম করতে সক্ষম হয়। পরবর্তী ৯ মাসে দ্বিগুণ হয়ে যায়, যা এখন দুই লাখের বেশি নিবন্ধিত ব্যবহারকারীর প্লাটফর্ম। বাংলাদেশে মি ফ্যানদের কমিউনিটিতে যুক্ত করতে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের অনলাইন ও অফলাইন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে আমাদের অফিসিয়াল ফ্যান ক্লাব রয়েছে। এটি আমরা দেশের বিভিন্ন প্রধান শহরে খুব শিগগির ফ্যান ক্লাব চালু করার চিন্তা করা হচ্ছে।

মি ফ্যান বা মি কমিউনিটির সদস্য হতে কী প্রয়োজন হয়? এখানে সদস্যরা কী ধরনের সুবিধা পান? জিয়াউদ্দিন চৌধুরী: মি ফ্যানরা সবসময় ব্র্যান্ডের বিশ্বস্ত অনুরাগী। বাংলাদেশের মি কমিউনিটির সদস্য হতে চাইলে এর রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া খুব সহজ। একজন ব্যবহারকারী মি কমিউনিটির সদস্য হতে চাইলে তাকে ইমেইল বা মোবাইল নম্বর দিয়ে ফোরামে নিবন্ধন করতে হয়। এছাড়াও তারা মি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও এখানে লগইন করে সদস্য হতে পারেন।

মি কমিউনিটির সদস্যরা আমাদের গ্লোবাল ফ্যামিলিরও একটা অংশ বটে। যখন নতুন কোনো পণ্য আনা হয় তার বেটা পরীক্ষা ও এক্সপেরিয়েন্সের জন্যও মি ফ্যানদের দেওয়া হয়। এরপর তারা সেটি সম্পর্কে তাদের ফিডব্যাক দেন। সেটিকে উপযুক্ত মনে করা হলে তা পণ্যটিতে যুক্তও করা হয়। আমাদের পণ্য উন্মোচন থেকে শুরু করে ব্র্যান্ডের প্রবৃদ্ধির জন্য তারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তারা আমাদের বিভিন্ন ইভেন্ট ঘোষণারও অন্যতম পার্ট। মি ফ্যানরা বাংলাদেশে শাওমির কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পান। ফলে দুইয়ের মধ্যে নানা ধরনের যোগাযোগ বাড়ে, বোঝাপড়া বাড়ে। তাদের জন্য বিশেষ কিছু ইভেন্ট থাকে, মি পপ যেখানে তারা বিভিন্ন উপহার জেতার সুযোগ পান। শাওমির পণ্য এক্সপেরিয়েন্স করতে পারেন সেখানে।

বাংলাদেশে মি কমিউনিটি নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি কোনো পরিকল্পনা আছে কী? গত দুই বছরে দেশে এই কমিউনিটির মাইলফলক কোনগুলো? জিয়াউদ্দিন চৌধুরী: শাওমি বাংলাদেশে অফিসিয়াল অপারেশন শুরু করে দুই বছর আগে। এরপর আমরা মি ফ্যানদের থেকে প্রচুর পরিমাণে ভালোবাসা ও সহযোগিতা পেয়েছি। দুই লাখের বেশি সদস্য নিয়ে আমরা এখন গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, আমরা দেশে টেক কমিউনিটিতে সবচেয়ে সক্রিয় একটি পরিবার। গত জানুয়ারিতে আমরা মি ফ্যানদের জন্য বৃহৎ পরিসরে মি পপ আয়োজন করেছিলাম। যেখানে সঙ্গীতশিল্পী তানজীর তুহিন ছিলেন। সেখানে ফ্যানদের শাওমির পক্ষ থেকে টি-শার্টসহ অনেক উপহার দেয়া হয়েছে।

আমরা বিশ্বাস করি দেশে তাদের নিয়ে আমরা বেড়ে উঠছি, আমাদের পরিবার বড় হচ্ছে। তাদের সহযোগিতায় আমরা দেশে নানান ধরনের পণ্য আনার কাজ অব্যাহত রাখতে পেরেছি। টেক কমিউনিটি আরও সংহত করতে আমরা আমাদের ফ্যান ক্লাবগুলোকে ভবিষ্যতে দেশের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে দিতে চাই।

ভারতে অনেক বড় মি কমিউনিটি ছিল। ভূ-রাজনৈতিক কারণে তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আপনার কী মনে হয় বাংলাদেশে ফলোয়ার কেন্দ্রিক মডেলটি কার্যকরী হবে?

জিয়াউদ্দিন চৌধুরী: মি কমিউনিটি ভারতে সব পরিস্থিতিতে ব্র্যান্ডের পাশে দাঁড়িয়েছে। এমনকি যখন দেশটির সরকার তাদের নীতিমালার কারণে অ্যাপ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিলো তখনও তারা সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। এই সময়ের মধ্যে ভারতে শাওমি বিভিন্ন পণ্য উন্মোচন করেছে। সময়টিতে চাহিদা এবং গ্রাহকদের রেসপন্সও ছিল অনেক বেশি।

মি কমিউনিটি প্যাশানেট ফ্যানদের একটা প্লাটফর্ম এবং বাংলাদেশে তারা আমাদের সাফল্যের অন্যতম অংশীদার হয়ে সহযোগিতা করে অসামান্য অবদান রেখে চলেছে। ফোরাম থেকে বাংলাদেশে যে রেসপন্স সেটি চমৎকার। আমরা দেখেছি গত মাসেই আমাদের নিবন্ধিত সদস্য দ্বিগুণ হয়েছে।

বাংলাদেশে শাওমির সেবা উন্নয়নে মি কমিউনিটি কী ধরনের ভূমিকা রাখে?

জিয়াউদ্দিন চৌধুরী: আমাদের পণ্য উন্নয়নের যে প্রক্রিয়া সেখানে সবসময় মি ফ্যানদের ফিডব্যাক অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আমরা যেসব ফিডব্যাক ইনকর্পোরেট করেছি তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে-

প্রোডাক্ট পোর্টফোলিও বৃদ্ধি করা: মি ফ্যানরা আমাদের কাছে চেয়েছিল পণ্যের ক্যাটেগরি বাড়িয়ে আরও প্রোডাক্ট যেন আনা হয়। তাদের সেই অনুরোধ আমরা রেখে ইতোমধ্যে দেশে অডিও ক্যাটেগরিতে চারটি পণ্য এনেছি। আমরা আরও ক্যাটেগরিতে পণ্য আনতে কাজ করছি।

মি ক্যালকুলেটরে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকা: মি ফ্যানরা চেয়েছিল আমরা যেন মি ক্যালকুলেটর অ্যাপে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকা যুক্ত করি। সেটা আমরা করেছি।

ফন্ট এবং ওয়ালপেপার: ফন্টের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। থিম অ্যাপ এবং ওয়ালপেপারেরও একই অবস্থা। তাই স্থানীয় উৎসবভিত্তিক বিভিন্ন ওয়ালপেপার রয়েছে স্টোরে। এর সবই মি ফ্যানদের অনুরোধ ও ফিডব্যাক থেকে নিয়ে আসা।

সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ঢাকা টাইমস এবং আপনাকেও ধন্যবাদ।

(ঢাকাটাইমস/২৭জুলাই/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :