ফরিদপুর শহরের ব্যস্ততম সেতুতে স্বস্তির নিশ্বাস

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ২৩:১১
অ- অ+

ফরিদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে হাজী শরীয়তুল্লাহ বাজার ও নিউমার্কেটের সংযোগ স্থাপনকারী কুমার নদীর বেইলি সেতু এখন স্বস্তির ট্রানজিট। সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর শহরকে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত করার শুভ সূচনা হিসেবে এটাকে দেখছেন সাধারণ মানুষ।

লোহার ব্রিজ নামে পরিচিত এই বেইলি সেতু দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ কুমার নদী পারাপার হয়। শহরের বাইরের থেকে আসা হাজার হাজার মানুষ শহরের প্রবেশ মুখে নেমে শরীয়তুল্লাহ বাজার হয়ে পায়ে হেঁটে নিউ মার্কেট, চকবাজার, থানার মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে এই সেতু দিয়ে।

শুধু পায়ে হেঁটে চলার জন্য নির্মিত সেতুটি গত সাড়ে তিন বছর যাবত অবৈধ ফুটপাত দখলদারদের কাছে জিম্মি হয়েছিল। টাকার বিনিময়ে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র পায়ে হাঁটার এই সরু সেতুটিকে হকারদের কাছে ভাড়া দিয়ে আসছিল। ফলে প্রতিনিয়তই নাজেহাল হতে হতো সাধারণ পথচারীদের। ছিনতাই, পকেটমারসহ ছোটখাটো অঘটন ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। বিশেষ করে নারীদের জন্য এই বেইলি ব্রিজ ছিল খুবই অনিরাপদ। ভিড়ের সুযোগে যৌন হয়রানির ঘটনা ছিল নিত্য নৈমিত্তিক।

গত তিনদিন যাবত জনগুরুত্বপূর্ণ এই বেইলি সেতুটি সম্পূর্ণ মুক্ত করে দিয়েছে প্রশাসন। ফলে সাধারণ মানুষ স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দে নদীর এপার-ওপার যাচ্ছে নির্বিঘ্নে।

সেতু পারাপারের সময় শনিবার দুপুরে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা এমন পরিবেশটি চেয়েছেন দীর্ঘদিন ধরে। এমন পরিবেশ যেন এখন থেকে বজায় থাকে সে প্রত্যাশা তাদের। ব্রিজ পার হওয়া কয়েকজন নারী অকপটেই জানালেন তাদের আগের হয়রানির কথা। বেইলি সেতুটি জনগণের চলাচলের জন্য ফাঁকা করে দেয়ায় বর্তমান সংসদ সদস্য এ.কে. আজাদ ও ফরিদপুরের প্রশাসনের প্রতি ধন্যবাদ জানান তারা।

উল্লেখ্য, নির্বাচনি প্রচারণায় স্বতন্ত্র হিসেবে বিজয়ী এ.কে. আজাদ প্রতিনিয়তই ফরিদপুর শহরকে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ মুক্ত করার অঙ্গীকার করে এসেছেন। এমপি হবার পরপরই ফরিদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে এমন পদক্ষেপ আশাবাদী করে তুলেছে সাধারণ মানুষকে।

ফরিদপুরের সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি অ্যাডভোকেট শিপ্রা গোস্বামী সমকালকে বলেন, আমরা এই দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখে অত্যন্ত আনন্দিত। নতুন নেতৃত্ব এভাবেই আমাদের শহরকে প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে একটি বসবাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলবেন, এটাই নাগরিকদের প্রত্যাশা।

স্থানীয় হাজী শরিয়তুল্লাহ বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ জানান, ‘বেইলি ব্রিজের ওপর অবৈধভাবে বিক্রি করা বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজানোর কারণে মূল বাজারে লোকজনের আগমন ঘটতো কম। আমরা সরকারকে ভ্যাট ট্যাক্স দিয়ে, দোকান ভাড়া করে কর্মচারী রেখে ব্যবসা করি, অথচ একশ্রেণির অসাধু লোক ওই ব্রিজের ওপর হকার বসিয়ে চাঁদাবাজি করত। এটি বন্ধ হয়েছে, আজ তিনদিন আমরা স্বস্তিতে আছি, বাজারেও বেড়েছে ক্রেতার সংখ্যা।

এ ব্যাপারে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি হাসানুজ্জামান বলেন, ’আমি নিজে ফোর্স নিয়ে বেইলিব্রিজ কে দখলমুক্ত করেছি। জন গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটি এখন থেকে দখলমুক্ত থাকবে। পাশাপাশি ফরিদপুর শহরের যেসব স্থানে অবৈধভাবে ফুটপাত দখলের কারণে জনগণের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে সেসব স্থান থেকে অভিযোগ পেলে ফরিদপুর কোতোয়ালী পুলিশ, ট্রাফিক বিভাগ ও ডিবি পুলিশ সমন্বিতভাবে পুলিশ সুপারের নির্দেশে জনগণের স্বাভাবিক ও নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করব ।

ফরিদপুর সদর আসনের নব নির্বাচিত এমপি এ.কে আজাদ এ প্রসঙ্গে বলেন, আমার নির্বাচনি ওয়াদা ছিল শহরকে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত করা। এটা আমার প্রথম পদক্ষেপ। ইতিপূর্বে ওই ফুটপাত থেকে অসাধু ব্যক্তিরা নিয়নিমত চাদা তুলতো।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোরভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমি চাঁদাবাজি কিংবা সন্ত্রাসী দেখতে চাই না।

(ঢাকাটাইমস/১৩জানুয়ারি/এআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রাজধানীর যেসব মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ রোববার
ঢাকাসহ দেশের ১০ অঞ্চলে ঝড়ের আভাস, নদীবন্দরে সতর্ক সংকেত
কিডনি সুস্থ রাখতে কোন কোন তেল খাবেন, জানুন প্রতিদিন কতটুকু তেল খাবেন
গাজায় ৪৮ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ৭৭ জন নিহত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা