সুপ্রিম কোর্টে লাঠিপেটায় ১০ সাংবাদিক আহত, লিখিত অভিযোগ চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৩, ১৭:৫১ | প্রকাশিত : ১৫ মার্চ ২০২৩, ১৭:২৭

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশের লাঠিচার্জে কমপক্ষে ১০ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। এরমধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় এটিএন নিউজের সাংবাদিক জাবেদ আক্তার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ভোটকেন্দ্রে স্লোগানরত আইনজীবীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের সংবাদ সংগ্রহকালে পুলিশ আক্রমণ করে বলে অভিযোগ করেন আহত সাংবাদিকরা। ঘটনার পর নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চলে ভোটগ্রহণ। আর আহত সাংবাদিকদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

তবে লাঠিপেটার কথা অস্বীকার করে এর দায় তৃতীয় কোনো পক্ষের ইঙ্গিত দিয়ে বুধবার বিকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন-অর-রশীদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘একজন সাংবাদিক আহত হওয়ার কথা শুনেছি। আমাদেরও ৮-১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কারা সাংবাদিকদের আক্রমণ করেছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে জানিয়ে এডিসি হারুন বলেন, ‘আমি যতক্ষণ সুপ্রীম কোর্টের ভোটকেন্দ্র এলাকায় ছিলাম, ততক্ষণ সাংবাদিকদের ওপর পুলিশকে হামলা করার কোনো ঘটনা প্রত্যক্ষ করিনি।’

এ বিষয়ে ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি আশুতোষ সরকার সাংবাদিকদের বলেন, ‘কর্তব্য পালনরত সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা আইনমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতিকে জানানো হয়েছে। তারা লিখিত অভিযোগ চেয়েছেন। আমরা তাদের লিখিতভাবে বিষয়টি জানাব।’

এদিকে বুধবার সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ভোটগ্রহণ শুরু হলে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ভেতরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পন্থীদের আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। এ খবর সাংবাদিকরা সংগ্রহ করতে ভোটকেন্দ্রে ঢুকলে পুলিশ তাদের ওপর চড়াও হয় জানান আহত সাংবাদিকরা।

পুলিশের লাঠিচার্জে এটিএন নিউজের রিপোর্টার জাবেদ আক্তার, প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ ফটো সাংবাদিক শুভ্র কান্তি দাস, জাগো নিউজের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ফজলুল হক, আজকের পত্রিকার নূর মোহাম্মদ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের জান্নাতুল ফেরদৌস, বৈশাখী টেলিভিশনের ক্যামেরা পার্সন ইব্রাহিম হোসেন, এটিএন বাংলার ক্যামেরা পার্সন হুমায়ুন কবির, মানবজমিনের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার আব্দুল্লাহ আল মারুফ, সময় টিভির ক্যামেরাপার্সন সোলাইমান স্বপন, ডিবিসির ক্যামেরা মেহেদি হাসান মিমসহ বেশকয়েকজন সাংবাদিক আহত হন।

আহত সাংবাদিকরা বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে স্লোগানরত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পন্থী আইনজীবীদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। সেখানে সংবাদ সংগ্রহ করার সময় সাংবাদিকদের ওপরও পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পুলিশ বিভিন্ন সাংবাদিকদের মুঠোফোন ও ক্যামেরা কেড়ে নেয়।’

এদিকে বুধবার সকাল ১০ টা থেকে আইনজীবী সমিতির ভোট গ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু সকাল সাড়ে দশটার দিকে ভোটকেন্দ্রে ২০ থেকে ৩০ জন পুলিশ ঢোকেন। এরপর সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে ভেতরে পুলিশ-আইনজীবী সংঘর্ষ হচ্ছে দেখতে পেয়ে সাংবাদিকরা ভেতরে ঢোকেন।

অন্যদিকে হট্টগোল শেষে ফের চলে সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোটগ্রহণ।

এর আগের দিনের হট্টগোল, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ব্যালট ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠে। পরে বুধবার কড়া নিরাপত্তায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রথম দিনের ভোটগ্রহণ সকাল ১০টায় শুরু হয়। সকাল ৮টার আগে থেকেই ভোট দেওয়ার জন্য জড়ো হতে থাকেন আইনজীবীরা। এর মধ্যে সরকার সমর্থক আইনজীবীরা (সাদা প্যানেল) তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার জন্য লাইনে দাঁড়ান। কয়েকজন আইনজীবী ভোট দেন। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেলের আইনজীবীরা ভোটগ্রহণে বাধা দেন। এরপর শুরু হয় হট্টগোল।

ভোটগ্রহণের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে সকাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সকাল থেকেই বিপুল সংখ্যক পুলিশের নিয়োজিত করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সাদা পোশাকধারী সদস্যরাও দায়িত্বপালন করেন।

(ঢাকাটাইমস/১৫মার্চ/আরআর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :