লক্ষ্মীপুর-৩
৫৭ সেকেন্ডে নৌকায় ৪৩ সিল মারা আজাদ আবারও সরব

লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে ভোটের মাঠে আবারও সরব হয়েছেন এ আসনের উপনির্বাচনে ৫৭ সেকেন্ডে নৌকায় ৪৩ সিল মারা চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আজাদ হোসেন। গত কয়েকদিন তাকে নির্বাচনি প্রচারণায় দেখা গেছে। তবে এবার তাকে ভিন্ন দলের কর্মী বলছেনা আওয়ামী লীগ নেতারা।
সবশেষ শুক্রবার চন্দ্রগঞ্জ থানার দিঘলি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নৌকার লিফলেট বিতরণ, পোস্টার ঝুলানো ও মাইকিংসহ গণসংযোগে অংশ নেন আজাদ। এছাড়া ভোট নিয়ে সবক্ষেত্রেই তার সরব উপস্থিতি ছিল। তবে আজাদের উপস্থিতি এবারও সেই সিল মারার ঘটনার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা করছেন সাধারণ ভোটার ও নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকরা।
এর আগে গত ৫ নভেম্বরের উপনির্বাচনের পরদিন আজাদের নৌকায় সিল মারার ৫৭ সেকেন্ডের ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ঢাকায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রার্থী গোলাম ফারুক পিংকু আজাদকে শিবির কর্মী বলে দাবি করেন।
ওই ঘটনায় তখন দিঘলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন চৌধুরী জাবেদও তার (আজাদ) শিবির ও ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানান।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আজাদের ফের ভোটের মাঠে সরব হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন চৌধুরী জাবেদ বলেন, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। আজাদের বিষয়ে আমরা সচেতন রয়েছি। ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমরাই হতে দেবো না।
আজাদকে শিবির কর্মী দাবি করা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকার প্রার্থী গোলাম ফারুক পিংকুর সেই বক্তব্য প্রসঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান জাবেদ বলেন, উপনির্বাচনের অনেক আগে সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় আজাদকে ছাত্রলীগের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। সভাপতি তাকে চিনতেন না। এজন্য ভুল করে আজাদকে শিবির কর্মী বলেছেন।
দিঘলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং নৌকা প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াদুদ লিটন বলেন, নৌকা প্রতীকের প্রচারণায় থাকলেও আজাদকে কোনো দায়দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ভোটের মাঠে তাকে নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে না। তবে কখনোই শিবিরের সঙ্গে জড়িত ছিল না বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকার প্রার্থী গোলাম ফারুক পিংকু এবং চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওহাবকে একাধিকবার কল করলেও তারা রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, গত ৫ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে দিঘলী ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আজাদ ব্যালট বইয়ে নৌকা মার্কায় অনবরত সিল মারেন। এ ঘটনার ৫৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সারাদেশে এটি তখন আলোচিত ঘটনা ছিল। পরবর্তীতে ১১ নভেম্বর আজাদকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায় চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ। পরে তিনি জামিনে মুক্ত হন।
আজাদ সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ খাগুড়িয়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে। ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর গঠিত চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি করা হয় তাকে। গত ৮ অক্টোবর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করে জেলা ছাত্রলীগ। এর আগে তিনি দিঘলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।
(ঢাকাটাইমস/০৬জানুয়ারি/পিএস)

মন্তব্য করুন