হৃদরোগে কাদের মৃত্যুঝুঁকি বেশি, নারী না পুরুষের?

হৃদসংবহন তন্ত্র, মস্তিষ্ক, বৃক্ক ও প্রান্তিক ধমনী সম্পর্কিত রোগকে হৃদ রোগ বলা হয়। হৃদরোগের অনেক কারণ থাকতে পারে, তবে উচ্চ রক্তচাপ ও অ্যাথেরোসক্লোরোসিস প্রধান। পাশাপাশি, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হৃৎপিণ্ডের গঠনগত ও শারীরিক পরিবর্তন হৃদরোগের জন্য অনেকাংশে দায়ী, যা স্বাস্থ্যবান ব্যক্তিরও হতে পারে।
প্রতি বছর বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই রোগে কারা বেশি মারা যান, নারী নাকি পুরুষ? এই প্রশ্নের জবাব পাওয়া গেছে ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব কার্ডিয়লজির বিজ্ঞান সম্মেলনে প্রকাশিত একটি গবেষণায়। সেখানে বলা হচ্ছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হলে পুরুষদের তুলনায় নারীদের মৃত্যুঝুঁকি বেশি।
২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ডেনমার্কে এই গবেষণা চালানো হয়। পরীক্ষা করা হয়েছে ১৭১৬ জন হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীকে। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ছিল ৪৩৮ বা প্রায় শতকরা ২৬ ভাগ। আক্রান্ত নারীদের গড় বয়স ছিল ৭১ এবং পুরুষদের গড় বয়স ছিল ৬৬।
গবেষণা বলছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ৩০ দিন পর্যন্ত জীবিত ছিলেন ৩৮ শতাংশ নারী। সেখানে এই একই সময়ে জীবিত পুরুষের শতকরা হার ছিল প্রায় ৫০ ভাগ।
হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার অব্যবহিত পরে যেমন নারীদের তুলনায় পুরুষদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বেশি, তেমনই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানেও হৃদরোগে আক্রান্ত নারীদের জীবনের ঝুঁকি পুরুষদের তুলনায় অনেকটাই বেশি।
সেই গবেষণা বলছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর সাড়ে আট বছরের সময়কালে আক্রান্ত নারীদের মধ্যে জীবিত ছিলেন শতকরা ২৭ জন। তুলনামূলক ভাবে এই সময়ে জীবিত পুরুষ রোগীর সংখ্যা ছিল শতকরা ৩৯ ভাগ।
হৃদরোগে মৃত্যুঝুঁকির কারণ
হৃদরোগের জন্য অনেক কিছুই দায়ী। যেমন- বয়স, লিঙ্গ, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ লিপিড, ডায়াবেটিস ম্যালাইটাস, ধূমপান, অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ, পারিবারিক ইতিহাস, স্থূলতা, স্বল্প শারীরিক পরিশ্রম এবং বায়ু দূষণ।
এক এক এলাকার জন্য এক এক কারণ দায়ী হলেও সামগ্রিকভাবে এরা সকলেই হৃদরোগের কারণ। তবে জীবন যাপনের ধরন পরিবর্তন, সামাজিক পরিবর্তন, ঔষধ সেবন এবং ঊচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ লিপিড ও বহুমূত্র প্রতিরোধের মাধ্যমে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
ঢাকাটাইমস/২১ মার্চ/এএইচ

মন্তব্য করুন