র‌্যাব পরিচয়ে জিম্মি করে সর্বস্ব লুট করত তারা

কুমিল্লা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১১ জানুয়ারি ২০২২, ২০:০৪

পরিকল্পিতভাবে নারীদের দিয়ে ফাঁদ পেতে কৌশলে মানুষকে জিম্মি করে র‌্যাবের পরিচয় দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে তিন নারী ও দুই পুরুষকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১ এর সিপিসি-২, কুমিল্লা। এসময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত র‌্যাব জ্যাকেট উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় র‌্যাব।

র‌্যাব জানায়, গত ৬ জানুয়ারি এক ভুক্তভোগী মৌখিকভাবে র‌্যাব-১১ এর সিপিসি-২, কুমিল্লা ক্যাম্পে একটি অভিযোগ করে।

ওই ভুক্তভোগী র‌্যাবকে জানায়, র‌্যাবের পরিচয়ে একটি প্রতারকচক্র তার কাছ থেকে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অভিযোগেরভিত্তিতে ১০ জানুয়ারি রাতে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারকচক্রের সক্রিয় তিনজন নারী সদস্যসহ মোট পাঁচজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

গ্রেপ্তাররা হলেন, জেলার আদর্শ সদর উপজেলার দক্ষিণ চর্থা গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও আড়াইওড়া গ্রামের হাসি আক্তার এবং তার ছোট বোন মিন্নি আক্তার, সদর দক্ষিণ উপজেলার দিশাবন্দ গ্রামের জুম্মন মিয়া, জেলার চান্দিনা থানার অম্বলপুর গ্রামের জোসনা আক্তার।

র‌্যাব-১১, সিপিসি-২ কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধান ও গ্রেপ্তারকৃত প্রতারকচক্রের সক্রিয় সদস্যদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, প্রতারকচক্রের সদস্য জুম্মন মিয়া একজন মাছ ব্যবসায়ী। সে মাছ ব্যবসার সুবাদে বিভিন্ন পেশার মানুষের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলত। পরবর্তীতে সহজ-সরল ব্যক্তিদের টার্গেট করে নারীর প্রলোভন দেখাত এবং নারীদের সরবরাহ করত। প্রতারকচক্রের সক্রিয় নারী সদস্য ও ভুক্তভোগী পুরুষকে একান্তে সময় উপভোগ করার ব্যবস্থা করত। যখনই তারা একান্তে সময় কাটাত, ঠিক তখনই জুম্মন মিয়া প্রতারকচক্রের অন্য সক্রিয় সদস্য আনোয়ার হোসেনসহ ৩-৪ জন সদস্য নিয়ে প্রতারকচক্রের নারী সদস্য এবং ভুক্তভোগী পুরুষের একান্তে কাটানো মুহূর্তে ঘরে উপস্থিত হয়ে স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারণ করে নিজেদের র‌্যাবের পরিচয় দিত এবং ভুক্তভোগী পুরুষের সাথে থাকা নগদ অর্থ ও মোবাইল ছিনিয়ে নিত। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক স্থিরচিত্র ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া ও মামলার ভয় দেখিয়ে ধাপে ধাপে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত। তারা আরও স্বীকার করে যে, তারা বিভিন্ন সময়ে র‌্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা ক্যাম্পে অভিযোগ দেওয়ার নাম করে ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন ভুক্তভোগীকে ফোন করত এবং ভুক্তভোগী র‌্যাব অফিসের সামনে এলে সে ভেতর থেকে বের হয়ে বলত, স্যার ব্যস্ত আছে পরে কথা বলবে। আমি এখন অফিসের কাজে বাইরে যাচ্ছি, অন্য আরেক দিন কথা বলব। বিভিন্ন সময়ে অফিসের বাইরে সেলফি তুলে সেগুলো ভুক্তভোগীদের প্রেরণ করত এবং তাদের নিকট নিজেকে র‌্যাব হিসেবে বিশ্বাস স্থাপন করাত। ভুক্তভোগীরা র‌্যাব অফিসের ভেতরে টাকা প্রদান করতে চাইলে সে ভুক্তভোগীদের র‌্যাব অফিসের ভেতরে টাকা প্রদান করলে সে ক্ষেত্রে সকল র‌্যাব সদস্য বিষয়টি জেনে যাবে এবং এতে করে তার চার-পাঁচ গুণ টাকা বেশি দিতে হবে বলে ভয় দেখাত।

ভুক্তভোগীরা সামাজিক লাজলজ্জা ও মান-সম্মানের ভয়ে বিষয়টি অন্য কারো সাথে শেয়ার করতে পারত না এবং বাধ্য হয়েই তাদের টাকা প্রদান করত।

তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তার প্রতারকচক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। প্রতারকচক্রকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

(ঢাকাটাইমস/১১জানুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :