রক্ত ঝরছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে: ফখরুল
সারাদেশের মানুষ দম বন্ধকর পরিস্থিতির মধ্যে দিন যাপন করছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশুসহ প্রতিদিনই কেউ না কেউ আক্রান্ত হচ্ছে। রক্ত ঝরছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন জনপদে বহুদলীয় গণতন্ত্র বহু মত ও পথের শেষ চিহ্নটুকু মুছে দিতে সরকার মনুষ্যত্বহীন অমানবিক পন্থায় সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠন ধ্বংস করছে। তারা আবারও ভোটারশূন্য একতরফা নির্বাচন করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।
বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
কক্সবাজারের উখিয়ায় হলদিয়া পালং ইউনিয়নের অন্তর্গত মরিচ্যা শ্রাবস্তি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ধর্ম জ্যোতি ভিক্ষুকে গত রবিবার ভোররাতে সন্ত্রাসীরা ছুরিকাঘাত করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যাওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এই বিবৃতি দেন বিএনপি মহাসচিব।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে কোনো বাংলাদেশিরই সহায়-সম্পত্তি, জান-মাল নির্বিঘ্নে চলাচলের কোনো নিরাপত্তা নেই। দেশ এখন নারকীয় সন্ত্রাসের বৃত্তের মধ্যে আবদ্ধ। জনসমর্থনহীন সরকারের একমাত্র অবলম্বনই হচ্ছে সহিংস সন্ত্রাসের আশ্রয় গ্রহণ করা। তাদের টিকে থাকার একমাত্র গ্যারান্টি হচ্ছে জনসমাজে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ভয়ের পরিবেশ বজায় রাখা।
তিনি বলেন, একদিকে দেশব্যাপী ডেঙ্গু রোগের ব্যাপক বিস্তারে মানুষের মৃত্যু ও দুর্ভোগে সরকারের অবহেলায় ক্ষুব্ধ জনগণ অন্যদিকে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সকারের দাবিতে সারাদেশের মানুষ যখন ঐক্যবদ্ধ তখন জনদৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে ফেরাতেই বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ধর্ম জ্যোতি ভিক্ষুকে ছুরিকাঘাতে আক্রান্ত করা একটি সু-পরিকল্পিত ঘটনা। এহেন একজন শ্রদ্ধেয় ধর্মগুরুকে শারীরিকভাবে আহত করা কেবলমাত্র আওয়ামী শাসনামলেই সম্ভব। গণধিকৃত আওয়ামী সরকার রক্তাক্ত হানাহানিকেই দলীয় ইস্তেহারে পরিণত করেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিগত চৌদ্দ বছর ধরে জোরপূর্বক গুম, বিরোধী নেতাকর্মীদের হত্যা, ভিন্নমত প্রকাশ ও কথা বলার স্বাধীনতাকে অদৃশ্য করার পাশাপাশি বিশ্বাসযোগ্য, সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনকে মাটিচাপার মাধ্যমে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে জলাঞ্জলি দিয়ে কর্তৃত্ববাদী শাসন ধরে রাখার জন্য রক্তাক্ত হিংসার পথে এগিয়ে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি লুটপাট ও পাচারের মাধ্যমে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা।
অন্যদিকে শ্রমিক, কৃষক, দিনমজুরসহ স্বল্প আয়ের মানুষ ক্ষুধার জালায় কাতরাচ্ছে। এই পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে দল মত নির্বিশেষে সকল গণতন্ত্রকামী মানুষকে একযোগে রাস্তায় নেমে আসতে হবে। জনসমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা, স্থিতি ফিরিয়ে আনতে দেশের প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য সবাইকে জোরালো কণ্ঠে আওয়াজ তুলতে হবে।
বিবৃতিতে ফখরুল বলেন, আমি অবিলম্বে অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ধর্ম জ্যোতি ভিক্ষুর ওপর হামলাকারী দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তার করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর আহ্বান জানাচ্ছি এবং আমি তার আশু সুস্থতা কামনা করছি।
ঢাকাটাইমস/০৫জুলাই/জেবি/ইএস