সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের বাড়িতে আ.লীগ নেতার হামলা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে আতঙ্ক

কুমিল্লার-৩ আসনের পাঁচবারের সংসদ সদস্য ও সাবেক-ধর্ম প্রতিমন্ত্রী, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে একই আসনের সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন ঘনিষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল হাসান ওরফে লিটন এ হামলা করেন বলে জানিয়েছেন বাড়িটিতে থাকা সদস্যরা। এ ঘটনায় এলাকাটির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী।
বাড়িটির একজন সদস্য জানান, গতকাল মধ্যরাতে সাবেক এমপি কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের বাড়িতে গিয়ে মোটরসাইকেল দিয়ে আঘাত করে নাজমুল হাসান ওরফে লিটন। পরে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে এবং কায়কোবাদের ভাগিনা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সোহেল আহমেদ বাবুর ওপর হামলা করে এবং ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। পরবর্তীতে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে সে মাতাল সেজে অসংলগ্ন কথা বার্তা বলা শুরু করে এবং কায়কোবাদ ও তার নেতাকর্মীদের গালমন্দ ও গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়।
এক পর্যায়ে প্রতিবেশীদের তোপের মুখে মুর্শেদ নামের এক ব্যক্তির নাম উল্লেখ্য করে নাজমুল বলেন, `আমি কালা মুর্শিদ বাহিনীর লোক। এ বাড়িতে থাকতে হলে আমাকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে।'
পরবর্তীতে উপস্থিত লোকজন তাকে আটক করে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে থানায় নিয়ে যায় এবং পূর্বের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে মুরাদনগর থানায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি,ধর্ষণসহ ১১টি মামলা রয়েছে।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, ‘নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে পূর্বের একটি মামলায় ওয়ারেন্ট থাকায় তাকে সে মামলায় চালান করেছি। তার বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা রয়েছে। গত রাতের ঘটনায় মামলা হলে জানাবো।’
স্থানীয়রা জানান, সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রভাব দেখিয়ে বিএনপি জামায়াত ও নিরীহ মানুষদের নির্যাতন করতো নাজমুল। শুধু তাই নয় চাঁদাবাজি এবং মাদক ব্যবসা ছিল তার পেশা।
এদিকে সাবেক এমপির বাড়িতে হামলায় আতঙ্কিত মুরাদনগরের সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন- একজন জাতীয় নেতার বাড়ি যদি নিরাপদ না থাকে তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?
স্থানীয় বাসিন্দা নায়েব আলী বলেন, কায়কোবাদ সাহেব সাবেক ৫ বারের এমপি ও জাতীয় নেতা। ওনার বাড়িতে মধ্য রাতে আওয়ামী লীগ নেতা হামলা করে। এতেই স্পষ্ট মুরাদনগরের আইনশৃঙ্খলার কত অবনতি হয়েছে।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মুজিবুল হক বলেন, কায়কোবাদ দাদার বাড়ি মুরাদনগর সদরে। থানা থেকে বাড়ির দূরত্ব খুব বেশি না। অথচ পুলিশের নাকের ডগায় কায়কোবাদের বাড়িতে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীর হামলা হয়। মুরাদনগরের সাধারণ মানুষ কতটা অনিরাপদ এ ঘটনাই বড় প্রমাণ।
(ঢাকাটাইমস/০৯মে/এলএম/এমআর)

মন্তব্য করুন