১০০ দিনে ইসরায়েলি হামলায় ১ লাখ ফিলিস্তিনি হতাহত, নিখোঁজ: ইউরো-মেড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:৫৩ | প্রকাশিত : ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:৫২

গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরুর পর গত ১০০ দিনে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত এক লাখ ফিলিস্তিনি নিহত, আহত বা নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানিয়েছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক মানবাধিকার গোষ্ঠী ইউরোমেড হিউম্যান রাইটস মনিটর।

রবিবার এক বিবৃতিতে মানবাধিকার গোষ্ঠীটি বলেছে, শনিবার পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের হাতে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ৩১ হাজার ৪৯৭ জনে পৌঁছেছে (প্রায় ৭ হাজার নিখোঁজসহ)। এর মধ্যে ২৮ হাজার ৯৫১ বা ৯২ শতাংশ বেসামরিক নাগরিক। নিহতদের মধ্যে ১২ হাজার ৩৪৫ শিশু, ৬ হাজার ৪৭১ জন নারী, ২৯৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী, ৪১ জন বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মী এবং ১১৩ জন সাংবাদিক রয়েছেন।

অন্যদিকে ৬১ হাজার ৭৯ জন আহত হয়েছে, তাদের মধ্যে শতাধিক গুরুতর বলে উল্লেখ করেছে গোষ্ঠীটি।

বিবৃতিতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, এটি পরিসংখ্যানগুলোতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দ্বারা গ্রেপ্তারের পরে নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের পাশাপাশি যারা ইসরায়েলি বিমান এবং কামান হামলায় টানা ১৪ দিনেরও বেশি সময় ধরে আঘাতপ্রাপ্ত ভবনগুলোর ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকা পড়েছেন তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে৷ এখন আর তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই, তাই তাদের মৃত বলে মনে করা হচ্ছে।

ইসরায়েলের অবিরত বিমান ও স্থল হামলার কারণে অনেক জায়গায় অ্যাম্বুলেন্সগুলো পৌঁছাতে না পারায় এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে শত শত মরদেহ উদ্ধার করা যাচ্ছে না বলেও জানিয়েছে ইউরোমেড।

সংস্থাটি আরও উল্লেখ করেছে, ১৯ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি, যা গাজা উপত্যকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮৫ শতাংশ নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবের মধ্যে তাদের বাড়িঘর এবং আবাসিক এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। কারণ ৬৯ হাজার ৭০০ আবাসিক ভবন সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ১ লাখ ৮৭ হাজার ৩০০ আবাসিক ভবন আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইউরোমেডের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের চলমান হামলার সময় যেসব স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ৩২০টি স্কুল; ১৬৭১টি শিল্প স্থাপনা; ২৩টি হাসপাতাল, ৫৯টি ক্লিনিক এবং ৯২টি অ্যাম্বুলেন্সসহ ১৮৩টি স্বাস্থ্য সুবিধা; ২৩৯টি মসজিদ; তিনটি গির্জা এবং ১৭০টি প্রেস অফিস।

মানবাধিকার গোষ্ঠীটি আরও উল্লেখ করেছে, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে উপত্যকায় বসবাসরত জনসংখ্যার বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠকে উচ্ছেদ করে সমগ্র গাজা উপত্যকাকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নিজেদের ভূখণ্ড সম্প্রসারণের প্রচেষ্টায় সামরিক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।

ইউরোমেড বলছে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করছে যাতে অনেক বেশি হতাহত ও বস্তুগত ক্ষয়ক্ষতি হয়, যা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন, ১৯৪৯ সালের জেনেভা কনভেনশনের পরিপন্থি।

গোষ্ঠীটি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা গণহত্যার মামলার তাৎপর্যকে জোর দিয়ে বলছে, এটি একটি ঐতিহাসিক নজির এবং আন্তর্জাতিক বিচারিক স্তরে ইসরায়েলকে জবাবদিহি করার এবং এর অনাক্রম্যতা ভঙ্গ করার প্রথম পদক্ষেপ।

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এদিন ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

অন্যদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২০০ জন। পাশাপাশি ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।

(ঢাকাটাইমস/১৫জানুয়ারি/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :