ভাসাবি ফ্যাশনের মালিক কামাল জামানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুদক

ভাসাবি ফ্যাশনের মালিক কামাল জামান মোল্লার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন—দুদক। মূলত স্বর্ণ চোরাচালান ও রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে কামাল জামানের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এর আগে ৪ মে কমিশনের বৈঠকে কামাল জামানের বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়।
মহাপরিচালক (তদন্ত-১) বরাবর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ভাসাবি ফ্যাশন ও ভাসাবি জুয়েলার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামাল জামান মোল্লার বিরুদ্ধে ব্যবসার আড়ালে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি ও স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে শতশত কোটি টাকা আত্মসাৎপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগটি অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্ত মহাপরিচালক (তদন্ত-১) বরাবর প্রেরণের জন্য কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এমতাবস্থায়, কমিশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক অভিযোগটি অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেরণ করা হলো।’ এতে অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্রে সাতটি পাতা সংযুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে প্রবাসী অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান সামি এ বিষয়ে তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘স্বৈরাচারের শাসনামলে নিজ সুবিধা বাগিয়ে নিতে মুরাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলা কামাল জামান এখন বিএনপির কোষাধ্যক্ষ রাশেদুজ্জামান মিল্লাতের সঙ্গে একই ধরনের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। অতীতে যে অনুষ্ঠানে কামাল জামান মুরাদদের আমন্ত্রণ করত; একই অনুষ্ঠানে এখন রাশেদুজ্জামান মিল্লাতদের ডেকে এনে মিষ্টি মুখ করানো হচ্ছে।’
অন্যদিকে গত ২৮ এপ্রিল নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন প্রবাসী সাংবাদিক জাওয়াদ নির্ঝর। সেখানে তিনি লিখেছিলেন— বনানী এলাকায় একটি গ্রুপ চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে। সেখানে ভাসাবির মালিক কামাল জামান মোল্লা নাম উল্লেখ করেন তিনি। এই চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট ইতিমধ্যে ফারইস্ট লাইফ ইনস্যুরেন্সের সাবেক চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা নিয়েছে বলেও পোস্টে জানানো হয়।
সিন্ডিকেটটির নিয়ন্ত্রণ করছেন রাশেদুজ্জামান মিল্লাত জানিয়েছে নির্ঝর লেখেন— ‘এ সংক্রান্ত অভিযোগ বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে দেওয়া হয়েছে। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হবে?’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় বাড়ি কামাল জামান নুরুদ্দীন মোল্লার। তিনি একসময় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ছিলেন। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের ‘বিতর্কিত’ নেতাদের পুনর্বাসন করার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। তিনি আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতা-কর্মীকে বিএনপিতে যোগদানের ব্যবস্থা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যা নিয়ে বিএনপির স্থানীয় নেতারা ছাড়াও তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।
তার এমন কর্মকাণ্ডের পর ৩ অক্টোবর কামাল জামানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। পরে তিনি শোকজের জবাব দিলে জবাব ‘অসন্তোষজনক’ উল্লেখ করে ১০ অক্টোবর তাকে সতর্ক করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।
(ঢাকাটাইমস/০৮মে/এসএস/এমআর)

মন্তব্য করুন