অ্যালামনাইদের বৃত্তি পেলেন ঢাবির ৫৩০ শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১৯-২০২০ এবং ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের বিভিন্ন বিভাগের ৫৩০ জন শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিয়েছে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (ডুআ)।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান ও সমাজ পরিবর্তনে শিক্ষার্থী’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তাদেরকে বৃত্তি প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব করার মতো অসংখ্য অসংখ্য বিষয় রয়েছে। সময় কিন্তু অনেক এগিয়েছে, অনেক দ্রুততার সঙ্গে। এখন পরিবর্তনের গতি অনেক বেশি। ১৫ বছর আগেও বিশ্ব যে গতিতে আগাচ্ছিল, এখন সেই গতি নেই। এখন গতি আরও অনেক বেড়েছে। সেই গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আগাতে হবে। আমাদের প্রায় দেড়শোর বেশি বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যেগুলো অনেক গবেষণায়, র্যাংকিংয়ে অনেক ভালো করছে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ঐতিহ্য ইতিহাসের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে আরও অনেক বেশি এগিয়ে যেতে হবে। এখান থেকে বহু প্রকাশনা প্রকাশিত হয়। তবে আমাদের আরও বেশি এগোতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, অতিমারির সময় অনেকে অনেক বেশি এগিয়েছিল। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিছিয়ে পড়ার সুযোগ নেই, পিছিয়ে যেন না পড়ে। অ্যালামনাইয়ের উদ্যোগগুলো বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে যাওয়ার গতি তরান্বিত করবে। সারাবিশ্বে অ্যালামনাইয়ের সহযোগিতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়। আমাদের দেশে এই শক্তিকে ব্যবহার করা হয় না। অন্যান্য উদ্যোগের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি ফান্ড তৈরির আহ্বান জানান মন্ত্রী।
ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতির অন্যতম ছিল শিক্ষা৷ যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু শিক্ষাখাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দিয়েছেন। বাংলাদেশের শিক্ষার অগ্রগামিতা অব্যহত রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ঐতিহ্য মূল্যবোধ আদর্শ পূর্বসূরীরা যেভাবে ধারণ করেছে। বর্তমান শিক্ষার্থীদেরও একই মূল্যবোধ ধারণ করার আহ্বান জানান তিনি।
এ কে আজাদ বলেন, ৪৩ বছর আগে ১৯৭৮ সালে মফস্বল শহর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। আমি ব্যবসা করে লোকসানে যখন হতাশ হই তখন মনে একটাই বিশ্বাস ছিল যে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। ব্যবসা করে যারা সফল তাদের থেকে আমি কোনো অংশে কম নয়। অতএব আমাকে জয়ী হতেই হবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা কখনই নিজেদের দরিদ্র ভাববে না। কারণ তোমরা দরিদ্র নও। তোমরা নিজেদের লক্ষ্য ঠিক করো, তুমি ব্যবসায়ী হবা, চাকরি করবা ঠিক করে নিজেকে সেভাবে তৈরি কর। তাহলে দুনিয়া সহজ হয়ে যাবে। অ্যালামনাইয়ের প্রাক্তন সভাপতি হিসেবে আমি এখনও অ্যালামনাইয়ে যুক্ত আছি। আমাদের একটাই লক্ষ্য অর্থের অভাবে কোনো শিক্ষার্থীর যেন লেখাপড়া বন্ধ হয়ে না যায়। আমরা সবাই পৃথিবী থেকে চলে যাব, তবে আত্মতৃপ্তি নিয়ে যেতে চাই। আমরা বৃত্তি চালু করেছি, আমরা অনার্সে গবেষণায় অনুদান ও ক্যাম্পাসে পার্টটাইম চাকরি তৈরির নিশ্চয়তা দিচ্ছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অন্ন বস্ত্র বাসস্থান শিক্ষা এবং শিক্ষা শেষে চাকরির—এই রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিলেন। তারই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাব।
অনুষ্ঠানে সভাপ্রধান ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ এবং উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব মোল্লা মোহাম্মাদ আবু কাওছার।
(ঢাকাটাইমস/২৮মার্চ/এসকে/ইএস)