রাবিতে স্বাস্থ্যবিমা জটিলতায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

রাবি প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:৩৯| আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:৫১
অ- অ+

শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবার কথা চিন্তা করে দুবছর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) চালু হয়েছিল স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্প। তবে দুই বছর না যেতেই নির্ধারিত সময়ে দাবি (ক্লেইম) নিষ্পত্তি না হওয়া নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি বিমা দাবি করতে গিয়ে অনেকে বিভিন্ন জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানা গেছে। ফলে সেবা গ্রহণে আগ্রহ হারাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার নামে ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট ও কমেন্ট করে এসব জটিলতার কথা বলেন। ভুক্তভোগী হিসাববিজ্ঞান তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের শিক্ষার্থী এমএ তিটু বলেন, ২০২৩ সালের ২০ আক্টবরে একটা বিমা দাবি ক্লেইম করি আমি কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই ক্লেইমেই working activity 0% দেখাচ্ছে। যেখানে ওয়েবসাইটে ৭ কার্য দিবসের মধ্যে বিমা দাবি পরিশোধের কথা বলা হয়েছে।

পরে বিমা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সময় মতো প্রিমিয়ামের টাকা পরিশোধ না করায় কাউকে সময় মতো বিমা দাবি তারা পরিশোধ করতে পারছেন না। বিমা কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, তাদের নাকি দীর্ঘদিন কোনো প্রিমিয়ামের টাকা পরিশোধ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে রাবির প্রত্যেক শিক্ষার্থী থেকে বছর শুরুতে ভর্তির সময় স্বাস্থ্যবীমা বাবদ কিছু অর্থ বাধ্যতামূলক পরিশোধ করা লাগতেছে।

আরেক ভুক্তভোগী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী রনি আহমেদ বলেন, আমি আগে একটা বিমার জন্য আবেদন করেছিলাম তখন ১৫ দিনের মধ্যে টাকা পেয়েছিলাম। কিন্তু এবার বিমার জন্য আবেদন করা আমার প্রায় দেড় মাস হয়ে গেলো এখনো working activity 0% দেখাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেনিথ লাইফ ইন্সুইরেন্স কোম্পানির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ডেপুটি ভাইস প্রেসিডেন্ট) আনোয়ার হোসাইন সরকার বলেন, শিক্ষার্থীরা যে ক্লেইম করছে তা তো নিয়ম অনুযায়ী বাতিল হয়। কন্টাকের বাইরে থাকলে সেগুলো বাতিল হবেই। কেউ কেউ ডাবল ক্লেইম করে, কেউ কেউ আবার ভুয়া সাবমিট করে। এটা ডিলে হচ্ছে কারণ আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অভাবনীয় ক্লেইম। এত ক্লেইম আমি কখনো কোনো কোম্পানিতে দেখি নাই। আমরা যে টাকা প্রিমিয়ামে পাই তার চেয়েও বেশি টাকার ক্লেইম আসে। একেকজনের ২০-২৫টা পর্যন্ত ক্লেইম আছে। আমরা বাতিল করতেছি তারপরও অস্তিত্বহীনতায় ভুগতেছি। প্রতিবছর আমাদের ১৫% ভ্যাট দিতে হয়। এ হিসেবে আমরা আসলেই লসে আছি। আমরা চাই না কোনোভাবেই কোনো শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হোক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক উপ-রেজিস্ট্রার এ.এইচ.এম. আসলাম হোসেন বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে শতভাগ সার্ভিস দেয়ার জন্য প্রস্তুত। আমাদের বর্তমান উপাচার্য মহোদয় তিনি ঢাকার আংশিক চিত্র দেখেই এই স্বাস্থ্যবিমা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করেছেন। আমরা জানি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সবার পারিবারিক অবস্থা সমান নয়। তাদের সেবা দেওয়ার জন্যই আমরা। জেনিথ বলেছে চার্জ বাড়ালে তারা সেবার মান বাড়িয়ে দিবে। শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে আমরা চার্জ বাড়াতে পারছি না। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের। তাদের সহযোগিতা করার জন্য তো এই স্বাস্থ্যবিমা। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করছি কিভাবে এই জটিলতার সমাধান করা যায়। আমরা শীঘ্রই জেনিথের সঙ্গে বসে শিক্ষার্থীবান্ধব সেবা দানের বিষয়ে আলোচনা করে সমাধান করবো।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৮ জুন পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবার জন্য ক্লেইম করেছিল ১ হাজার ৬০৩টি। টাকা পরিশোধ করা হয়েছিল ৯৩৬টি ক্লেইমের। টাকার পরিমাণ ছিলো ৪৫ লাখ ৮৩ হাজার ৮৬৬ টাকা। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ২৯৭টি দাবি। প্রত্যাখ্যানকৃত দাবি ২১০টি। ডুপ্লিকেট দাবি ছিলো ১৬০টি। গতবছর মে মাস পর্যন্ত কোম্পানিটি প্রিমিয়াম পেয়েছে ৬২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। চুক্তি অনুযায়ী কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ব্যয় বাবদ ১৫ লাখ ৬৯ হাজার ৭৫০ টাকা বাদ দিলে কোম্পানির প্রকৃত প্রিমিয়াম আয় হয় ৪৭ লাখ ৯ হাজার ২৫০ টাকা।

(ঢাকাটাইমস/১৫জানুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বাংলাদেশে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আগ্রহী চীন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের ২০০ কেজি ওজনের বোমা পাওয়া গেল মুন্সীগঞ্জে, নিষ্ক্রিয় করল সিটিটিসি
চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ত্বরান্বিত করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
আইইউবিএটি-তে চীনা ভাষা কোর্সের উদ্বোধন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা