তৃণমূল বিএনপিতে কেন, ঢাকা টাইমসকে যা বললেন তৈমুর

জাহিদ বিপ্লব, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১:৩৭ | প্রকাশিত : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১:২৬

প্রয়াত নাজমুল হুদার দল তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। রাজনৈতিক মহলে বিষয়টি আলোচনার জন্ম দিয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে তৃণমূল বিএনপির জাতীয় সম্মেলন। এখানেই আনুষ্ঠানিকভাবে দলটিতে যোগ দেবেন তিনি।

তৈমুর আলম যেই নাজমুল হুদার দলে যোগ দিচ্ছেন সেই তিনিও একসময় বিএনপিতে ছিলেন। ১৯৯১ ও ২০০১ সালে দুই দফায় খালেদা জিয়ার সরকারে মন্ত্রী ছিলেন। পরে ২০১২ সালে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। তৈমুর আলমের সঙ্গে তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন দলটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সমশের মবিন চৌধুরীও।

তৃণমূল বিএনপিতে যাওয়া নিয়ে সোমবার রাতে ঢাকা টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন তৈমুর আলম খন্দকার। প্রায় ২৭ বছর ধরে বিএনপি করে আসা ও আন্দোলন সংগ্রামে থাকা নারায়ণগঞ্জ বিএনপির বহিষ্কৃত এই নেতা বলছেন, দল তার প্রতি অবিচার করেছে। তবে যেহেতু রাজনীতি করতে হলে প্লাটফর্ম লাগে, সরকারবিরোধী কথা বলতে প্লাটফর্ম লাগে তাই তিনি তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন। দল তার প্রতি অবিচার করেছে বলেও অভিমান ঝরেছে তৈমুরের কণ্ঠে।

২০২২ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন খন্দকার তৈমুর আলম। বিএনপি এই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিল। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি।

তৈমুর আলম বলেন, আমার প্রতি অবিচার করেছে বিএনপি। যখন আমাকে বলা হয় বহিষ্কৃত নেতা, তখন ভীষণ কষ্ট পাই। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অপরাধে আমাকে বহিষ্কার করা হলো। অথচ, তখন বিএনপি মহাসচিব বললেন দল থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে না, ব্যক্তিগতভাবে কেউ স্বতন্ত্র নির্বাচন করলে এটা তার বিষয়। সে সময় বিএনপির অনেক নেতা আমাকে উৎসাহ দিয়েছে, আমি তাদের নাম বলতে চাই না। সেদিন আমাকে কোনোরকম আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলো।’

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বক্তব্যের সমালোচনা করে তৈমুর আলম বলেন, আমি সুবিধাভোগী নই। ১৯৯৬ সালে বিএনপি বিরোধীদলে থাকা অবস্থায় আমি এ দলে যোগদান করি। পরে বেগম খালেদা জিয়া আমাকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির দায়িত্ব দেন।

১/১১-এর মতো কিংস পার্টি বা সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে আগামীতে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তৈমুর দল পরিত্যাগ বা ভাঙার লোক নয়। আমি দলটা করতে চেয়েছি। আমি সরকারি সুযোগ সুবিধা নিলে আগেই নিতে পারতাম। আমি শহীদ জিয়ার আদর্শে বিশ্বাস করি। বিএনপির কারো প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই। রাজনীতি করতে হলে প্লাটফর্ম লাগে, সরকার বিরোধী কথা বলতে প্লাটফর্ম লাগে। তৃণমূল বিএনপিতে থেকেই সরকারের সকল অনিয়ম জাতির কাছে তুলে ধরব।

বহিষ্কারের পরও বিএনপির নানান কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন তৈমুর আলম। উপস্থিত থেকেছেন স্বতস্ফূর্তভাবে। কিন্তু দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের অবহেলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ তার। কেউ তার খোঁজ-খবর নেয়নি। এ নিয়ে অভিমানও ঝরে পড়ল তার কণ্ঠে।

তৈমুর বলেন, এ দল করে গুলি খেয়েছি, বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে, একাধিকবার জেল খেটেছি। এমনকি ১/১১ তে যখন তারেক রহমানকে আটক করা হলো, তখনই তার পক্ষে আইনি লড়াই করি। তারপরও আমাকে বহিষ্কার করা হলেও বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচিতে শত-শত লোক নিয়ে আমি উপস্থিত থাকি। তারপরও একবারের জন্যও কেউ আমার কেউ খোঁজ নেননি। দল হয়ত আমার প্রয়োজন মনে করেনি।

বিএনপিতে আবার ফিরে আসার আহবান জানালে ফিরবেন কিনা— জানতে চাইলে তৈমুর ঢাকা টাইমসকে বলেন, সে সময় এখন আর নেই। তবে, জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসী যেকোনো দলের সঙ্গে রাজনৈতিক জোট হতে পারে।

ঢাকাটাইমস/১৮সেপ্টেম্বর/জেবি/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :