ইংরেজি ও বাংলায় ধরাশায়ী সোহরাওয়ার্দী কলেজ

সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯:২৪ | প্রকাশিত : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮:২৭

চলতি বছর উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ কমেছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী কলেজ সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে। গত বছর এই কলেজটিতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১১৯ জন। কিন্তু ২০২৩ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পয়েছে মাত্র ৮ জন। যা গতবারের তুলনায় বেশ কম। মূলত বাংলা এবং ইংরেজি বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ার সংখ্যা বেশি থাকায় ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটির এমন ফল বিপর্যয় বলে জানা গেছে।

গত রবিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ২০২৩ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল হস্তান্তর করা হয়। এসময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও বিভিন্ন বোর্ডের চেয়াম্যানগণ উপস্থিত ছিলেন। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায় সব বোর্ডেই পাসের হার ও জিপিএ-৫ এর সংখ্যা গতবারের তুলনায় বেশ কমেছে। গতবারের চেয়ে এবার পাসের হার কমেছে ৭ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী কমেছে ৮৬ হাজার ২৪ জন। সামগ্রিক বিপর্যয়ের ব্যতিক্রম হয়নি রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ফলাফলেও। প্রতিষ্ঠানটিতে এ বছর পাসের হার ৮০.৪৪% এবং এরমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৮ জন শিক্ষার্থী। যা গতবার ছিলো পাসের হার ৮৭.৬৮% এবং জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ছিলেন ১১৯ জন

প্রতিষ্ঠানটির বিগত তিন বছরের ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় সাবজেক্ট ম্যাপিং বা অটোপাসে শতভাগ শিক্ষার্থীকে পাস করিয়ে দেয়া হয়েছিলো। ফলে প্রতিষ্ঠানটির পাসের হার ছিলো ৯৯.৯২% এবং জিপিএ ৫ পেয়েছিলেন ১৬৬ জন। কিন্তু পরের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে বাছাই করা বিষয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেয়া পরীক্ষায় পাসের হারের পাশাপাশি জিপিএ -৫ কমে যায়। তখন পাসের হার নেমে ৯৬.৭৩% এ এবং জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় ৯৫ জন। এরপরের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে কম সংখ্যক সময়ে কম নম্বরে পরীক্ষা হওয়ায় পাসের হার আরও নেমে হয় ৮৭.৬৮% এবং জিপিএ-৫ কমে হয় ১১৯ জন। অর্থাৎ এবার সিলেবাস সংক্ষিপ্ত হলেও পরীক্ষা সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বরে হওয়ায় পাসের হার এবং জিপিএ-৫ আগের তুলনায় অনেক কমে গিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে চলতি বছর জিপিএ-৫ পাওয়া ৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪ জন ছিলেন ব্যবসায় শিক্ষার শিক্ষার্থী। এছাড়া অপর দুজন বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। প্রতিষ্ঠানটির দুই হাজার ৭৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে এ বছর পাসের হার ছিল ৮০.৪৪%।

তবে করোনার আগে প্রতিষ্ঠানটির ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০১৯ সালে পাসের হার ছিলো ৬৯.২৯% এবং জিপিএ ৫ পেয়েছিলেন ২ জন। এর আগে ২০১৭ সালে পাসের হার ছিলো ৭৬.৪৮% এবং জিপিএ ৫ পেয়েছিলেন ১ জন। এছাড়া ২০১৬ সালে পাসের হার ছিলো ৬৮.০৪% এবং জিপিএ ৫ পেয়েছিলেন ৩ জন।

পাসের হার ও জিপিএ ৫ কমে যাওয়া নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহসিন কবীর বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ১০০ এর অধিক শিক্ষার্থীর ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখেছি বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। বিশেষত বাংলা কিংবা ইংরেজি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে অধিকাংশ শিক্ষার্থী। এই দুই বিষয়ে কেন শিক্ষার্থীরা কৃতকার্য হতে পারে নি সেই বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করছি। বাংলা এবং ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষকদের সঙ্গেও আলোচনায় বসবো। খুব দ্রুতই এর কারণ জানা যাবে।

এদিকে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর বিকেলে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গতবছরের ফলের সঙ্গে চলতি বছরের ফলের তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন করে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, গতবার কম বিষয়, কম সময় ও কম নম্বরের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। এবার পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওযায় পরীক্ষাটাও তুলনামূলক কঠিন হয়েছে। এতে পাসের হার ও জিপিএ-৫ কিছুটা কমেছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৭ আগস্টে শুরু হওয়া উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪২ জন পরীক্ষার্থী। গত রবিবার ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে দেখা যায় মোট ফলাফলে গতবারের তুলনায় জিপিএ-৫ অর্ধেকে নেমে এসেছে।

(ঢাকাটাইমস/০২ডিসেম্বর/টিএ/এসএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :