দুই আসনে গামছার প্রার্থী নকুল কুমার বিশ্বাস! নেই আলোচনা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন শোবিজ জগতের হাফ ডজন তারকা। এর মধ্যে অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর, গায়িকা মমতাজ এবং চিত্রনায়ক ফেরদৌস লড়ছেন নৌকার মনোনয়নে। চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি নৌকার না পেয়ে হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
অন্যদিকে, গায়িকা ডলি সায়ন্তনী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন- বিএনএমে যোগ দিয়ে হয়েছেন সে দলের প্রার্থী। এসব তারকাদের নিয়ে কমবেশি আলোচনা চলছে রাজনীতির মাঠে। কিন্তু একজনকে নিয়ে নেই তেমন কোনো চর্চা। তিনি হলেন ‘ইত্যাদি’ খ্যাত গায়ক নকুল কুমার বিশ্বাস।
ব্যতিক্রমধর্মী এই গায়ক গত ১৫ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর ‘কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ’-এ যোগ দেন। হয়েছেন দলটির প্রার্থীও। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাদারীপুর-৩ এবং বরিশাল-২ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন নকুল কুমার।
রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে খবর, মাদারীপুর জেলার কালকিনি, ডাসার ও সদর উপজেলার একাংশ নিয়ে মাদারীপুর-৩ আসন গঠিত। এ আসন থেকে গত ২৭ নভেম্বর মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন নকুল কুমার।
এরপর গত ২৯ নভেম্বর বরিশাল জেলার বানারীপাড়া-উজিরপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত বরিশাল-২ আসনের জন্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন এই শিল্পী। ৩০ নভেম্বর দুপুরে মাদারীপুর-৩ এবং বিকালে বরিশাল-২ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি।
নকুল কুমার বিশ্বাসের বাড়ি মাদারীপুরের উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের হারতা গ্রামে। সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ থেকে তিনি গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে এলাকায় গণসংযোগ করে আসছিলেন বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে শিল্পী জানান, দুই আসনের নেতাকর্মী ও ভক্ত-অনুরাগীদের অনুরোধে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি নির্বাচিত হলে এলাকাবাসীর সুখে-দুঃখে ও এলাকার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে মানুষের পাশে থাকবেন। বিগত দিনে তিনি এলাকার জন্য নিবেদিত ছিলেন, আগামীতেও থাকবেন।
এর আগে ‘কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ’-এ যোগ দেওয়ার পর নকুল কুমার বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কাজ করতে চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলাম। পরে বড় একটা দলের থেকে ফোন এলো। আমি বললাম, কয়েক মাস আগেও আমি ‘ইনটেক’ ছিলাম, এখন আমি ‘টেক’ হয়ে গেছি।’
এ সময় গানে গানে নকুল কুমার বলেছিলেন, ‘আমি হতে চাই না কোনো নেতার চামচা, তাই বুঝে শুনে বুকে তুলেছি বঙ্গবীরের গামছা।’
মাত্র আট বছর বয়সে যাত্রা দলের শিল্পী হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে সংগীত ক্যারিয়ার শুরু করে নতুল কুমার বিশ্বাস। সেই থেকে যাত্রাসহ গ্রাম ও শহরাঞ্চলে বহু অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেছেন তিনি।
গানের পাশাপাশি নকুল কুমার সেতার, তবলা, বাঁশি, সরোদ, সন্তুর, দোতারা ও ম্যান্ডালিনসহ আরও নানারকম বাদ্য যন্ত্রে পারদর্শী। বিশেষ করে হারমোনিয়াম বাজানোতে তার রয়েছে বিশেষ দক্ষতা।
নকুল কুমার বাংলাদেশ বেতারে যন্ত্র ও সংগীতশিল্পী হিসেবে চাকরি করেছেন অনেকদিন। তবে ক্যারিয়ারে তার সবসেরা সুযোগটি আসে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি‘তে অংশগ্রহণের মাধ্যমে। সেখানে গান পরিবেশনের সুবাদেই দেশজুড়ে তার সর্বাধিক পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে।
কিন্তু ভোটের মাঠে সেই জনপ্রিয়তা আর পরিচিতি কাজে লাগাতে পারবে তো? কারণ, দুই আসনে তার শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। বরিশাল-২ আসনে তাকে লড়তে হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার মোহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি এই আসন থেকে এমপি হয়েছিলেন।
অন্যদিকে, মাদারীপুর-৩ আসনে নকুল কুমারের প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. আবদুস সোবহান মিয়া। তিনি আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য। ফলে দুই আসনে দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর মুখোমুখি নকুল কুমার। গানের জগতের জনপ্রিয়তা ভোটের মাঠে ফল দেবে তো?
(ঢাকাটাইমস/০৩ডিসেম্বর/এজে)

মন্তব্য করুন