না জেনে হিজামা থেরাপি নিচ্ছেন? জানুন কী ভয়ংকর বিপদ আসতে পারে

হিজামা বা হজ্জাম অথবা কাপিং হচ্ছে একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। হিজামা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ আল হাজম থেকে। আরব দেশগুলোতে একজন কাপিং থেরাপি অনুশীলনকারীকে হিজামা বলা হতো।
হিজামা বা কাপিং চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে শরীরের ত্বকের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত চোষণ বা শোষণের মাধ্যমে বের করা হয়৷ কাপিংয়ের বিভিন্ন পদ্ধতির মধ্যে হিজামা বা উইট কাপিং এবং ফায়ার কাপিং বহুল প্রচলিত৷
হিজামার ইতিহাস
হিজামা পদ্ধতির প্রচলন কবে থেকে শুরু হয়েছে এ বিষয়ে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায় না৷ তবে ধারণা করা হয়, এখন থেকে প্রায় তিন হাজার বছর পূর্বে এটি চালু হয়৷ বর্তমানে আরব, আফ্রিকা, চীন ও কোরিয়ার কিছু অঞ্চলে হিজামা বেশ জনপ্রিয়৷
যেসব সমস্যায় হিজামা থেরাপি দেওয়া হয়
বর্তমানে যেসব শারীরিক সমস্যায় হিজামার মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয় বলে দাবি করা হচ্ছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: বাত ব্যথা, পা ফুলা, পিঠ ও কাঁধের ব্যথা, অর্ধ ও পূর্ণাঙ্গ শরীর অবশ, প্রসব পরবর্তী ব্যথা, মাইগ্রেন, পেটব্যথা, যৌন দুর্বলতা, কাশি, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, পাকস্থলি, কিডনি ও লিভারের বিভিন্ন সমস্যা, চর্মরোগ, নাক ও কানের প্রদাহ ও ছানিসহ চোখের বিভিন্ন সমস্যা ইত্যাদি৷
বৈজ্ঞানিক স্বীকৃতি নেই
এসব রোগে হিজামার ব্যবহার বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়৷ এমনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক অনুমোদিতও নয় হিজামা৷ বিভিন্ন সময় পরিচালিত গবেষণায় এর কার্যকারিতা বা উপযোগিতা প্রমাণিত নয় বলে দাবি করা হয়েছে৷
আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি হিজামার বিষয়ে বলেছে, ‘কাপিং থেরাপি যে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, তা এখন পর্যন্ত পাওয়া কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ সমর্থন করে না৷’
কাপিং নিয়ে গবেষণার পর ডা. ডেভিড গরস্কি বলেন, ‘এ পদ্ধতিতে কেবল স্বাস্থ্যঝুঁকিই রয়েছে, কোনো উপকারিতা নেই৷ আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রে এর কোনো স্থান নেই বা থাকা উচিতও নয়৷’
হিজামায় স্বাস্থ্যঝুঁকি
বলা হয়ে থাকে যে, হিজামার মাধ্যমে দূষিত রক্ত দেহ থেকে বের করা হয়৷ ফলে আরোগ্য লাভ হয়৷ কিন্তু যেসব রোগে হিজামা করা হয়, তার কোনটাই রক্তের দূষণের ফলে হয় না৷ উপরন্তু দূষিত রক্ত বের করার যে কথা বলা হয় সেটিও সঠিক নয়৷ হিজামার দ্বারা দেহের ভালো রক্তই বের হয়ে আসে৷ দেখা যায় যে, কোনো ব্যক্তির দু’বার কাপিংয়ের ফলে যে পরিমাণ রক্ত দেহ থেকে বের হয় তা দিয়ে একজন অসুস্থ রোগীকে একবার রক্তদান করা সম্ভব৷
কাপিংয়ের ফলে ত্বকে দাগ পড়তে পারে, ফোস্কা পড়তে পারে, ত্বকে সংক্রমণ হতে পারে৷ এছাড়া রয়েছে হেপাটাইটিস বি, সি এবং এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি৷ ২০১৬ সালে কম্বোডিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সতর্কতা জারি করে বলে, যাদের উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ আছে তাদের জন্য কাপিং খুবই বিপদজ্জনক
(ঢাকাটাইমস/৩১ডিসেম্বর/এজে)

মন্তব্য করুন