ঢাকার নবাবগঞ্জের নিজ বাড়ির ক্ষেত থেকে লাশ উদ্ধার যুবদল নেতার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৬ জুলাই ২০২৫, ১৫:১১
অ- অ+

ঢাকার নবাবগঞ্জে নিজ বাড়ির কাছের ধইঞ্চা ক্ষেত থেকে আমজাদ হোসেন (৫০) নামে যুবদলের এক নেতার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (৬ জুলাই) ভোরে উপজেলার বান্দুরা ইউনিয়নের মৃধাকান্দা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে প্রায় একশ গজ দূরে একটি রাস্তার পাশের ধইঞ্চা ক্ষেত থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে স্বজন ও এলাকাবাসী।

নিহত আমজাদ হোসেন নবাবগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় ছিলেন। তিনি মৃধাকান্দা গ্রামের মৃত আবদুল খালেকের ছেলে।

পুলিশ জানায়, আমজাদের বিরুদ্ধে একটি অর্থ সংক্রান্ত মামলায় আদালতের রায়ে এক বছরের সাজা হয় এবং তার গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল। এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও জমি-জমা সংক্রান্ত আরও অন্তত ২৭টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে তাঁর পরিবার।

নিহতের স্বজনদের বরাতে জানা গেছে, ভোর ৪টার দিকে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ সাজা পরোয়ানা নিয়ে আমজাদকে ধরতে বাড়িতে যায়। তখন তাকে বাড়িতে না পেয়ে পুলিশ ফিরে যায়। পরে তাঁর স্ত্রী জানায়, পুলিশ চলে যাওয়ার পর আমজাদ ঘর থেকে বের হন এবং হয়তো ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে যান। কিন্তু ভোর ৫টার দিকে স্থানীয় মুসল্লিরা ধইঞ্চা ক্ষেতে লাশ পড়ে থাকতে দেখে পরিবারকে খবর দেন।

স্বজনরা তাঁকে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।

নিহতের মেয়ে আশা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, "বাবার মুখে ও চোখের কোণে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে বাবাকে হত্যা করা হয়েছে কি না, তা এখনো বলা যাচ্ছে না।"

আমজাদের ভাই জাহিদুল ইসলাম বলেন, "আমার ভাই রাজনীতি করত। তার অনেক প্রতিপক্ষ ছিল। পুলিশ আসার পরপরই কেন সে মারা গেল, সেটা আমাদের বোধগম্য নয়।"

নিহতের মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রহস্যজনক পরিস্থিতির কথা উঠে আসায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ নিহতের বাড়িতে গিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করে।

পরিবারের অনিচ্ছা সত্ত্বেও পুলিশের অনুরোধে এবং পরে পারিবারিক সম্মতিতে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের মর্গে।

নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, “আমজাদ হোসেনের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করতে ময়নাতদন্ত অপরিহার্য। রিপোর্ট পাওয়ার পরই বিস্তারিত জানা যাবে।

আমজাদের মৃত্যুর খবরে তাঁর বাড়িতে ছুটে আসেন বিএনপির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের কন্যা ব্যারিস্টার মেহনাজ মান্নানসহ দলীয় নেতাকর্মীরা। তিনি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

ব্যারিস্টার মেহনাজ বলেন, “আমজাদ ছিলেন দলের একজন ত্যাগী নেতা। মামলা-হামলার ভয়ে অনেক সময় গৃহবন্দী থেকেছেন। তাঁর এই রহস্যজনক মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এর পেছনের কারণ জানতে চাই।

নিহতের মৃত্যু তদন্তে পুলিশের পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গনেও চলছে আলোচনা ও উদ্বেগ। এখন সকলের দৃষ্টি ময়নাতদন্তের রিপোর্টে।

(ঢাকাটাইমস/৬ জুলাই/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
হাত-পা ছাড়াই জন্ম নেওয়া সেই লিতুন জিরা এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে নজর কাড়লো
এসএসসিতে জিপিএ-পাঁচ পেয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার শিক্ষার্থী
ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছিলেন, ফিরলেন লাশ হয়ে—আট মাসের গর্ভে থাকা শিশুটিও হারিয়ে গেল
এসএসসিতে পাসের হারে দেশসেরা রাজশাহী বোর্ড, অন্যরা যা পেল
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা