উপমন্ত্রী শামীমের প্রচেষ্টায় এখন অন্য রূপে নড়িয়া

শরীয়তপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল ২০২৩, ১৭:২২

সেই ভাঙন কবলিত এলাকাই এখন হয়ে উঠেছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান। মাত্র তিন বছরের চেষ্টায় বদলে গেছে সবকিছু। এখন আর ভাঙনের শব্দ শোনা যায় না নড়িয়াতে। প্রমত্তা পদ্মা আগ্রাসনের শিকার নড়িয়া এখন রীতিমতো পর্যটন এলাকায় পরিণত হয়েছে। এক সময় নদী ভাঙনের কারণে যে এলাকার মানুষ দিনে রাতে একটা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে কাটাতো— তাদের চোখে-মুখে এখন খুশির ঝিলিক। বছরের পর বছর উত্তাল পদ্মার স্রোত ও সর্বগ্রাসী ঘূর্ণি, এক এক করে গ্রাস করছে দালানকোটা, বাড়ি-ঘর, সড়ক, হাটবাজার, স্কুল, হাসপাতাল, ফসলি জমি, ফলের বাগান সবকিছু। মানুষের স্বপ্নকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। গভীর অনিশ্চয়তায় ঠেলে দিয়েছে গ্রামের পর গ্রাম মানুষের বসতিকে। চোখের সামনে সবকিছু গ্রাস করেছে পদ্মা। সর্বস্বান্ত মানুষ বার বার ঠিকানা বদল করেছে। ছুটেছে অজানা গন্তব্যে। হাজার হাজার পরিবার হারায় মাথা গোঁজার ঠাঁই। খোলা আকাশের নিচে কোনোমতে জীবন বাঁচিয়ে রেখেছে কতো পরিবার। খাদ্য, পানি ও ওষুধের সংকট জনপদ জুড়ে। সর্বত্র হাহাকার আর সবকিছু হারানো মানুষের বোবা কান্না ও আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠে পদ্মা পাড়ের নড়িয়ার আকাশ।

জানা যায়, মাত্র চার বছর আগে অর্থাৎ ২০১৮ সালেই নড়িয়া এলাকায় সাড়ে ছয় হাজার পরিবার নদীভাঙনের শিকার হয়। নদীগর্ভে বিলীন হয় পাকা ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, হাটবাজার, গাছপালা, ফসলি জমি, মসজিদ-মন্দির, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান। ফসলের মাঠ থেকে শুরু করে বাড়িঘর সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব পরিবারগুলো শুধু জল টলমল চোখে পদ্মার বুকে তাকিয়ে আহাজারি করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।

বছরের পর বছর পদ্মার ভাঙনের শিকার নড়িয়া বদলে গেছে গত কয়েক বছরে। থেমে গেছে মানুষের আহাজারি। প্রমত্তা পদ্মার ভাঙনের শিকার মানুষের কান্নার আওয়াজ মিলিয়ে গেছে মানুষের পদচারণায়। এখন আর কোনো অনিশ্চয়তাই পদ্মা পাড়ের নড়িয়ায় নেই। অর্ধশতাব্দির নদীভাঙন কবলিত এলাকার চেরাহাই পাল্টে গেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণে।

ভাঙন রোধ করে গড়ে তোলা হয়েছে মানুষের নিরাপদ আবাসস্থল। একই সঙ্গে পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধ হয়ে উঠেছে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত। প্রতিদিনই শত শত লোক নদীর পাড়ে ঘুরে সময় পার করেন। বিনোদনের চমৎকার একটি স্থানে পরিণত হয়েছে তীর রক্ষা বাঁধ।

জানা গেছে, এক হাজার ৪১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলার পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের অধীনেই নির্মাণ করা হয়েছে ১০ কি.মি. পায়ে হাঁটার পাকা সড়ক। নাম দেওয়া হয়েছে ‘জয়বাংলা এভিনিউ’ নড়িয়া।

‘জয়বাংলা এভিনিউ’ স্থানীয়দের কাছে ‘মিনি কক্সবাজার’। ভ্রমণ পিপাসুদের উপচেপড়া ভিড়ে হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখরিত। প্রতিদিনই হাজারো মানুষ পরিবার নিয়ে ভিড় জমাচ্ছেন সেখানে। পদ্মা পাড়ের নতুন এই পর্যটন কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন খাবারে দোকান। সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থানের। বেড়েছে কর্মচাঞ্চল্য।

জানা গেছে, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম এর প্রচেষ্টায় নড়িয়ার নদী ভাঙন কবলিত এলাকায় ‘জয় বাংলা এভিনিউ নড়িয়া’ কে সাজানো হয়েছে অপরূপ সৌন্দর্যে। সড়ক জুড়ে বসানো হয়েছে সোডিয়াম বাতি। লাগানো হয়েছে ঝাউ গাছ। ওয়াকওয়েতে টাইলস, নদী পাড়ের সিড়ি ভ্রমণ পিপাসুদের স্বস্তির জায়গা এনে দিয়েছে। সব মিলে তিন বছর আগের ভয়াল পদ্মা পাড় এখন ভিন্ন রূপ লাভ করেছে।

এখন আর পদ্মার ভাঙনের শব্দ যেমন শোনা যায় না, তেমনি মানুষের সব হারানোর আর্তনাদের শব্দও ভেসে আসে না। বরং এই জয়বাংলা এভিনিউ থেকে ভ্রমণপিপাসুরা উপভোগ করেন পদ্মায় সূর্য উদয় ও সূর্যাস্ত।

(ঢাকাটাইমস/১৯এপ্রিল/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

ভাঙ্গা-রাজবাড়ী-ঢাকা রুটে আসছে নতুন ২ জোড়া ট্রেন

‘৭ জানুয়ারি আ.লীগ প্রার্থীকে জেতাতে অপকর্ম করেছি’, আ.লীগ নেতার বক্তব্য ভাইরাল

পিরোজপুর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগ

গজারিয়ায় ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

প্রশ্নফাঁসে জড়িত ডা. তারিমের ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে লাখ টাকা জরিমানা

পূবাইলে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ

চাঁদপুরে ইলিশ ধরার প্রস্তুতি জেলেদের

দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৩.৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা যশোরে

সিলেটের ৪ উপজেলায় ২৫ চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৯ জন স্বশিক্ষিত

পাইনাপেল সিল্ক উৎপাদনে আমাদের সহযোগিতা থাকবে: সমাজকল্যাণমন্ত্রী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :