জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে, মৌলভীবাজারে বন্যার আশঙ্কা

গত চার পাঁচ দিন ধরে মৌলভীবাজারে বৃষ্টি হচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিলো। ৪৮ ঘণ্টা পর সূর্যের কিছুটা দেখা মিললেও বন্ধ হয়নি বৃষ্টি।
এদিকে টানা বৃষ্টি ও উজানের পানিতে মৌলভীবাজারে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। মঙ্গলবার দুপুরে বিপৎসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার তথা ১৮.৮৯ ইঞ্চি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল জুড়ী নদীর পানি। পাশাপাশি বাড়ছে হাওরের পানিও। এতে বন্যার পাশাপাশি পাহাড়-টিলা ধসের আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইড্রোলজি বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী বাবু সত্যেন্দ্র চন্দ্র বৈদ্য বলেন, এখন বেশি বৃষ্টি হচ্ছে ভারতের চেরাপুঞ্জি সংলগ্ন এলাকায়। লাগাতার বৃষ্টিপাতের কারণে মৌলভীবাজার জেলায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় হাকালুকি হাওরের উজান থেকে প্রবাহিত জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। অন্যান্য নদীর পানি বাড়তে থাকায় এবং লাগাতার বর্ষণের কারণে বন্যার পাশাপাশি পাহাড়-টিলা ধ্বসের আশঙ্কা রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত কয়েকদিনের লাগাতার বৃষ্টির কারণে পাহাড়ি টিলার মাটি নরম হয়ে গেছে। এতে যেকোনো সময় এসব টিলার ভূমি ধ্বসে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, আমাদের মনু ধলাইসহ অধিকাংশ নদ-নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নীচে অবস্থান করছে। তারপরও আমরা সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি।
তিনি জানান, রবিবার অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নিজ নিজ উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খুলে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পাহাড় টিলায় বসবাসরত নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে সতর্ক থাকার ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জেলার বিশাল পাহাড়ি এলাকা শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজীব মাহমুদ মিঠুন বলেন, জেলা উন্নয়ন কমিটির সভা থেকে ফিরে এসে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের পাহাড় টিলা ধসের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং ডাকা হয়েছে।
এদিকে অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাইরে বের হচ্ছেন না। এতে খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
(ঢাকাটাইমস/২০জুন/এসএ)

মন্তব্য করুন