বাঁধাকপিতে লুকিয়ে থাকা জীবাণু মস্তিষ্কের ক্ষতি করে!

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:১৫

বাঁধাকপি শীতকালের জনপ্রিয় পুষ্টিকর সবজি। বাঁধাকপির বৈজ্ঞানিক নাম ব্রেসিকা ওলেরেসিয়া। পাতাকপি নামেও বেশ পরিচিত। শীতকালে আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে বাঁধাকপি হয়। কৃষির আধুনিকায়নের ফলে এখন সারা বছরই মেলে এই সবজি। আমাদের দেশে সবুজ রঙে পাওয়া যায় বাঁধাকপি। কিন্তু অন্যান্য দেশে সাদা, গাঢ় সবুজ, হালকা সবুজ, বেগুনি রঙেও পাওয়া যায়। পুষ্টির জন্য আমরা বেশি বেশি করে খেতে পারি এই সবজি। শীতকালজুড়ে রাখতে পারি সালাদে। আর এই বাঁধাকপি দিয়ে নানা ধরনের পদও রান্না হয়ে থাকে।

প্রতি ১০০ গ্রাম বাঁধাকপিতে ৯১.৯ গ্রাম পানি, ১.৮ গ্রাম আমিষ, ০.১ গ্রাম চর্বি, ০.৬ গ্রাম খনিজ, ১.০ গ্রাম আঁশ এবং ৪.৬ গ্রাম শ্বেতসার রয়েছে। খনিজ লবণের মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম ৩৯ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৪৪ মিলিগ্রাম, লৌহ ০.৮ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ১৪.১ মিলিগ্রাম, কপার ০.০৮ মিলিগ্রাম ও সালফার ৬৭ মিলিগ্রাম।

বাঁধাকপিতে উপস্থিত ফোটোনিউট্রিয়েন্টস, যেমন পলিফেনল এবং গ্লকোসিনোলেট শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা করনারি আর্টারি ডিজিজ, অর্থাৎ হার্টের রোগের প্রকোপ কমানোর পাশাপাশি ক্যানসার, অ্যালঝাইমারস এবং ম্যাকিউলার ডিজেনারেশনের মতো রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

তবে উপকারিতা সত্ত্বেও বাঁধাকপি কিন্তু চরম ক্ষতিকরও! অনেকের প্রিয় এই সবজিতে নাকি কৃমির বাসা রয়েছে! এতে ফিতাকৃমি বাস করে বলে অনেকেই মনে করেন। এই ফিতাকৃমি শরীরে অন্য অংশের মাধ্যমে পৌঁছতে পারে সরাসরি মস্তিষ্কে ৷

এই ফিতাকৃমির মাধ্যমে যে সংক্রমণ হয় তাকে টেনাইসিস বলা হয়ে থাকে ৷ শরীরে প্রবেশ করার পর ডিম পাড়ে, ফলে শরীরের মধ্যে ক্ষতের পরিমাণ বাড়তে থাকে ৷ এই কৃমি তিন প্রজাতির টিনিয়া সোগিনাটা, টিনিয়া সেলিওম, টিনিয়া এশিয়াটিকা, এই ক্ষতিকারক জীবাণু যকৃতে পৌঁছে ক্ষতিকারক মাংসপিণ্ড বা সিস্টের জন্ম দেয় ৷ চোখেরও ক্ষতি করে ৷

চিকিৎসকরা বলছেন, বাঁধাকপিতে লুকিয়ে থাকা টেপওয়ার্ম মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে।

কীভাবে ক্ষতি করে লুকিয়ে থাকা কৃমি? বাঁধাকপি খাওয়ার পর তাতে থাকা কৃমি শরীরে ঢুকে পড়ে। সেখান থেকে চলে যায় মস্তিষ্কে। এই কৃমি মিউকোসা অতিক্রম করে পৌঁছয় রক্ত প্রবাহে। সেই ব্লাড ব্রেন ব্যারিয়ার ভেঙে চলে যায় মস্তিষ্কে। যা মস্তিকে তৈরি করে প্রদাহ। মাথাব্যথা বা ব্রেইন ফগ হতে পারে।

পুষ্টিবিদরা বলছেন, বাঁধাকপি ভাল করে ধুয়ে খেলে টেপওয়ার্ম হয় না। সম্ভব বলে পানিতে ধোয়ার পর ৫ মিনিট রেখে দিন গরম পানিতে। তার পর ধুয়ে রান্না করুন। যদিও চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, যে কোনও শাক-সবজিতে কৃমি ও জীবাণু থাকে। ফলে বাঁধাকপি খেলেই ক্ষতি হবে এমনটা নয়। সব শাক-সবজিই ভাল করে ধুয়ে খাওয়াই শ্রেয়। দরকারে গরম পানিতেও ধুয়ে নেওয়া যেতে পারে। সালাদ হিসেবে কাঁচা না খাওয়াই ভালো। প্রয়োজনে সিদ্ধ করে নেয়া যেতে পারে। এর ফলে ভেতরের জীবাণু বের হয়ে আসে। এভাবে খেলে আপনার স্বাস্থ্যের তেমন ক্ষতি হবে না।

এছাড়া বাঁধাকপি পরিপাকে অসুবিধা হলে গ্যাসট্রাইটিস বেড়ে যায়। বাঁধাকপির কারণে পেটফাঁপাভাব হতে পারে। বাঁধাকপি, ব্রকলির মতো ক্রুসিফেরাস সবজি পেটে গ্যাসের সৃষ্টি করতে পারে। প্রথমে অল্প পরিমাণে খেয়ে দেখুন, কোনো রকম অস্বস্তি বোধ করছেন কি না। যদি কোনো সমস্যা হয়ে থাকে কিংবা সমস্যা গুরুতর হয়, তবে বাঁধাকপি না খাওয়াই ভালো।

গাউট আর্থ্রাইটিস, হাইপো থাইরয়েডের মতো শারীরিক সমস্যায় বাঁধাকপি না খাওয়াই ভাল৷ অ্যালার্জির সমস্যা থাকলেও বাঁধাকপি থেকে সতর্ক থাকবেন৷

ঢাকাটাইমস/১৯ জানুয়ারি/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

ফিচার এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :