হাওর পারের সড়ক ফেটে নদীতে বিলীনের শঙ্কা, দুশ্চিন্তায় হাজারো বোরোচাষি

মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওর তীরবর্তী বেলাগাঁও গ্রামের রাস্তায় বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে। পর্যায়ক্রমে এই ফাটল আরও বৃদ্ধি পাওয়ায় রাস্তাটি নদীতে বিলীন হতে চলছে। এতে করে ওই এলাকার ৬-৭ হাজার অধিবাসীসহ কয়েক হাজার কৃষক দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। বিশেষ করে এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকির চলমান বোরো ধান আনয়ন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মালিক-কৃষক-শ্রমিক।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, জেলার জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নে জুড়ী-কুলাউড়া সড়কের কন্টিনালা নদীর পশ্চিম দিকে গরেরগাঁও হয়ে বেলাগাঁও (পশ্চিম পার) গ্রামের রাস্তা বয়ে গেছে। রাস্তাটি গরেরগাঁও, কাটানালারপার, বেলাগাঁও, সোনাপুর ও রাবার ড্যাম হয়ে হাকালুকি হাওর পর্যন্ত চলে গেছে। এ সড়কে উক্ত এলাকার ৬/৭ হাজার বাসিন্দা নিত্য চলাচল করেন। হাজারো শিক্ষার্থী বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় যাতায়াত করেন। তাছাড়া এশিয়ার বৃহত্তম এ হাওরে উৎপন্ন মাছ, বোরো ধান, শীতকালীন সবজি ও রবিশস্য এ সড়ক দিয়ে পরিবহন করা হয়।
জানা যায়, ইতোমধ্যে কন্টিনালা নদীর পশ্চিম তীরবর্তী এ সড়কের বিভিন্ন অংশে ছোট ছোট ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত ৩/৪ দিন থেকে উক্ত সড়কের গরেরগাঁও এলাকায় ফাটল দেখা দেয়। প্রতি নিয়ত ফাটল বৃদ্ধি পেতে থাকে। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ফাটলটি ব্যাপক আকার ধারণ করায় চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কোনো সময় সড়কটি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় এ এলাকায় শতাধিক বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, জুড়ী নদীর শাখা কন্টিনালার পশ্চিম পার গরেরগাঁও হতে রাবার ড্যাম রাস্তার এক কিলোমিটার রাস্তা ২০১৫-১৬ সালে পাকাকরণ করা হয়। বাকি রাস্তা কাঁচা। এই রাস্তা দিয়ে গরেরগাঁও একাংশ, কাটানালারপার, বেলাগাঁও ও সোনাপুর গ্রামের লোকজন চলাচল করেন। প্রতিদিন অসংখ্য যানবাহন যোগে এ এলাকার বাসিন্দারা তাদের নিত্যপণ্য আনা-নেয়া করেন। সেই সঙ্গে হাকালুকি হাওরের যাতায়াতের অন্যতম এই রাস্তা দিয়ে হাওরে উৎপাদিত মাছ, বোরো ধান, মিষ্টি কুমড়া, আলু, বাদাম, ভুট্টাসহ কৃষিপণ্য পরিবহন করা হয়। ফাটলের সঙ্গে রাস্তাটি নদীতে বিলীন হতে যাওয়ায় রবি শস্য ও বোরো ধান পরিবহন নিয়ে লোকজন মহা সংকটে পড়েছেন।
স্থানীয়রা দ্রুতভাবে রাস্তাটির ভাঙন ঠেকানোর উদ্যোগ নিতে প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানান।
জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই রাস্তা দিয়ে হাজার হাজার মানুষের চলাচল। পাশাপাশি হাকালুকিতে যেসকল কৃষি পণ্যের চাষাবাদ হয় সেগুলো পরিবহনের জন্য এ রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল করে। রাস্তাটি সংস্কারের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী ননী গোপাল দাস বলেন, আমি ও ইউএনও স্যার রাস্তাটি দেখে এসেছি। দ্রুত একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প প্রয়োজন। সেটির জন্য ও আমি এলাকাবাসীর সঙ্গে পরামর্শ করেছি।
(ঢাকাটাইমস/এপ্রিল/এআর)

মন্তব্য করুন