বিশ্বব্যাপী সাড়ে ৭ কোটির বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৬ মে ২০২৪, ১২:৫৬| আপডেট : ১৬ মে ২০২৪, ১২:৫৮
অ- অ+

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা এবং আফ্রিকার দেশ সুদানে সংঘাতের ফলে বিশ্বজুড়ে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষের (আইডিপি) সংখ্যা ২০২৩ সালের শেষে দিকে সাত কোটি ৫৯ লাখে দাড়িয়েছে৷ মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে ইন্টারনাল ডিসপ্লেসমেন্ট মনিটরিং সেন্টার (আইডিএমসি)৷

আইডিএমসি জানিয়েছে, নিজের দেশে বাস্তুচ্যুত হওয়া লোকের সংখ্যা গত পাঁচ বছরে ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে৷

২০২২ সালের শেষে এই সংখ্যা ছিল সাত কোটি ১১ লাখ৷ শরণার্থী বলতে তাদেরই বোঝায়, যারা বিদেশে ‘পালিয়ে’ যেতে বাধ্য হয়েছেন৷ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষ বলতে বোঝায়, নিজ দেশে যারা গৃহহীন হয়ে পড়েছেন৷

অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি সংক্রান্ত বার্ষিক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে আইডিএমসি বলেছে, ছয় কোটি ৮৩ লাখ মানুষ সংঘাত ও সহিংসতার কারণে এবং ৭৭ লাখ মানুষ দুর্যোগের কারণে বিশ্বব্যাপী বাস্তুচ্যুত হয়েছেন৷

বিগত পাঁচ বছরে, সংঘাতের ফলে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দুই কোটি ২৬ লাখ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ ২০২২ এবং ২০২৩ সালে সবচেয়ে বড় দুটি বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে৷

সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০০৮ সালের পর একক দেশ হিসাবে সুদানের বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সর্বোচ্চ ৯১ লাখে৷

গাজা উপত্যকায় ২০২৩ সালের শেষে ১৭ লাখ ফিলিস্তিনি অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন৷ এ ছাড়াও গত বছরে ৩৪ লাখ ‘নতুন চলাচল’ লক্ষ্য করা গিয়েছে৷ অর্থাৎ ২২ লাখ জনসংখ্যার ৭৭ শতাংশ নিজের বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন৷ জাতিসংঘের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে বার্তাসংস্থা এএফপি এই গণনা করেছে৷ গত বছরের অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ পরিস্থিতি শুরু হয়৷

আইডিএমসি পরিচালক আলেকজান্দ্রা বিলাক বলেন, ‘গত দুই বছরে, উদ্বেগজনকভাবে নানা স্তরের মানুষ দেখছি যারা সংঘাত এবং সহিংসতার কারণে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন৷’

তার কথায়, ‘সংঘাত হলো ধ্বংসাত্মক প্রক্রিয়া৷ লাখো মানুষ বছরের পর বছর ধরে তাদের জীবনটা কোনোভাবেই আর গড়ে তুলতে পারছে না৷’

এই পর্যবেক্ষণে অভ্যন্তরীণ স্থানচ্যুতির সংখ্যাও জানিয়েছে৷ তারা জানায়, সমস্ত আইডিপির প্রায় অর্ধেক মানুষই সাব-সাহারান আফ্রিকার বাসিন্দা৷

গত বছর চার কোটি ৬৯ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে বাধ্য হয়েছেন৷ এর মধ্যে দুই কোটি পাঁচ লাখ মানুষ সহিংসতা ও সংঘাতের কারণে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির শিকার৷ এ ছাড়াও দুর্যোগের কারণে ২ কোটি ৬৪ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হন৷ ২০২৩ সালে সুদান, কঙ্গো এবং ফিলিস্তিন অঞ্চলে সংঘাত এর দুই-তৃতীয়াংশের জন্য দায়ী৷

২০২৩ জুড়ে সুদানে সহিংসতার কারণে ৬০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন৷ যা আগের ১৪ বছরের মোট হিসাবের তুলনায় বেশি৷ ২০২২ সালে ইউক্রেনের ক্ষেত্রে যা ছিল এক কোটি ৬৯ লাখ৷ তারপরই রয়েছে সুদানের ২০২৩ সালের পরিসংখ্যান৷

১৯৯৮ সালে আইডিএমসি প্রতিষ্ঠা করেন জ্যান এজেল্যান্ড৷ নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের প্রধান এজেল্যান্ড বলেন, ‘এত বেশি মানুষকে নিজের বাড়ি এবং নিজস্ব সম্প্রদায় থেকে দূরে চলে যেতে কার্যত বাধ্য করা হয়েছে, এমনটা আগে কখনও দেখিনি৷’

তার কথায়, ‘শান্তিচুক্তি ব্যর্থ হয়েছে৷ সংঘাতও আটকানো যায়নি৷’

দুর্যোগের কারণে দুই কোটি ৬৪ লাখ বাস্তুচ্যুতি ঘটেছে মূলত চীন এবং তুরস্কে৷ প্রতিকূল আবহাওয়া, একাধিক দুর্যোগ এবং ভূমিকম্পই এর কারণ৷

জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগামী বছরগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে৷

আইওএমের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল উগোচি ড্যানিয়েলস বলেছেন, ‘দুর্যোগ এবং সংঘাত সবমিলিয়ে পৃথিবীর অবস্থা সঙ্গিন৷ নতুন করে ৪৭ লাখ মানুষের অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির বিষয়টা অত্যন্ত হতাশার৷’

তিনি বলেন, ‘এই রিপোর্টগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে, আমাদের সবরকম দুর্যোগের ঝুঁকি কমানোর প্রচেষ্টা বাড়াতে হবে, শান্তিপ্রক্রিয়াকে সমর্থন করতে হবে এবং মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে৷ কোনো মানুষ ঘরছাড়া হওয়ার আগেই যেন তা আটকানো যায়, সেটা দেখতে হবে৷’

সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস/এএফপি

(ঢাকাটাইমস/১৬মে/এমআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এবার সাবেক রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে সরানো হলো কিশোরগঞ্জের এসপিকে, তদন্ত কমিটি গঠন
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালের স্ত্রীর প্লট-ফ্ল্যাট জব্দ, ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা বাড়লো আরও ২ মাস
আ.লীগ থেকে বিএনপিতে আসার বক্তব্য নিয়ে রিজভীর প্রতিবাদ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা