আদর্শ শহরের তুলনায় ঢাকায় সবুজ ভূমির প‌রিমাণ অ‌র্ধেকেরও কম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ জুন ২০২৩, ১৬:২৭

এক‌টি আদর্শ শহরের তুলনায় রাজধানীর ঢাকায় সবুজ ভূমি অ‌র্ধেকেরও কম বলে এক গ‌বেষণা প্রতিবেদনে তু‌লে ধরেছেন প‌রি‌বেশবা‌দীরা।

তারা বলছেন, একটি আদর্শ শহরে ১৫ শতাংশ সবুজ ভূমি থাকা প্রয়োজন হলেও ঢাকায় তা অর্ধেকেরও কম। বর্তমানে ঢাকায় সবুজ ভূমি রয়েছে মাত্র ৭ শতাংশ। যার অন্যতম কারণ সমন্বয়হীন উন্নয়ন ব‌লে জানা‌নো হয়।

শ‌নিবার রাজধানীর বাংলা‌মোটরস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) এর ভব‌নে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম এর সহযোগিতায় বিআই‌পি আ‌য়োজিত “২৮ বছরে রাজধানীর জলাধার ও সবুজ নিধনঃ বাস্তবতা ও উত্তরণের পথনকশা” শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ ও গোলটেবিল আলোচনায় এসব তথ‌্য জানা‌নো হয়।

গ‌বেষণা প্রতিবেদনে উপস্থাপন ক‌রে পরিবেশবাদীরা বলেন, নগরীতে সবুজ গাছগাছালি থাকা পার্কে উন্নয়নের জন্য কনক্রিটের দেয়ালের জন্য পরিবেশ নষ্ট হয়। গাছগাছালির তুলনায় কনক্রিটে আচ্ছাদিত এলাকার পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। খেলার মাঠ দখল করে তৈরি হচ্ছে ক্লাব, মার্কেট, হাটবাজারসহ নানা স্থাপনা।

সবুজভূমি রক্ষায় সমাধানের কথা জানিয়ে বলা হয়, ড্যাপে বর্ণিত "নগর জীবনরেখা" বাস্তবায়নের লক্ষে সবুজায়ন নিশ্চিত করতে হবে। শহরের জলাধার ও সবুজ এলাকা রক্ষা করার উদ্দেশ্য জলাধার সংলগ্ন জায়গাগুলোতে পাবলিক স্পেস তৈরি করতে হবে। এছাড়াও ঢাকা কেন্দ্রিক উন্নয়নকে নিরুৎসাহিত করে অবশিষ্ট সবুজভূমি রক্ষা করতে হবে।

সবুজভূমি সংরক্ষণে স্টেকহোল্ডারদের মৌলিক কার্যাবলির কথা জানিয়ে বলা হয়, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা, পার্ক এবং খোলা জায়গা রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। রাউজককে যুগোপযোগী পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। ইমারত ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র দিতে হবে। নির্মাণ অনুমতিপত্র ও অকুপেসি সার্টিফিকেট প্রদান করতে হবে।

বন বিভাগকে বনসম্পদ উন্নয়ন ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জীববৈচিত্র্য ও Watershed ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ কাজে নিয়োজিত করার তাগিদ দেন পরিবেশবাদীরা। ন্যাশনাল হাউজিং অথোরিটির উদ্দেশ্য করে তারা বলেন, হাউজিং প্রোজেক্টে সবুজ ভূমির পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করতে হবে। এক্ষেত্রে গণপূর্ত অধিদপ্তর ঢাকা মহানগরে মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু পার্ক এবং খোলা জায়গা রক্ষণাবেক্ষণ করা।

পরিকল্পনা কমিশন বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমদিত নীতিমালা অনুযায়ী দেশের অর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য মধ্যে ও দীর্ঘ মেয়াদি প্ররিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। মধ্য মেয়াদি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার তাত্ত্বিক কাঠামো প্রণোয়ন করতে হবে।

এলজিইডির মৌলিক কার্যাবলী জানিয়ে বলা হয়- ক্ষুদ্রাকার পানিসম্পদ উন্নয়ন, উৎপাদিত কৃষি ও অকৃষি পণ্য পরিবহন ও এর সুষ্ঠু বিপণনে গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তর পরিবেশ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সক্ষমতা তৈরির লক্ষে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, মতবিনিময় সভা,, ইত্যাদি আয়োজন, "গ্রিন গ্রোথকে" উৎসাহিত করতে হবে।

ইন্টারন্যশনাল এনজিও এসডিজি নিশ্চিতকরণের উদ্দেশ্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করা জরুরি। স্থানীয় এনজিও এসডিজি ও দেশীয় টার্গেট নিশ্চিতকরণের উদ্দেশ্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। সামাজিক সংগঠনের ভূমিকা জানিয়ে বলা হয়- বাংলাদেশে পরিবেশের আরও অবনতির প্রক্রিয়া বন্ধ করা, যেখানে সম্ভব, পরিবেশের যে ক্ষতি ইতোমধ্যে হয়েছে তা রোধ করতে হবে। গণমাধ্যমের ভূমিকা জানিয়ে বলা হয়- সবুজ ভূমি সংলগ্ন উন্নয়ন, অবনতি, পর্যবেক্ষণ করা এবং সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের মতামত গ্রহণ এবং প্রচার করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সবুজ ভূমির ব্যবহার সংরক্ষণ এবং পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্য বিভিন্ন গবেষণা করা এবং পরামর্শ দিতে হবে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর সভাপতি পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন এর সভাপতিত্বে এবং ইনস্টিটিউট এর যুগ্ম সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ রাসেল কবির এর সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আনিসুর রহমান মিঞা, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার এর উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর সভাপতি সুলতানা কামাল, সোসাইটি অব এক্সপার্টস অন এনভায়রনমেন্ট ডেভেলপমেন্ট (সিড) এর সভাপতি মোঃ আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদ এর ডীন অধ্যাপক ড. ইশরাত ইসলাম, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এর প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট (বাস্থই) এর সহ-সভাপতি স্থপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ আলী নকী স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ এর পরিবেশ বিজ্ঞান

বিভাগের ডিন ও সভাপতি অধ্যাপক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার এবং নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম এর সভাপতি জনাব অমিতোষ পাল।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান এবং বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে উপস্থিত আ‌ছেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর কোষাধ্যক্ষ পরিকল্পনাবিদ ড. মু. মোসলেহ্ উদ্দীন হাসান।

(ঢাকাটাইমস/০৩জুন/কেআর/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

পারিবারিক মূল্যবোধ রক্ষার ওপর জোর দিতে হবে: ভূমিমন্ত্রী

সরকার দুর্নীতি দমন না করে বিএনপি দমনে ব্যস্ত: সালাম

স্যাটেলাইট ইমেজে জানা যাবে কোথায় গাছ লাগাতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী

উপজেলা নির্বাচন: ১২২ উপজেলায় প্রতীক বরাদ্দ সোমবার

বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে ইতালির ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

ফুডসিস্টেম ড্যাশবোর্ডে সহজ হবে নীতিমালা প্রণয়ন: খাদ্য সচিব

নিরাপদ সড়ক গড়তে উবার-বিআরটিএ’র যৌথ উদ্যোগ

উন্নত বাংলাদেশ মানে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা: নৌ প্রতিমন্ত্রী

এপ্রিলে সড়কে ঝরেছে ৬৭৯ প্রাণ, ক্ষতি ২ হাজার কোটি টাকার বেশি

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর কাছে ভিসাসহ তিন সমস্যায় সহযোগিতা চাইলেন কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :