নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব পড়াচ্ছেন বৃন্দাবন দাস

ময়মনসিংহে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে যোগ দিলেন জনপ্রিয় নাট্যকার, অভিনেতা, লেখক ও পরিচালক বৃন্দাবন দাস। বৃহস্পতিবার থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিষয়ে পড়ানো শুরু করেছেন।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে বৃন্দাবন দাসের একটি ছবিসহ লম্বা পোস্ট দিয়ে এ কথা জানিয়েছেন তার স্ত্রী অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি। সঙ্গে দিয়েছেন দুটি লাভ ইমোজি। ঢাকা টাইমস পাঠকদের জন্য খুশির পোস্টটি হুবহু তুলে দেওয়া হলো-
‘ভদ্রলোক আজ কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসাবে যোগদান করলো। অভিনন্দন বৃন্দাবন। অনেক কাল পাশে আছি, কিছু চাওয়া নাই তার। মানুষকে সম্মান দেয় নির্বিকারভাবে, সেটার বিনিময়েও কিছু চায় না!’
‘যখন তার নাটকে হাজার হাজার সিডি বিক্রি হতো, তখন এক শুভাকাঙ্ক্ষী বলেছিল, বৃন্দাবনের বৃহস্পতি এখন তুঙ্গে, নিজে প্রডাকশন করতে বলো। মাথার উপর বিরাট লোনের বোঝা নিয়ে আমিও বলেছিলাম সে কথা! বলেছিল, ‘আমি কি তাহলে আর নাট্যকার থাকলাম খুশি, সাথে ব্যবসায়ীটাও যে যুক্ত হবে!’
‘বললাম, ‘দেখো, বিরাট ঋণ আমাদের, তাছাড়া এমন করেই করছে তো সবাই? বলে, সবাই যা যা পারে আমি তো পারি না খুশি!! যেখানে একটু অর্থনৈতিক সুযোগ আছে, শতবার বলেও তাকে একটু উদ্দ্যোগী করা যায়নি, যাবেও না আর!’
‘কত মানুষ অর্থ লগ্নি করতে চেয়েছে নাটক/ সিনেমার জন্য! প্রত্যেককে নেগেটিভটাই আগে বলেছে। এখানে লাভসহ অর্থ ফেরত পাবার অনিশ্চয়তার কথা জানিয়েছে! টাকা হাতে মানুষ সরে গেছে! অন্যত্র…..’
‘পুরোনো স্বপ্ন ঝাড়পোঁচ করতে করতে মধ্যবয়সে দাঁড়িয়েছি। জীবনের চলার দাম বাড়তে বাড়তে আকাশ ছুঁয়েছে।বাচ্চা প্লে- গ্রুপ থেকে ইউনিভারসিটির চতুর্থ ইয়ার। কিন্তু একই আছে তার উদ্দ্যোগহীনতা এবং বিলাসিতার প্রতি অনাগ্রহ!’
‘একদিন আড্ডায় এক কথা প্রসঙ্গে, একটা উদহরণের সময়, আড্ডায় সাথে থাকা একজন বলেই ফেলল, ‘এতো ইতিহাস মনে রাইখেন না তো, এসব ইতিহাস সব দরজা বন্ধ করে দেয়, একা হয়ে যাবেন!!’
‘ভিষণ চুপসে যাওয়া তুমি পরে আমাকে বললা, ইতিহাস ভুলে যাওয়া মানুষের আসলে কি কোনো অস্তিত্ব থাকে খুশি?! অস্তিত্ব, সে তো একেকজনের কাছে একেক সংজ্ঞার বৃন্দাবন!! বিত্তবান আর বিবেকবানের অস্তিত্ব তো এক নয়!’
‘তবে একটি কথা খুব সত্য, তা হলো, চলার পথের সাথের মানুষগুলোর সাথে অর্থবিত্তে/ আনন্দ-আড্ডায় এবং ভাবনায় বিশদ মিল না থাকলে, বড় রকমের বিড়ম্বনায় পড়তে হয় বৈকি এবং এই বিড়ম্বনা প্রায়শই ছোটও করে।’
‘মাঝে মাঝে আমাকে, ছেলেদের বলে, ‘আমার এ আমিকে বদলানো সম্ভব না রে বাবা, মাফ করে দিস! দূরের মানুষের কাছে বিরাট টাকাওয়ালা, কাছের মানুষের কাছে যুক্তাহীন/ অসহ্য/ কেউ কেউ টিজ করে বলে বুদ্ধিজীবি!!’
‘এই উদ্দ্যোগ/আগ্রহহীন মানুষটা, আজ অত্যন্ত আনন্দ চিত্তে এসে বলল, খুশি, তাড়াতাড়ি একটা ভালো কাপড় বের করে দাও। দেরি হলে জ্যামে পড়বো! তোমার এ তুমিই আমাদের কাছে অহংকার/ ভালোবাসা।তোমার এই চাতুরীহীন, নির্মোহ উদ্দ্যোগহীনতা, ছেলেদের নিজেকে পরিমাপ করতে শিখিয়েছে।’
‘আমি জেনে গেছি এ জীবনে আমার কতটুকু পাওয়া হবে! তোমার ছেলেরাও তোমার এ সততা আর ভোলাপন নিয়ে শিশুর মত খুশি থাকে! আমরা রোজ সুন্দরের স্বপ্ন দেখবো। পূরণ হবে না, আবার পরেরদিন কিছুটা বিয়োগ করে ভাববো! সেটাও না হলে স্বপ্ন বদলে নেবো, তুমি ভেবো না বৃন্দাবন, তুমি আছো’- এর চেয়ে বড় সুন্দর আমাদের কাছে আর কিছু নাই!’
(ঢাকাটাইমস/১৫সেপ্টেম্বর/এজে)

মন্তব্য করুন