বিরোধী দলবিহীন ডামি নির্বাচন কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পাবে না: রাশেদ খান

নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে গণসংযোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে জনসাধারণের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেছে গণঅধিকার পরিষদ।

মঙ্গলবার দুপুরে নাইটিংগেল মোড় থেকে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ শুরু করে গণঅধিকার পরিষদ। নাইটিংগেল মোড় থেকে বিজয়নগর এলাকায় লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ শেষে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির মোড়ে সংক্ষিপ্ত পথসভা করে গণঅধিকার পরিষদ।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, আওয়ামী লীগ আমি, আমরা ও ডামির নির্বাচন করছে। এই নির্বাচন ৬২টি রাজনৈতিক দল বর্জন করেছে। জনগণও ভোটকেন্দ্রে যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু জনগণকে ভয় দেখিয়ে ভোটকেন্দ্রে নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ ভয় দেখাচ্ছে, এনআইডি কার্ড ও ভাতা সুবিধা বাতিলের হুমকি দিচ্ছে। বিরোধী দলবিহীন ডামি নির্বাচন দেশ-বিদেশের কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমেরিকার প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে এসেছে। তাদের পক্ষ থেকে আগেই বলা হয়েছিল সংলাপ, সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচনি পরিবেশ তৈরি করে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের উদ্যোগ নিতে। কিন্তু সেটি করা হয়নি। বরং জাতীয় পার্টিকে ২৬টি আসন ছাড় দিয়ে নির্বাচনে নিয়েছে। গতকাল জিএম কাদের বলেছে, তাদের কোনো আসন ছাড় দেওয়া হয়নি। কিন্তু আসন ছাড়ের বক্তব্য স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। তাহলে কে সত্য, কে মিথ্যা? প্রধানমন্ত্রী কি তাহলে মিথ্যা বলেছেন? বিবিসি বাংলাতে নিউজ হয়েছে, জিএম কাদেরের আসনে তার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী একজন তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে আর কোনো শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। এটা কি জিএম কাদেরের জন্য লজ্জা নয়? ক্ষমতার অংশীদার হতে জিএম কাদের লাজ-লজ্জার মাথা খেয়েছেন।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য এটা ২০১৪ কিংবা ২০১৮ সাল নয়। এই নির্বাচন হতে যাচ্ছে ২০২৪ সালে। এখনকার জনগণ অত্যন্ত সচেতন। আমাদের উন্নয়ন সহযোগী, বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে একতরফা নির্বাচন হওয়ায়, সেখানকার শতাধিক এমপির ওপর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। বাংলাদেশে একতরফা ডামি নির্বাচন হলে এখানেও ৩০০ এমপির ওপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। এমপি-মন্ত্রীদের ছেলেমেয়েরা বিদেশে পড়াশোনা করে, অনেকের ব্যবসা বাণিজ্য রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা আসলে পড়াশোনা ও ব্যবসা বাণিজ্য সব বন্ধ হয়ে যাবে। আওয়ামী লীগ যে নিষেধাজ্ঞা ও দুর্ভিক্ষের গল্প শোনাচ্ছে। মার্কিন সরকার কর্তৃক অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও গার্মেন্টসের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসলে, তার মূল ভুক্তভোগী হবে দেশের জনগণ। সুতরাং সরকারকে বলবো, দেশ ও জনগণের প্রতি ন্যূনতম ভালোবাসা থাকলে একতরফা নির্বাচন থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিন। এখনো সময় আছে, বিরোধী দলগুলোকে ডাকুন, বসুন, আলোচনা করুন। একটা নির্বাচনি পরিবেশ তৈরি করুন। আমরাও ভোটকেন্দ্রে যেতে চাই, নির্বাচন করতে চাই, ভোট দিতে চাই। অন্যথায় একতরফা নির্বাচনের পরিণতি ভালো হবে না।

দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন বলেন, দেশবরেণ্য অর্থনীতিবিদ নোবেল বিজয়ী ড.মুহাম্মদ ইউনূসকে সরকার শুধু ব্যক্তিগত আক্রোশের মাধ্যমে মিথ্যা রায়ে ৬ মাসের সাজা দিয়েছে। এতে করে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের রায়কে শেখ হাসিনা সরকারের প্রতিহিংসার রায় বলে প্রকাশ করছে। বাংলাদেশের মানুষ স্পষ্টই বুঝতে পারছে শেখ হাসিনা সরকার আদালতকে নির্দেশনা দিয়ে এই রায়ের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন।

উচ্চতর পরিষদের সদস্য শহিদুল ইসলাম ফাহিম বলেন, দেশের মানুষ এই সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। আমাদের লড়াই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই। দেশ বাঁচানোর এই লড়াইয়ে সম্মিলিতভাবে এই সরকারের ভোট চুরির বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন উচ্চতর পরিষদের সদস্য শাকিল উজ্জামান, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারিকুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সম্রাট। উপস্থিত ছিলেন উচ্চতর পরিষদের সদস্য জসিম উদ্দিন আকাশ, ক্রীড়া সম্পাদক ইলিয়াস মিয়া, সহ- স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসানসহ দলের নেতাকর্মীরা।

(ঢাকাটাইমস/০২জানুয়ারি/জেবি)