ভাইকে ছোড়া ঢিলে নবজাতক ভাতিজার মৃত্যু

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বড় ভাইকে লক্ষ্য করে ছোট ভাই মাটির হাড়ি দিয়ে ঢিল ছোড়ে। ঢিলের অংশ বিশেষ গিয়ে আঘাত দেয় নবজাতক শিশু ভাতিজাকে। এতে মাথায় আঘাত পেয়ে মারা যায় শিশুটি। রাজধানীর মাতুয়াইলে বুধবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় শিশুটি মায়ের কোলে ছিল।
ঘটনার শিকার ১ মাস ২২ দিন বয়সী শিশু লাবিবকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকাল ৩টা ৩৫ মিনিটে শিশুটির মৃত্যু হয়। হাসপাতালে শিশুটির বাবা দীন ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
দীন ইসলাম বলেন, আমার চার ভাই। ছোট ভাই রাব্বির বাইসাইকেলটি বের করি নিয়ে যাচ্ছিল সেজো (তৃতীয়) ভাই খায়রুল (১৯)। আমি তাকে বাধা দিয়ে বলি সাইকেলটির ব্রেক নাই। তখন সে রাগান্বিত হয়ে সাইকেল রেখে যাওয়ার সময়ে পাশে থাকা একটি মাটির হাড়ি আমাকে লক্ষ্য করে ছোড়ে। এ সময় আমার স্ত্রী বিথী আক্তার (শিশুটির মা) তার একমাত্র সন্তান টিকে গোসল করিয়ে রুমের দিকে যাচ্ছিলেন। ছোড়া হাড়িটি পাশের দেয়ালে লেগে এর ভাঙা অংশ গিয়ে শিশুটির মাথায় লেগে গুরুতর আহত হয়। পরে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
শিশুটির দাদা হারেজ মিয়া বলেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে খায়রুল তার বড় ভাই দীন ইসলামকে ঢিল ছোড়ে। সেই ঢিল গিয়ে দীন ইসলামের ছেলের মাথায় লাগে। হাসপাতালে নিলে শিশুটি মারা যায়।
হাসপাতালে শিশুটির মা বিথী আক্তার সন্তানের মৃত্যুতে চিৎকার করে আহাজারি করতে করতে বলছিলেন, আমি জীবনে অনেক কষ্ট করেছি। লাবিব আমার একমাত্র সন্তান। কী নিয়ে থাকবো। আমি তো কোনোভাবেই নিজেকে মানাতে পারছি না। বিথী বলেন, আমি লাবিবকে গোসল করিয়ে কপালে কালো টিপ দেই, যেন নজর না লাগে। আর তখনই এই দুর্ঘটনা ঘটল।
হাসপাতালে বিথীর আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে যায় এবং অনেকের চোখে পানি চলে আসে।
দীন ইসলাম ও বিথী আক্তারের বিয়ে হয় দেড় বছর আগে। দীন ইসলাম একটি বৈদুতিক সুইচ তৈরির কারখানায় কাজ করেন। তার ছোট ভাই খায়রুলও একটি কারখানার শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন মৃত শিশুটির মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
দীন ইসলামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার সদাই জঙ্গল গ্রামে। তারা পরিবার নিয়ে বর্তমানে মাতুয়াইলে থাকেন।
(ঢাকাটাইমস/০৬ডিসেম্বর/আরআর/কেএম)

মন্তব্য করুন