দুই ভাগ হয়ে গেল ড. কামালের গণফোরাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:৪৩| আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:৫২
অ- অ+

রাজনৈতিক অঙ্গনে খুব ভালো অবস্থান করতে না পারলেও প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার দুই যুগ ধরে গণফোরামের ঐক্য মোটামুটি অটুট ছিল। কিন্তু বেশ কিছু অভিযোগ তুলে কামাল হোসেনকে বাদ দিয়ে কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের জন্য আহ্বায়ক কমিটি করেছে গণফোরামের একটি অংশ।

দলটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুসহ তিন কেন্দ্রীয় নেতার নেতৃত্বে দলটি থেকে বেরিয়ে যাওয়া অংশ আগামী ২৬ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের ঘোষণা দিয়েছে। এরমধ্য দিয়ে এতদিনের গুঞ্জনের পরিসমাপ্তি ঘটলো। দুই ভাগ হয়ে গেল গণফোরাম।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামের বর্ধিত সভায় এ কাউন্সিলের ঘোষণা দেয়া হয়।

সভায় গণফোরামের সাবেক নির্বাহী সভাপতি আবু সাইয়িদ বলেন, বর্ধিত সভায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সংগঠনকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী ও গণমুখী করার লক্ষ্যে আগামী ২৬ ডিসেম্বর জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় কাউন্সিলকে সফল করার লক্ষ্যে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে আহ্বায়ক করে ২০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

যদিও মিন্টুদের গ্রুপের পক্ষ থেকে বর্ধিত সভার ঘোষণা দেয়ার পর গত ২২ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণফোরামের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, ২৬ সেপ্টেম্বর ডাকা বর্ধিত সভার সঙ্গে গণফোরামের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। যে কারণে আজকের বর্ধিত সভায় তারা কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

আজকের সভার মধ্য দিয়ে গণফোরাম নামে আরেকটি দল গঠন করতে যাচ্ছেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, ২৬ ডিসেম্বরের কাউন্সিলে উপস্থিত ডেলিগেটদের মতামত নিয়ে নতুন দলের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।

গত বছর অনুষ্ঠিত কাউন্সিলের পর থেকেই গণফোরামের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্য হতে শুরু করে। তার জের ধরে এ বছরের শুরুর দিকে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কারের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ড. কামাল হোসেন কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। এরপর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হলে উভয় পক্ষই রাজনৈতিক তৎরতায় স্তিমিত হয়ে পড়ে। তবে গত আগস্ট থেকে ফের একাংশ তৎপর হতে শুরু করেছে। এর মধ্যে বর্ধিত সভার ঘোষণা দেয় গণফোরামের এই অংশের নেতারা।

ড. কামাল হোসেনের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত, তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কি-না, জানতে চাইলে মন্টু বলেন, আমরা এখনো বিশ্বাস করি ড. কামাল হোসেন আমাদের সঙ্গে আসবেন। বিতর্কিত লোকদের পরিহার করবেন। মাঠের পোড় খাওয়া লোকদের নিয়ে এগিয়ে যাবেন। তিনি না এলে তার বহিষ্কারের বিষয়ে আমাদের সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেব। সম্মেলনে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরা আসবেন, তাদের মতামত নিয়ে এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।

গণফোরাম তো বিএনপির নেতৃত্বধীন ঐক্যফ্রন্টে আছে, আপনারা তাহলে ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন কি-না, জানতে চাইলে মন্টু বলেন, ঐক্যফ্রন্টের বিষয়ে আমরা এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নেব না। সামনে আমাদের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভা আছে, সেখানে সিদ্ধান্ত নেব।

ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে জোট করে একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত দল জামায়াত প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মন্টু বলেন, ঐক্যফ্রন্টে জামায়াত ছিল না। আমি একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেব না বলেছিলাম কামাল হোসেনকে। কিন্তু তিনি যেহেতু দলের সভাপতি ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তার নির্দেশে আমি নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। কারণ আমি তার আদেশ অমান্য করতে পারি না সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। সেই নির্বাচন কীভাবে আগের রাতে হয়ে গেছে আপনারা সবাই জানেন।

অর্থবহ পরিবর্তনের লক্ষ্যে গণফোরাম জাতীয় ঐক্য চায় বলেও মন্তব্য করেন মন্টু।

বর্ধিত সভায় গণফোরামের কত জেলার প্রতিনিধি আছেন, জানতে চাইলে দলটির সাবেক নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, আমাদের সঙ্গে গণফোরামের ৫২ জেলার ২৮৩ জন প্রতিনিধি উপস্থিত আছেন।

বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফুল বারী হামিম প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২৬সেপ্টেম্বর/বিইউ/ইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ইসলামি এনজিওগুলোকে সামাজিক ব্যবসায় যুক্ত হওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
‘মন হালকা হতে কুয়াকাটা গিয়েছিলেন’সেই ব্যাংক কর্মকর্তা
নাজিমগঞ্জ হাটে বিএনপির প্রচার অভিযান, নেতৃত্বে কাজী আলাউদ্দিন
হকিতে চীনকে উড়িয়ে টানা তৃতীয় জয়ে শীর্ষে বাংলাদেশ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা