প্রেম কণিকা

প্রেমের এখন আকাল ভীষণ রয়না হৃদয় জুড়ে,
প্রেমতো এখন ঠোঁটে ঠোঁটে নোটে নোটে ঘুরে।
#
প্রেম উড়ে ভাবনার তারিখের পাখায়,
দেয়ালে ঝুলানো আগের ছেঁড়া পঞ্জিকায়।
#
ভালোবাসা কোনো হিসাবের খাতা নয়,
ভালোবাসা কোনো ডায়েরির পাতা নয়;
ভালোবাসা হলো হৃদয়ে হৃদয়ে কথা,
হৃদিনন্দনে পুষ্পিত চারুলতা।
#
মনের কথা বলতে যে চাও, শোনার মতন মানুষ কই?
দুধ খেয়ে আগে মুখ পোড়া গ্যাছে, এখন ফুঁ দিয়ে খাচ্ছ দই।
তোমার দুঃখ কেউ শুনবে না; সকলেরই মুখে কথার খই,
‘মনের মানুষ’ বলে কেউ নেই; সকল মানুষই চলনসই।
#
সুখে আছি কি-না জানি না,
তবে, আজকাল আর কাঁদনা।
বিরহের ভার কমে কান্নায়;
সে কথাও আর মানি না।
কেঁদে কেঁদে অশ্রুর হলো অপচয়,
সেই জলই সাগরে হলো সঞ্চয়।
যুগে যুগে প্রেমিকের দেখে পরাজয়,
প্রেমের কথাই আর মুখে আনি না-
বিচ্ছেদ-ভার কমে কান্নায়;
সেই কথা আর মানি না।
#
শুধু প্রেম নিয়ে লেখা হলো এতো
নাটক, নভেল, কবিতা, গান,
উপসংহারে পৌঁছেনি তবু প্রেমের উপাখ্যান।
যতো লেখে ততো পরিধিই বাড়ে
মেলে না প্রেমের সীমা বা তল,
নতুন স্বরূপে প্রেমের প্রতিমা আনন্দে বিহ্বল।
প্রেমের ভুবন রহস্যে ঘেরা
কল্পনামেঘের চাদরে ঢাকা,
মানুষ চেনে না প্রেমের ম্যাপের অক্ষ-দ্রাঘিমা রেখা।
#
তোমাকে হারাবার ভয়ে থাকি, তাই
প্রেম গেঁথে রাখি আলপিনে,
সযত্নে তোমায় রাখি যে লুকিয়ে
দুর্ভাবনার আস্তিনে।
#
আমি না জেনে না বুঝে,
পথে পথে খুঁজে পান্থজনের সখা,
দিশাহারা হয়ে অঘোরের মাঝে
ঘুরে মরি একা একা।
পথেরদিশারা দিশারী না পেয়ে
নিজেদেরই দিশা হারায়,
পথের শেষের ঠিকানা না পেয়ে
ভাসে যে অশ্রুধারায়।
#
আকাশের কোটি তারা
বনানীর জোনাকিরা
মিটি মিটি আলো জ্বেলে বলে;
তাদের সকল আলো
একে একে নিভে যেতো
তোমার আর আমার প্রেম না হলে।
#
ভালোবাসা খাঁটি তবে মানুষই নকল,
প্রেমকে করেছে সেই মানুষই দখল।
‘খাঁটি প্রেম পেতে চাই’--সবে কহ যে,
নিখাদ প্রেম কি মিলে এত সহজে?
প্রেমে নেই মলিনতা কোনো অপবাদ,
সে-সোনায় মানুষইতো মিশিয়েছে খাদ;
গোলক ধাঁধার মাঝে চলে যে বিবাদ
কোনটা নকল প্রেম, কোনটা আসল-
ভালোবাসা খাঁটি তবে মানুষই নকল।
#
তোমাকে দেখার পর জেনেছে এ-অন্তর
তুমিই পৃথিবী আমার, তুমিই জীবন,
যে-ভুবনে তুমি নেই মৃত সে-ভুবন।
#
তোমাকে দেখার সাধ মিটেনা যে আর,
যত আমি দেখি বার বার।
যত দেখি তত ভাবি,
কে দিয়েছে এ-মায়াবী রূপের বাহার?

মন্তব্য করুন