যৌক্তিক কথা বলাটাও মুশকিল

আসিফ আকবর
 | প্রকাশিত : ০৭ নভেম্বর ২০২০, ১৪:১৫

যৌক্তিক কথা বলাটাও এখন মুশকিল। ম্যানেজ করে কথা বলার অভ্যাস ধাতে নেই। অনেক দিন যাবত মুখে কুলুপ এঁটে সব মেনে নেয়ার চেষ্টায় আছি। সিনেমার লোক আমি, প্লে-ব্যাকে সুযোগ পেয়ে গানের জগতে একটা লেভেল পৌঁছতে পেরেছি। আমার কোনো গল্প নেই, যা আছে সেগুলো সব বাস্তবতা। কিছু গুরুত্ব পাই শোবিজে, এবার সেক্টর যেটাই হোক। আমাকে এ সার্কিটের মানুষ ভালোবাসে মতাদর্শের চটপটি না খেয়েই। আমি একজন সিভিলিয়ান থেকে গায়ক। চর্চার জায়গাটায় সবসময় বিগ জিরো। এত এত মিডিয়া আর শোবিজ কলিগদের সাথে আমার সম্পর্কটা আসলেই অবিশ্বাস্য। জ্ঞাত কিংবা অজ্ঞাত কারণে তারা আমাকে ভালোবাসে।

শোবিজে আমার গ্রহণযোগ্যতায় নিজেই মুগ্ধ। আমার পোস্টগুলো বিপজ্জনক মনে করে অনেকেই কমেন্ট করে না। সরাসরি সমর্থন দেয়ার মতো সামর্থ্য হয়তো তাদের নেই, ভয় কাজ করে। সামনাসামনি উথালপাথাল ভালোবাসা থাকলেও আমার প্রতিরোধ কর্মসূচিতে আমি সঙ্গীহীন। তাদের এই লিমিটেশন বুঝেই সাক্ষী বানাই না। সাহস এখানে মুখ্য ব্যাপার নয়, কারও বিরাগভাজন হওয়ার টেনশনে ভালোবাসার প্রকাশ সীমিত।

কান কথা আর প্যাঁচাপেচির স্বর্গরাজ্য বাংলাদেশের মিডিয়া জগৎ। সাহসী লোকটা জাতির উদ্দেশে বিপ্লবী ভাষণ দিয়ে কাজের সময় চুপ হয়ে যায়। মুখ থেকে কথা বের হওয়ার আগে চোখ নড়তে থাকে। সাহসবৃত্তান্ত খোঁজার আগে আলামত টের পেয়ে তাদের আর ঝামেলায় জড়াতে দেই না। নিজ দায়িত্বে সব লোড ঘাড়ে নিয়ে নেই। শোবিজের মতো ভদ্রলোকের জায়গায় আমি একটা জংলি বিশেষ।

বাতাসে শীতের আগমনী বার্তা। ঠান্ডা শেষ হতে না হতেই শুরু হবে পাতা ঝরার দিন, আসবে বসন্ত। আর এভাবেই চলতে থাকে আমাদের এইসব দিনরাত্রি। ষড়ঋতু আর ষড়রিপুতে আক্রান্ত আমরা প্রাকৃতিকভাবেই। এদেশের মানুষের মানসিকতাও এরকম পরিবর্তনশীল। সুকুমারবৃত্তির সাথে সংশ্লিষ্ট মানুষ আসলেই উদার।

ধানের মধ্যে চিটা হিসেবে কিছু আইটেম থাকবে। এদের কারণে এলাকা একটু দূষিত হয়, তবে এটাই শেষ হিসাব নয়। সবাই সাহসী হবে এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। সরাসরি প্রতিবাদ-প্রতিরোধের জন্য কাউকে আহবান করছি না, নৈতিকতার কৈফিয়তও চাই না। শুধু চাই মেরুদন্ড সোজা রেখে হাঁটুক শোবিজের মানুষ। সংস্কৃতির মানুষদের একটা নৈতিক দায়িত্ব থাকা উচিত সমাজের প্রতি। কিছু কমিটমেন্ট থাকতে হবেই যার যার এঙ্গেলে।

এগুলো কথার কথা নয়, দায়িত্ববোধ। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শ্রদ্ধেয় বীর শিল্পীগণ রাস্তা দেখিয়ে গেছেন। আমরা খাচ্ছি স্বাধীনতার লাড্ডু। কপাল ভালো তখন কপিরাইট অফিস বা ইস্যু ছিল না। থাকলে পরিণতি কি হতো বুঝে নিন। যুদ্ধে কোনো সমস্যা হয়নি গান নিয়ে, অথচ স্বাধীন দেশে সমস্যা তৈরি করছে কপিরাইটের লীলাখেলা।

লেখক: কণ্ঠশিল্পী

ঢাকাটাইমস/৭নভেম্বর/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :