ভিউ শিকারি ইউটিউবারদের উদ্ভট খবর-শিরোনামে ক্ষতিগ্রস্ত সব মহল

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:১৮
অ- অ+

গোটা বিশ্ব এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। প্রযুক্তি মানুষকে সবকিছু সহজ করে দিয়েছে। একটা শ্রেণি যেমন এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণ করছে, তেমনই আরেকটা শ্রেণি প্রযুক্তির অপব্যবহার করে মানুষকে বিপদে ফেলছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটাল ইন্টারনেটের অন্যতম মাধ্যম ইউটিউব। বর্তমানে সবার হাতে হাতে স্মার্ট ফোন। ডিজিটাল রোগে আক্রান্ত অনেকেই। জনে জনে চ্যানেল। যখন যেখানে খুশি সত্য-মিথ্যা যাচাই না করেই যা ইচ্ছা তাই আপলোড করা হচ্ছে।

এসব কনটেন্টের বেশিরভাগেরই শিরোনাম থাকে উদ্ভট, ভিডিওতে দেয়া তথ্যের অবস্থা তাই। নেই কোনো নিয়ন্ত্রণ, নেই জবাবদিহিতা। যার ফলে অনেকেরই সম্মানহানি হয় এসব খবরে। সমাজে তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। ইউটিউবে সরকারবিরোধী অনেক অপপ্রচারও হচ্ছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসের যথার্থ শ্লোগান ছিল ‘সত্য মিথ্যা যাচাই আগে, ইন্টারনেটে শেয়ার পরে’। কিন্তু বাস্তবে হচ্ছে উল্টোটা। যাচাই-বাছাই না করেই উদ্ভট শিরোনাম জুড়ে আপলোড করা হচ্ছে বিভিন্ন ভিডিও এবং পোস্ট। যার শিরোনামের সঙ্গে কনটেন্টের কোনো মিল নেই।

গত দুই-তিন বছরে এফডিসিতে চলচ্চিত্র সংগঠনগুলোর নানা ব্যক্তিগত ঝামেলা তৈরি হয়েছে। যার কিছুই গোপন থাকেনি। প্রকাশ্যে চলে এসেছে ইউটিউবারদের মাধ্যমে। যা চলচ্চিত্রের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক লোক জানিয়েছেন। তারা বলছেন, ঘরের খবর কেন পরে জানবে? এসব ব্যাপার নিজেদের মধ্যেই মীমাংসা করা যায়।

আসলে, ইউটিউবের জন্য কোনো অফিস লাগে না, খরচ লাগে না, কর্মচারী লাগে না। ইনভেস্টমেন্ট ছাড়াই যে কেউ হয়ে যাচ্ছে চ্যানেল মালিক। এর ওর নামে ছড়ানো হচ্ছে ভুলভাল খবর। এক শ্রেণির মানুষ আবার এসব ভিত্তিহীন তথ্য বিশ্বাসও করছেন। যার ফলে বিপাকে পড়ছেন সম্মানী ব্যক্তিরা।

ক্যামেরা, কথা ও ইউটিউব চ্যানেল সহজলভ্য হয়ে যাওয়ায় যার যেভাবে খুশি নিজ গতিতে কথা বলেই যাচ্ছেন। কথা যাই হোক, তাদের টার্গেট ভিউয়ার্স। এসব কল্পকাহিনি অনেকেই যাচাই-বাছাই না করেই নেট দুনিয়ায় লাইক শেয়ার করে অন্যের কাছে পৌঁছেও দিচ্ছেন। যা অন্যের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।

এদিকে, ইন্টারনেটের কারণে হারিয়ে গেছে খেলার মাঠ। তরুণদের একমাত্র খোরাক এখন ইন্টারনেট। যার ফলে কমে গেছে খেলার মাঠ, কমে যাচ্ছে খেলাধুলার সুযোগও। মাঠের খেলাধুলা ছেড়ে বর্তমান তরুণ প্রজন্ম ঝুঁকেছে ইউটিউবের দিকে, ইন্টারনেটের দিকে। ফলে বিনোদনের ডিজিটালের মাধ্যমটি মানসিক ভাবে চাপে ফেলছে।

ইন্টারনেট নির্ভর বিনোদনকে আপনি কীভাবে দেখেন? এমন প্রশ্নের জবাবে শিল্পী সমিতির সাবেক সভাপতি ও অভিনেতা মিশা সওদাগর বলেন, ‘আমি এটাকে খারাপভাবে দেখি না। মাধ্যমে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ভবিষ্যতে হয়তো আরো পরিবর্তন হবে। মাধ্যম পরিবর্তন হয়ে যেটা এসেছে, তার অনেকগুলো ভালো দিক যেমন আছে, তেমন খারাপ দিকও আছে।’

মিশা বলেন, ‘আগেও টিভি ছিল, এখনও আছে। কিন্তু আগে একটা কনটেন্ট অনেকখানি এডিট হয়ে যেত, এখন সেটা আনএডিটেড অবস্থায় চলে যাচ্ছে। বিশেষ করে ইন্টারনেটে। অনেক চ্যানেলেই আমরা আজকাল দেখছি, যা ইচ্ছা তাই দেখাচ্ছে। আগে যেখানে খারাপ কনটেন্ট ঢুকে যাওয়াটা কঠিন ছিল, এখন সেখানে সেটা হরহামেশাই হচ্ছে।’

অভিনেতা বলেন, আগে পাঁচজন মানুষ যে খারাপ কনটেন্টটা দেখত, এখন সেটা ৫০০ জন মানুষ দেখছে। ইন্টারনেটে অবশ্য আজও অনেক ভালো কিছু দেখার আছে। কিন্তু সমস্যা হলো, খারাপের মাত্রাটা এখন সহজলভ্য হয়ে গেছে।’

এই যখন অবস্থা তখন মিডিয়া ব্যক্তিত্বরা মনে করছেন, ইউটিউবের জন্য নীতিমালা সময়ের দাবি। তা না হলে এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে অনেক বড় ক্ষতি হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৫সেপ্টেম্বর/এলএম/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নাসিরনগরে দুই গোত্রের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১০
তুরস্কের তৈরি ৩০০-৪০০ ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান, দাবি ভারতের
আট মাসেও অগ্রগতি নেই বাকৃবির গণতদন্ত কমিশনের, ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কা 
ভারতের বাংলাদেশ সফর ও এশিয়া কাপ হবে না!
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা