গণবিরোধী সরকার মানুষের কষ্ট বোঝে না: জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১১ আগস্ট ২০২২, ১৮:১০

দেশ পরিচালনায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ মন্তব্য করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলছেন, সরকার তেলের দাম বাড়িয়ে মানুষের কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে। তেলের দাম না বাড়ালেও পারতো সরকার। ভ্যাট-ট্যাক্স না নিলে এবং জ্বালানি তেলের অর্জিত মুনাফা সমন্বয় করলেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে হতো না। যে সরকার তেলের দাম বাড়িয়ে মুনাফা করে কিন্তু মানুষের কষ্ট বোঝেনা সেই সরকার জনগণের সরকার নয়।

বৃহস্পতিবার জাপার বনানী কার্যালয়ে সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম রব্বানী জাতীয় পার্টিতে যোগদান অনুষ্ঠানে জাপা চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, ‘গণবিরোধী সরকার মানুষের কষ্ট বোঝে না। সরকার বিভিন্নভাবে মুনাফা করে, উন্নয়ন ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে লুণ্ঠন করছে। সরকার মুনাফার টাকা ব্যাংকে রাখছে, নামে-বেনামে সেই টাকা ঋণ করে বিদেশে পাচার করছে একটি শ্রেণি। প্রজাতন্ত্রের নামে দেশে এক ব্যক্তির শাসন তৈরি হয়েছে। গণতন্ত্রের নামে দেশে স্বৈরশাসন চলছে। উন্নয়নের নামে দেশে ঘুষ ও দুর্নীতির জোয়ার বইছে।’

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘গেলো বছর শুধু সুইস ব্যাংকেই বাংলাদেশ থেকে জমা হয়েছে প্রায় চার লাখ কোটি টাকা। আমেরিকা, কানাডা, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশে আরো অনেক টাকা পাচার হয়েছে। তথ্য চাইলেই সুইস ব্যাংক তথ্য দিচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার পাচারকারীদের তথ্য চাচ্ছে না। কারণ, যারা টাকা পাচার করেছে তারা সরকারে এবং সরকারি দলের লোক। তারা যেন পাচারকারী হিসেবে চিহ্নিত না হয় সেজন্যই পাচারকারীদের তালিকা প্রকাশ করছে না সরকার। সরকার বলছে ৪০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে। কিন্তু সেই তথ্যে গলদ রয়েছে। ডলারের দাম ১২৩ টাকা পর্যন্ত হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।’

‘সংসদে আমরা কথা বললে কাজ হয় না। আমাদের পরামর্শ, কথার কথা হয়ে গেছে। উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। আবার পরিচালন ব্যয় ট্যাক্সের ওপর নির্ভরশীল। ট্যাক্স আদায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী না হলে, বেতন-ভাতা পরিশোধে ঝামেলা হতে পারে।’

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘লোডশেডিং কেন? উৎসব করা হলো আমরা নাকি বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ? আমরা যখন বলেছি দেশ শ্রীলংকার পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে, তখন সরকারি দলের পক্ষ থেকে বলা হলো আমি নাকি অশিক্ষিত। তাহলে এখন লোডশেডিং কেন? সারাদিন বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং এডিবিকে গালাগাল করে এখন কেন ঋণের জন্য তাদের পেছনে ধর্ণা দিতে হচ্ছে? কেন এই অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হলো? বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই কুইক রেন্টাল, রেন্টাল এবং ক্যাপাসিটি চার্জের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হচ্ছে।’

জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় এই নেতা বলেন, ‘দেশে বিরাজনীতিকরণ চলছে। রাজনীতি চিরতরে ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে। রাজনীতিতে প্রতিযোগিতার বিপরীতে প্রতিহিংসা শুরু হয়েছে। আগামী নির্বাচনে যারা পরাজিত হবে তারা যেন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। আওয়ামী লীগ পরাজিত হলে, আওয়ামী লীগের নিশ্চিহ্ন হবার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এমন রাজনীতি চাই না। আমরা চাই সহনশীল পরিবেশে রাজনীতি। আমরা রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন চাই।’

অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, ‘দেশে চিকিৎসা নেই বললেই চলে। হাসপাতালের মেঝেতে, বারান্দায়, সিঁড়িতে ও বাথরুমেও রোগীরা শুয়ে থাকে। কিন্তু সুচিকিৎসা পায় না। তিনি বলেন, আমরা পানির নিচ দিয়ে ট্যানেল, ফ্লাইওভার ও মেগা প্রকল্প আর চাই না। আমরা চাই, প্রতিটি উপজেলায় বিশেষায়িত হাসপাতাল, যেখানে স্বপ্লমূল্যে সাধারণ মানুষ সুচিকিৎসা পায়।’

‘সরকার যেকোন মূল্যে আবারও ক্ষমতায় থাকতে চায়। এজন্য তারা ইভিএম নিয়ে জালিয়াতির ষড়যন্ত্র করছে।‘ বলেও মন্তব্য করেন জাপা চেয়ারম্যান।

সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম রব্বানীর সঙ্গে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সুরুজ আলী, সামছুল ইসলাম, আব্দুল হাকিম, সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, আব্দুল হান্নান তালুকদার, মতিউর রহমান তালুকদার, ইউপি সদস্য আব্দুল হাদি ও আব্দুল হাকিম।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম এমপি, মোস্তফা আল মাহমুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা লিয়াকত আলী খান প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :